আরও দেখুন
বৃহস্পতিবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্য হঠাৎ করেই সেই সাইডওয়েজ চ্যানেল থেকে বেরিয়ে আসে, যেখানে এটি গত তিন সপ্তাহ ধরে ট্রেড করছিল। এটি মার্কিন ট্রেডিং সেশনের সময় ঘটে, যদিও কোনো গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পও নতুন করে কোনো শুল্ক আরোপ বা বড় ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ থেকে বিরত ছিলেন। ফলে ঠিক বৃহস্পতিবারই মূল্য কেন এই ফ্ল্যাট রেঞ্জ ব্রেক করে বেরিয়ে আসল, তা ব্যাখ্যা করা কঠিন। মূলত, সামগ্রিক টেকনিক্যাল চিত্র অনেক আগেই একটি কারেকশনের ইঙ্গিত দিচ্ছিল। ট্রাম্প যত বাধাই সৃষ্টি করুন না কেন, ডলার চিরকাল দরপতনের শিকার হতে পারে না। তাছাড়া, বুধবার সন্ধ্যায় ফেডারেল রিজার্ভ আবারও হকিশ বা কঠোর অবস্থান গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়, তারা মূল সুদের হার কমায়নি এবং জেরোম পাওয়েল জানিয়েছেন, ২০২৫ সালের শেষ পর্যন্ত মুদ্রানীতিতে কোনো নমনীয়করণ হবে না, কারণ মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধির ঝুঁকি রয়েছে। ফলে ডলারের শক্তিশালী হওয়ার পেছনে যৌক্তিক ভিত্তি ছিল। তবে এই ভিত্তি ছিল বুধবার সন্ধ্যায়, আর পেয়ারটির দরপতন শুরু হয় বৃহস্পতিবার। এমনকি ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের বৈঠকের সঙ্গেও এর কোনো সম্পর্ক নেই, কারণ ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্য নিজস্ব সাইডওয়েজ চ্যানেলের মধ্যেই ছিল এবং বৈঠকের সিদ্ধান্ত EUR/USD পেয়ারের দরপতনের কয়েক ঘণ্টা আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে বৃহস্পতিবার দুটি ট্রেডিং সিগন্যাল তৈরি হয়। প্রথমে, এই পেয়ারের মূল্য 1.1275–1.1292 এরিয়া থেকে রিবাউন্ড করে, কিন্তু মাত্র ২০ পিপস পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখী হয়—যা ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করার জন্য যথেষ্ট ছিল। এরপর পেয়ারটির মূল্য এই এরিয়ার নিচে কনসোলিডেট করে, যা শর্ট পজিশন ওপেন করার জন্য একটি স্পষ্ট সিগন্যাল প্রদান করে। দিনের শেষ নাগাদ, মূল্য ৪০ পিপস পর্যন্ত পড়ে যায়—যা নতুন ট্রেডারদের জন্য একটি সহজ সিগনাল থেকে ভালো মুনাফার সুযোগ দেয়, যা এই পেয়ারের মূল্যের সাইডওয়েজ চ্যানেল থেকে বেরিয়ে আসার স্পষ্ট লক্ষণ ছিল।
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে এখনো EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে। তিন সপ্তাহ ধরে সাইডওয়েজ ট্রেডিংয়ের পর অবশেষে একটি কারেকশন শুরু হয়েছে, যার ফলে মূল্য নিম্নমুখী হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে মার্কিন ডলারের প্রতি ট্রেডারদের মনোভাব এখনো অত্যন্ত নেতিবাচক। তবে, যদি ট্রাম্প বাণিজ্য সংঘাত প্রশমনের দিকে পদক্ষেপ নেন, তাহলে ডলারের দর কিছুটা বাড়তে পারে। তিন মাসের অবিরাম দরপতনের পর ডলারের মূল্যের কারেকশন কতটা শক্তিশালী হবে, সেই পূর্বাভাস দেওয়া কঠিন।
শুক্রবার কোনো উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদনের প্রকাশের কথা নেই, তাই ভোলাটিলিটি কম থাকতে পারে এবং আবারও সাইডওয়েজ মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে। ফেড অবশেষে ডলারকে সমর্থন যুগিয়েছে, তবে সেই সমর্থন কতদিন স্থায়ী হবে?
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচ্য লেভেলগুলো হলো: 1.0940–1.0952, 1.1011, 1.1091, 1.1132–1.1140, 1.1189–1.1191, 1.1275–1.1292, 1.1413–1.1424, 1.1474–1.1481, 1.1513, 1.1548, 1.1571, 1.1607–1.1622, 1.1666, 1.1689।
শুক্রবার ইউরোজোন বা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নির্ধারিত নেই। তাই যদি ট্রাম্প নতুন করে দৃশ্যপটে না আসেন, তাহলে আমরা চলমান নিম্নমুখী প্রবণতার মধ্যে এই পেয়ারের মূল্যের সীমিত মুভমেন্টের প্রত্যাশা করছি।
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।