আরও দেখুন
শুক্রবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের সামান্য দরপতন হয়েছে। যদিও ৫-মিনিট টাইমফ্রেমে দেখে মনে হতে পারে যে সারাদিন ধরেই এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজ করছিল, তবে প্রকৃতপক্ষে সারাদিনে মার্কিন ডলারের দর মাত্র ১৯ পিপস বেড়েছে—যা কার্যত বৃদ্ধি পেয়েছে বলার মতো পর্যাপ্ত নয়। সামগ্রিকভাবে, এখনো ধীর গতিতে মার্কিন ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট বজায় রয়েছে, যার পেছনে মৌলিক কারণ হিসেবে ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর ব্যাপারে অনাগ্রহ এবং বাণিজ্য যুদ্ধের উত্তেজনা প্রশমনের প্রক্রিয়া কাজ করছে। তবে মার্কেটের ট্রেডারদের মধ্যে এখনো ডলারের প্রতি সংশয়ী মনোভাব বিরাজ করছে, এবং কেবলমাত্র সামান্য পরিমাণে ডলারের ক্রয়-বিক্রয় পরিলক্ষিত হচ্ছে। দুর্ভাগ্যবশত, বর্তমান পরিস্থিতিতে ডলারের সবচেয়ে বড় শত্রু হচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতি।
শুক্রবার ডলার বিক্রির পক্ষেই যুক্তি বেশি ছিল বলা যায়। ইউরোজোনে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়নি বা প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়নি, এবং যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশিত তিনটি প্রতিবেদন—হাউজিং স্টার্টস, বিল্ডিং পারমিটস, এবং ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের কনজিউমার সেন্টিমেন্ট ইনডেক্স—সাধারণত মার্কেটে বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না। তবুও, এই তিনটি প্রতিবেদনের ফলাফল প্রত্যাশার চেয়ে দুর্বল ছিল। তবুও, এই সময় ডলারের দর বেড়েছে, যা আবারও প্রমাণ করে যে বর্তমানে সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিস্থিতি ও মার্কেটে পরিলক্ষিত মুভমেন্টের মধ্যে কোনো সুস্পষ্ট সম্পর্ক বিদ্যমান নেই।
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে মাত্র একটি কার্যকর ট্রেডিং সিগন্যাল পাওয়া গেছে। মার্কিন সেশনের সময়, মূল্য 1.1179–1.1185 এরিয়ার নিচে কনসোলিডেট করে, এরপর নিম্নমুখী হতে থাকে এবং পরবর্তীতে মূল্য 1.1147-এর লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছায়। এই লেভেলটি শর্ট পজিশন ক্লোজ করার জন্য উপযুক্ত ছিল, যার ফলে এই ট্রেড থেকে সামান্য লাভ হয়েছে।
সর্বশেষ কমিটমেন্ট অব ট্রেডার্স (COT) রিপোর্ট ১৩ মে প্রকাশিত হয়েছে। উপরের চার্ট অনুযায়ী, নন-কমার্শিয়াল ট্রেডারদের নিট পজিশনের সংখ্যা দীর্ঘদিন ধরেই ঊর্ধ্বমুখী ছিল। বিক্রেতারা অল্প সময়ের জন্য মার্কেটে নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল, তবে দ্রুত তা হারিয়ে ফেলে। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে ধারাবাহিকভাবে ডলারের দরপতন হচ্ছে। যদিও বলা যাচ্ছে না এই প্রবণতা কতদিন চলবে, তবুও COT রিপোর্ট বড় ট্রেডারদের মানসিকতা প্রতিফলিত করে—যদিও বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এই মানসিকতা দ্রুত পরিবর্তিত হতে পারে।
ইউরোর পক্ষে কোনো এমন কোনো মৌলিক কারণ নেই যা এটিকে শক্তিশালী করতে পারে, তবে ডলারের উপর রাজনৈতিক চাপ অনেক বেশি। আরও কয়েক সপ্তাহ বা মাস ধরে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের কারেকশন চলমান থাকতে পারে, তবে গত ১৬ বছরের দীর্ঘমেয়াদী নিম্নমুখী প্রবণতা এত সহজে বদলাবে না। একবার ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধ শেষ হলে, পুনরায় ডলারের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হতে পারে।
COT চার্টে লাল ও নীল লাইন আবারও একে অপরকে অতিক্রম করেছে, যা একটি নতুন বুলিশ প্রবণতার ইঙ্গিত দেয়। সর্বশেষ সাপ্তাহিক রিপোর্ট অনুযায়ী, নন-কমার্শিয়াল ট্রেডারদের লং পজিশনের সংখ্যা 15,400টি বেড়েছে, আর শর্ট পজিশনের সংখ্যা বেড়েছে 6,300টি। ফলে নিট পজিশনের সংখ্যা 9,000 কন্ট্রাক্ট বেড়ে গেছে।
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে EUR/USD পেয়ারের মূল্য তুলনামূলকভাবে ধীর গতিতে কমছে, যা বিস্তৃত পরিপ্রেক্ষিতে একটি কারেকশন হিসেবেই বিবেচনা করা যায়। এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্ট এখনো বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা প্রশমনের সঙ্গে প্রভাবে হচ্ছে। যদি বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর অব্যাহত থাকে এবং মার্কিন শুল্কের মাত্রা হ্রাস পায়, তাহলে মার্কিন ডলার সেই লেভেলগুলোতে আরও পুনরুদ্ধার করতে পারে, যেখানে সর্বশেষ নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু হয়েছিল। বর্তমানে মার্কেটের মুভমেন্ট কোনো টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ বা সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে না—বরং বৈশ্বিক বাণিজ্য আলোচনার অগ্রগতিই একমাত্র চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে।
১৯ মে তারিখে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচ্য লেভেলগুলো হলো: 1.0823, 1.0886, 1.0949, 1.1006, 1.1092, 1.1147, 1.1185, 1.1234, 1.1274, 1.1321, 1.1426, 1.1534; সেইসাথে সেনকৌ স্প্যান বি (1.1224) এবং কিজুন-সেন (1.1165) লাইন রয়েছে। ইচিমোকু ইন্ডিকেটরের লাইনগুলো দিনভর অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে, তাই ট্রেডিং সিগন্যাল নির্ধারণের সময় তা বিবেচনায় নিতে হবে। প্রতিবার যখন মূল্য আপনার অনুকূলে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করবে, তখনই ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করতে হবে—ভুল সিগন্যাল থেকে সুরক্ষিত থাকার জন্য এটি একটি বাধ্যতামূলক কৌশল।
সোমবার ইউরোজোন বা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নির্ধারিত নেই, তাই মার্কেটে বড় ধরনের মুভমেন্টের প্রত্যাশা করা যাচ্ছে না। পুরোপুরি টেকনিক্যাল লেভেল এবং ইন্ডিকেটর লাইনের উপর ট্রেডিং নির্ভর করবে। এখনো এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বিদ্যমান রয়েছে, তাই ডলার আবারও শক্তিশালী হওয়ার চেষ্টা করতে পারে। তবে আমরা বারবার দেখেছি, মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো ডলার কেনার ব্যাপারে আগ্রহী নয়, এবং তারা ডলারের পক্ষে থাকা অনেক ইতিবাচক বিষয়ই উপেক্ষা করছে।