empty
 
 
07.05.2025 11:11 AM
মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি রেকর্ড পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে

মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছানোর খবরে ইউরোর দরপতন বন্ধ হয়ে মূল্য ঊর্ধ্বমুখী হয়, কারণ কোম্পানিগুলো ওষুধসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানির জন্য হুড়োহুড়ি শুরু করে। এই অবস্থার জন্য ট্রাম্প প্রশাসনকে দায়ী করা হচ্ছে, যারা বড় পরিসরে বাণিজ্য শুল্ক আরোপ করেছিল।

This image is no longer relevant

মার্কিন উৎপাদকদের স্বার্থ রক্ষা এবং বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর উদ্দেশ্যে আরোপিত শুল্ক ঠিক উল্টো প্রভাব ফেলেছে। দেশীয় উৎপাদনকে উৎসাহিত করার বদলে এটি আমদানিকৃত পণ্যের দামে ব্যাপক বৃদ্ধি ঘটিয়েছে, ফলে মার্কিন কোম্পানিগুলো চাহিদা মেটাতে আমদানি আরও বাড়িয়ে দেয়। ফার্মাসিউটিক্যাল খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কারণ ওষুধের অধিকাংশ উপাদান ও প্রস্তুতকৃত পণ্য বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়।

অর্থনীতিবিদরা বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপিত শুল্ক প্রতিষ্ঠিত সাপ্লাই চেইনকে বাধাগ্রস্ত করেছে এবং মার্কেটে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। কোম্পানিগুলো ভবিষ্যতে আরও নীতিমালা পরিবর্তনের আশঙ্কায় আগেভাগেই বিপুল পরিমাণ পণ্য আমদানি করেছে, যার ফলে বাণিজ্য ঘাটতি আরও বেড়েছে। এছাড়াও, অন্যান্য দেশের পাল্টা পদক্ষেপ, যেমন—মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক—মার্কিন রপ্তানি খাতকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করেছে।

তথ্য অনুযায়ী, মার্চ মাসে পণ্য ও পরিষেবা ঘাটতি গত মাসের তুলনায় ১৪% বেড়ে $140.5 বিলিয়ন হয়েছে। যেখানে অর্থনীতিবিদদের গড় পূর্বাভাস ছিল $137.2 বিলিয়ন ঘাটতির।

ভোক্তা পণ্য আমদানি রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের আমদানি। এছাড়া মূলধনী যন্ত্রপাতি ও মোটরযান আমদানিও বেড়েছে।

আগেই বলা হয়েছে, প্রতিবেদনটি এমন এক সময়ের চিত্র তুলে ধরছে যখন মার্কিন কোম্পানিগুলো ট্রাম্পের ঘোষিত নতুন শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগে মজুদ বাড়ানোর শেষ প্রচেষ্টা চালাচ্ছিল। যদিও ওষুধ সংক্রান্ত আমদানিতে তখনও শুল্ক আরোপ হয়নি, তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা দিয়েছিলেন যে শিগগিরই ওষুধের ওপর শুল্ক নির্ধারণ করা হবে।

প্রতিবেদন আরও জানা যায়, মার্চে ফার্মাসিউটিক্যাল আমদানি বৃদ্ধির ফলে আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে মার্কিন পণ্যের বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে $29.3 বিলিয়নে পৌঁছায়—যা আগের মাসের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি।

প্রথম প্রান্তিকে বাণিজ্য ঘাটতির এই তীব্র বৃদ্ধির ফলে ২০২২ সালের পর প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে। সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত জিডিপি বার্ষিক ভিত্তিতে ০.৩% হ্রাস পেয়েছে, যেখানে নেট রপ্তানি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থেকে প্রায় ৫ শতাংশ পয়েন্ট হ্রাস দিয়েছে—এটি রেকর্ড পরিমাণ অবদানহীনতা। একই সময়ে আমদানি ৪.৪% বেড়ে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে, যেখানে রপ্তানি বেড়েছে মাত্র ০.২%।

তবে, ইনস্টিটিউট ফর সাপ্লাই ম্যানেজমেন্ট (ISM)-এর জরিপে দেখা যাচ্ছে, উৎপাদক এবং পরিষেবা কোম্পানিগুলোর আমদানি ধীরে ধীরে কমছে, যা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে শুল্ক কার্যকরের আগের আমদানি বৃদ্ধির ধারা শেষ হতে চলেছে।

ট্রাম্প প্রশাসন বারবার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার কথা বলেছে, যেখানে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ, দেশীয় উৎপাদনকে উৎসাহ প্রদান এবং শিল্প নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষ্য ছিল। শুল্ককে সরকারি রাজস্ব বৃদ্ধির একটি হাতিয়ার হিসেবেও দেখা হচ্ছে। ইতোমধ্যে, কানাডার সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে, আর মেক্সিকোর সঙ্গে ঘাটতি ফেব্রুয়ারির রেকর্ড পর্যায়ের কাছাকাছি রয়েছে। চীনের সঙ্গে মার্চ মাসে বাণিজ্য ঘাটতি মৌসুমভিত্তিক সমন্বয় অনুযায়ী কমে $24.8 বিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। মুদ্রাস্ফীতির সমন্বয় করলে, মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের মোট পণ্যের বাণিজ্য ঘাটতি রেকর্ড $150.9 বিলিয়নে পৌঁছেছে।

বর্তমান টেকনিক্যাল পরিস্থিতি অনুযায়ী EUR/USD পেয়ারের ক্রেতাদের 1.1379 লেভেল ব্রেক করার ওপর লক্ষ্য রাখতে হবে। শুধুমাত্র তখনই 1.1415 টেস্টের সুযোগ তৈরি হবে। সেখান থেকে 1.1453 পর্যন্ত মূল্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকবে, যদিও মার্কেটের বড় ট্রেডারদের সহায়তা ছাড়া এটি কঠিন হবে। চূড়ান্ত লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.1487 এর সর্বোচ্চ লেভেল। তবে, এই পেয়ারের দরপতনের ক্ষেত্রে 1.1341 লেভেলে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ক্রেতা সক্রিয় না হলে কোনো বাউন্সের প্রত্যাশা করা উচিত নয়। এর অনুপস্থিতিতে, 1.1305 লেভেল বা 1.1269 থেকে লং পজিশন বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে।

GBP/USD পেয়ারের ক্ষেত্রে, ক্রেতাদের প্রথমে মূল্যকে 1.3365 রেজিস্ট্যান্স লেভেলের ওপরে নিয়ে যেতে হবে। শুধুমাত্র তখনই তারা মূল্যকে 1.3399 লেভেলে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে পারবে, যা ব্রেক করা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.3437 এর জোন। যদি এই পেয়ারের মূল্য হ্রাস পায়, তাহলে বিক্রেতারা 1.3335 এর লেভেলে নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করবে। যদি তারা সফল হয়, তাহলে মূল্য এই রেঞ্জ ব্রেক করে GBP/USD 1.3301 এর লো পর্যন্ত এবং পরবর্তীতে 1.3260 এর দিকেও চলে যেতে পারে।

Recommended Stories

এখন কথা বলতে পারবেন না?
আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন চ্যাট.