আরও দেখুন
বৃহস্পতিবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ার উভয় দিকেই ট্রেড করেছে। গতকাল সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট সমৃদ্ধ হলেও, এটি প্রত্যাশিতভাবে কোনো সিদ্ধান্তমূলক প্রভাব ফেলেনি। অনেক প্রতিবেদনের ফলাফল একে অপরকে ছাপিয়ে গিয়েছে, আবার কিছু প্রতিবেদন কম গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কারণে উপেক্ষিত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ইউরোজোনের প্রথম প্রান্তিকের জিডিপির দ্বিতীয় অনুমান প্রথমটির তুলনায় নিম্নমুখী হলেও শিল্প উৎপাদনের ফলাফল প্রত্যাশার চেয়ে ভালো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে, খুচরা বিক্রয় পূর্বাভাসের চেয়ে মাত্র 0.1% বেশি এসেছে, আর উৎপাদক মূল্য সূচক (PPI) 0.5% হ্রাস পেয়েছে। তবুও, মার্কেটের ট্রেডাররা এই ফলাফল নিয়ে কী করবে তা হয়তো বুঝে উঠতে পারেনি, কিংবা প্রতিক্রিয়া জানাতে চায়নি। আগেও বলা হয়েছে, আমাদের কাছে বাণিজ্যযুদ্ধ সংক্রান্ত খবরই এখনো সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা ধীরে ধীরে কমলেও মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো ডলার কেনার জন্য তাড়াহুড়া করছে না। ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে এখনো এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বিদ্যমান রয়েছে, তবে এটি খুব বেশি শক্তিশালী নয়।
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে, বৃহস্পতিবার EUR/USD পেয়ারের মূল্য 1.1198-এর গুরুত্বপূর্ণ লেভেলকে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করেছে। আগের দিন এই লেভেলটি কার্যকরভাবে কাজ করেছিল, কিন্তু বৃহস্পতিবারের প্রচুর পরিমাণে সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ায় ট্রেডাররা বিভ্রান্তির মধ্যে ছিল। অস্থিরতার মাত্রা দুর্বল ছিল এবং মূল্য বারবার দিক পরিবর্তন করেছে। ফলে, শক্তিশালী কোনো সিগন্যাল খুঁজে বের করা এবং মুনাফা অর্জন করা কঠিন হয়ে পড়েছিল।
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, অবশেষে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা গঠিত হয়েছে। সামগ্রিকভাবে মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো মার্কিন ডলারের প্রতি অত্যন্ত নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করছে। তবে, যেহেতু ট্রাম্প এখন নিজেই বাণিজ্য উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা করছেন, তাই খুব শিগগিরই ডলারের দর কিছুটা বাড়তে পারে। এই পুনরুদ্ধারের শক্তি নির্ভর করবে তিনি কতগুলো বাণিজ্য চুক্তি সফলভাবে স্বাক্ষর করতে পারেন তার উপর। ট্রাম্প সংক্রান্ত উচ্চ-প্রভাবসম্পন্ন খবর—যেমন, ফেডের চেয়ার পাওয়েলকে বরখাস্ত করা কিংবা নতুন করে শুল্ক আরোপের হুমকি—সেগুলোও এই প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
শুক্রবার, মূলত টেকনিক্যাল বিষয়গুলোর উপর ভিত্তি করে EUR/USD পেয়ারের ট্রেড করা হবে। আজকের সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট দুর্বল থাকার প্রেক্ষিতে আজ আরেকবার ফ্ল্যাট (সাইডওয়েজ) ট্রেডিং দেখা যেতে পারে।
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.0940–1.0952, 1.1011, 1.1088, 1.1132–1.1140, 1.1198, 1.1275, 1.1292, 1.1413–1.1424, 1.1474–1.1481, 1.1513, 1.1548, 1.1571, 1.1607–1.1622।
শুক্রবার ইউরোজোনে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনের প্রকাশনা বা ইভেন্ট নির্ধারিত নেই, আর যুক্তরাষ্ট্র কেবলমাত্র স্বল্প গুরুত্বসম্পন্ন কিছু প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যার মধ্যে ইউনিভার্সিটি অব মিশিগান থেকে কনজিউমার সেন্টিমেন্ট ইনডেক্স বা ভোক্তা মনোভাব সূচক ট্রেডারদের কিছুটা আগ্রহ আকর্ষণ করতে পারে। আমাদের মতে, আজ ফ্ল্যাট ট্রেডিংয়ের সম্ভাবনাই বেশি।
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।