আরও দেখুন
বৃহস্পতিবার ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্য নিকটবর্তী সাপোর্ট লেভেল 1.1267 পর্যন্ত কারেকশন করেছে। ইউরোর দরপতনের পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। গতকাল আমরা উল্লেখ করেছিলাম যে সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখন সামগ্রিক মার্কেট সেন্টিমেন্টে খুব একটা প্রভাব বিস্তার করছে না। স্বল্পমেয়াদি প্রতিক্রিয়া দেখা গেলে, তা ট্রেডারদের দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গিকে পরিবর্তন করছে না।
ইউরোজোন এবং জার্মানির সার্ভিস ও ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের বিজনেস অ্যাক্টিভিটি সূচকের ফলাফল প্রত্যাশার চেয়ে কম ছিল, যা ট্রেডারদের অস্বস্তিকর অবস্থানে ফেলে দিয়েছে। একদিকে ট্রেডাররা ইউরো বিক্রি করছিল এবং ডলার কিনতে চাইছিল না, অন্যদিকে তাদের কাছে তেমন কোনো বিকল্পও ছিল না। দিনের দ্বিতীয়ার্ধে মার্কেটে এই পেয়ারের জন্য আরেকটি নেতিবাচক চমক আসে, যখন মার্কিন PMI প্রতিবেদনের ফলাফল প্রত্যাশার চেয়ে ইতিবাচক আসে। এতে আবারও ডলার ক্রয়ের প্রবণতা সৃষ্টি হয়। ছয়টি প্রতিবেদনের ইতিবাচক ফলাফলের প্রেক্ষিতে মার্কিন ডলারের দর প্রায় ৫০ পিপস বৃদ্ধি পায়। অথচ রাতেই কোনো প্রতিবেদন বা নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই ডলার আবার ৪০ পিপস দরপতনের শিকার হয়েছে।
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, EUR/USD পেয়ারের মূল্য ডিসেন্ডিং চ্যানেল ব্রেক করে উপরের দিকে গিয়েছে এবং কোনো সুস্পষ্ট মৌলিক কারণ বা অনুঘটক ছাড়াই ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। মনে হচ্ছে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার মুহূর্ত থেকে যে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়েছে, তা এখনো চলমান রয়েছে। এবার মার্কেটের ট্রেডারদের নতুন কোনো শুল্ক, নিষেধাজ্ঞা বা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের দরকার হয়নি—বর্তমানে প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার উপস্থিতিই ডলার বিক্রির কারণ হিসেবে যথেষ্ট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
শুক্রবার EUR/USD পেয়ারের ট্রেডিং আবারও মূলত টেকনিক্যাল বিষয়ের উপর নির্ভর করবে, কারণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনো মার্কেটে প্রাসঙ্গিক নয়। ট্রেডারদের মধ্যে আবারও এই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে যে কোনো কারণ থাকুক বা না থাকুক তারা ডলার বিক্রি করতে প্রস্তুত।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হচ্ছে: 1.0940–1.0952, 1.1011, 1.1088, 1.1132–1.1140, 1.1198, 1.1267–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413–1.1424, 1.1474–1.1481, 1.1513, 1.1548, 1.1571, 1.1607–1.1622
শুক্রবার ইউরোজোন ও যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ইভেন্ট নির্ধারিত নেই। ফলে মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে অথবা নতুন করে ডলারের দরপতনের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। 1.1267 লেভেল থেকে ইতোমধ্যে একটি রিবাউন্ড গঠিত হয়েছে, তাই আমরা প্রত্যাশা করছি যে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত থাকবে।
সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।