আরও দেখুন
সোমবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্য আবারও ঊর্ধ্বমুখী ও নিম্নমুখী উভয় দিকেই ট্রেড করেছে, যা মার্কেটের ফ্ল্যাট থাকার প্রবণতা নিশ্চিত করেছে। গত তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে এই পেয়ারের মূল্য মূলত 1.1275 ও 1.1424 লেভেলের মধ্যে অবস্থান করছে। মূল্য সাইডওয়েজ চ্যানেলের নিম্ন সীমানার কাছাকাছি রয়েছে, তাই এখান থেকে একটি রিবাউন্ড এবং নতুন একটি ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের প্রত্যাশা করা হচ্ছে — যার জন্য কোনও মৌলিক বা সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের প্রয়োজন নেই।
সোমবার, ডোনাল্ড ট্রাম্প তিন সপ্তাহের নীরবতা ভেঙে আবারও নতুন করে শুল্ক ঘোষণা করেন। এবারের টার্গেট ছিল ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি, যেখানে আমদানিকৃত ছবির উপর 100% শুল্ক আরোপ করা হয়। এছাড়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ISM সার্ভিসেস বা পরিষেবা সংক্রান্ত PMI প্রকাশিত হয় এবং এটির ফলাফল পূর্বাভাসের তুলনায় বেশি ছিল, যার ফলে দিনের দ্বিতীয়ার্ধে ডলারের দর কিছুটা বৃদ্ধি পায়। তবে এখন এই প্রতিবেদন বা মার্কেটের ট্রেডারদের প্রতিক্রিয়ার খুব একটা গুরুত্ব নেই, কারণ পেয়ারটির মূল্য এখনো সাইডওয়েজ রেঞ্জের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।
সোমবার ৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে চারটি ট্রেড সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, তবে সবগুলো সিগনয়ালই ফ্ল্যাট মার্কেটের মধ্যে পাওয়া গেছে। সহজভাবে বলতে গেলে, লেভেল ও সিগন্যাল যত ভালোই হোক, যখন মার্কেটে শুধুমাত্র সাইডওয়েজ মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন মুনাফা করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে। কোনো সিগন্যাল অনুযায়ী মূল্য নিকটতম টার্গেট লেভেলে পৌঁছাতে পারেনি। তাই নতুন ট্রেডারদের মনে করিয়ে দেওয়া হচ্ছে যে বর্তমান মার্কেটে বিশৃঙ্খল মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছে এবং ট্রেডাররা প্রায়শই সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন উপেক্ষা করছে।
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে এখনো সামগ্রিকভাবে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে। গত সপ্তাহের শুরুতে কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে, এই পেয়ারের মূল্য টানা তিন সপ্তাহ ধরে সর্বোচ্চ লেভেলের রেঞ্জের কাছাকাছি সাইডওয়েজ মুভমেন্ট প্রদর্শন করছে। সামগ্রিকভাবে মার্কিন ডলারের প্রতি এবং এর সাথে সম্পর্কিত সব কিছুর প্রতি এখনো নেতিবাচক মনোভাব বিরাজ করছে। তবে যদি ট্রাম্প নিজেই বাণিজ্য সংঘাত কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে ডলার কিছুটা পুনরুদ্ধার করতে পারে। তবে তা কখন ঘটবে বা আদৌ ঘটবে কি না, সেটি এখনো অজানা।
মঙ্গলবার আবারও এই পেয়ারের মূল্য যেকোনো দিকেই মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে, কারণ এখনো পর্যন্ত মার্কেট পুরোপুরিভাবে ট্রাম্পের বিবৃতি ও সিদ্ধান্ত দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে। ট্রাম্পের পক্ষ থেকে সাম্প্রতিককালে নতুন কিছু না আসায়, আমরা মনে করি বর্তমানে মূল্যের ফ্ল্যাট থাকার প্রবণতা আরও কিছুদিন স্থায়ী হতে পারে। রেঞ্জের নিম্ন সীমানা (1.1275) থেকে একটি রিবাউন্ডের ফলে মূল্য বৃদ্ধি হতে পারে।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হচ্ছে: 1.0940–1.0952, 1.1011, 1.1091, 1.1132–1.1140, 1.1189–1.1191, 1.1275–1.1292, 1.1330, 1.1413–1.1424, 1.1474–1.1481, 1.1513, 1.1548, 1.1571, 1.1607–1.1622, 1.1666, 1.1689। মঙ্গলবার ইউরোজোনে সার্ভিসেস বা পরিষেবা সংক্রান্ত PMI সূচকের দ্বিতীয় সংশোধিত হিসাব প্রকাশ করা হবে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উল্লেখযোগ্য কোনো অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না। তাই আমরা আজই ফ্ল্যাট মুভমেন্ট সমাপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি না।
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।