আরও দেখুন
বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে EUR/USD কারেন্সি পেয়ার তীব্র দরপতনের শিকার হয়, তবে দিনের বাকি সময়টিতে শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার সাথে ট্রেড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এই পেয়ারের মূল্যের যে মুভমেন্ট দেখা গেছে তা ব্যাখ্যা করা কিছুটা কঠিন, তবে আমরা সেটা করার চেষ্টা করব। রাতের বেলায় (যখন হঠাৎ করে ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পায়), জানা যায় যে, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আদালত ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক আরোপিত অধিকাংশ শুল্ক বাতিল করার রায় দিয়েছে। ম্যানহাটনের আদালত রায় দেয় যে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন পদক্ষেপ নেওয়ার কোনো অধিকার বা ক্ষমতা নেই — কেবলমাত্র কংগ্রেসই বৈশ্বিক বাণিজ্যিক শুল্ক আরোপ করতে পারে। এই খবর ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট সৃষ্টি করে। তবে পরে হঠাৎ কেন আবার ডলারের দরপতন শুরু হল? কারণ ট্রাম্প সঙ্গে সঙ্গে আদালতের ওপর চাপ সৃষ্টি করা শুরু করেন, আপিল করার ঘোষণা দেন এবং মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন। সন্ধ্যার দিকে ম্যানহাটনের আদালত তার রায় ১৪ দিনের জন্য স্থগিত করে। এইভাবে, ট্রাম্প পুরো বিষয়টি খুব সহজে সামাল দিয়ে ফেলেন। বাণিজ্যযুদ্ধ চলমান রয়েছে, শুল্ক বহাল রয়েছে, এবং ডলার আবারও দরপতনের শিকার হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার ৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে দুটি অত্যন্ত কার্যকর ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। ইউরোপীয় সেশনের পুরো সময় জুড়ে, এই পেয়ারের মূল্য 1.1267–1.1292 এর এরিয়া ব্রেক করার চেষ্টা করছিল, এবং মার্কিন সেশনের শুরুতে অবশেষে তা করতে সফল হয়। এরপরে একটি শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যায়, যা মূল্য 1.1354–1.1363 এর উপরে পৌঁছানোর পর থামে। এই লেভেলের কাছে লং পজিশন ক্লোজ করা যেত। এই ট্রেড থেকে কমপক্ষে ৬০–৭০ পিপস লাভ করা সম্ভব হয়েছিল।
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে EUR/USD পেয়ারের মূল্য অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইনের ব্রেক করে নিম্নমুখী প্রবণতা, তবে ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে যে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়েছিল, সেটি এখনো অব্যাহত থাকতে পারে। মূলত, এই মুহূর্তে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট — এই কারণটিই ট্রেডারদের ডলার থেকে বিনিয়োগ সরিয়ে নেয়ার জন্য যথেষ্ট। যদি ট্রাম্প আবার হুমকি প্রদান, আলটিমেটাম জারি করা, এবং নতুন করে শুল্ক আরোপ/বৃদ্ধি করা শুরু করেন, তবে ট্রেডারদের হাতে খুব একটা বিকল্প থাকবে না। এখনো ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ক বাতিল হয়নি, তাই বাণিজ্যযুদ্ধ সংক্রান্ত পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।
বৃহস্পতিবার আবার EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী কারেকশন শুরু হতে পারে, যেহেতু ট্রেন্ডলাইনটির ব্রেক হয়ে গেছে। একই সাথে, ডলারের শক্তিশালী মূল্য বৃদ্ধির জন্য এখনো কোনো উল্লেখযোগ্য কারণ দেখা যাচ্ছে না।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য যেসব লেভেল পর্যবেক্ষণ করা উচিত: 1.0940–1.0952, 1.1011, 1.1088, 1.1132–1.1140, 1.1198–1.1218, 1.1267–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413–1.1424, 1.1474–1.1481,1.1513,
1.1548, 1.1571, 1.1607–1.1622।
শুক্রবার জার্মানি থেকে মে মাসের খুচরা বিক্রয় এবং মুদ্রাস্ফীতি সম্পর্কিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই প্রতিবেদনগুলো গৌণ গুরুত্বসম্পন্ন হিসেবে বিবেচনা করা যায়। একইভাবে, যুক্তরাষ্ট্র থেকেও কিছু প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে যেমন: পারসোনাল কনজাম্পশন এক্সপেন্ডিচার (PCE) প্রাইস ইনডেক্স, ব্যক্তিগত আয় ও ব্যয় সংক্রান্ত তথ্য এবং মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কনজিউমার সেন্টিমেন্ট ইনডেক্স বা ভোক্তা মনোভাব সূচক, যেগুলোও গুরুত্বের দিক থেকে দ্বিতীয় সারির হিসেবে বিবেচনা করা যায়।
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।