empty
 
 
02.06.2025 07:50 AM
২ জুন কীভাবে EUR/USD পেয়ারের ট্রেডিং করবেন? নতুন ট্রেডারদের জন্য ট্রেডিংয়ের সহজ টিপস ও বিশ্লেষণ

শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ

EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট

This image is no longer relevant

বৃহস্পতিবারের তুলনায় শুক্রবার অনেকটাই স্থিতিশীলভাবে EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের ট্রেডিং পরিলক্ষিত হয়েছে। এটি মোটেও অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি ছিল না, কারণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের প্রভাব দুর্বল ছিল এবং বৃহস্পতিবার মার্কিন আদালত কর্তৃক ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ক বাতিল এবং সেই সিদ্ধান্ত ১৪ দিনের জন্য স্থগিত রাখার ঘোষণার যাবতীয় তথ্য মার্কেটে ইতোমধ্যে মূল্যায়িত হয়েছিল। মনে করিয়ে দিই যে বৃহস্পতিবার মার্কিন বাণিজ্য আদালত প্রথমে ট্রাম্পের শুল্ককে অবৈধ উল্লেখ করে তা অবরুদ্ধ করেছিল, তবে পরে তা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। এর ফলে, প্রথমে ডলারের মূল্য আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বৃদ্ধি পায়, এরপর তিনগুণ বেশি মাত্রায় দরপতন ঘটে। শুক্রবার মার্কেটে একটি কারেকশন দেখা যায় এবং বর্তমানে EUR/USD পেয়ারের মূল্য উচ্চ লেভেলের কাছাকাছি অবস্থান করছে, যা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার সম্ভাবনা বজায় রাখছে। শুক্রবার জার্মানিতে প্রকাশিত মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনের ফলাফল খুব একটা আলোড়ন সৃষ্টি করেনি: মে মাসে ভোক্তা মূল্য সূচক (CPI) ২.১% ছিল। ট্রেডাররা আশা করেছিলেন দেশটির CPI কমে ২%-এ নামবে, কিন্তু তা ঘটেনি। যেকোনো পরিস্থিতিতে, বর্তমানে মুদ্রাস্ফীতির প্রবণতা ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতিতে কার্যত কোনো প্রভাব ফেলছে না।

EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট

This image is no longer relevant

৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে শুক্রবার দুটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। যেহেতু সেদিন প্রবণতাভিত্তিক নয় বরং সাইডওয়েজ মুভমেন্ট চলমান ছিল, তাই সিগন্যালগুলো খুব একটা আদর্শ ছিল না। তা সত্ত্বেও, এই পেয়ারের মূল্য প্রথমে 1.1354–1.1363 এরিয়া ব্রেক করে এবং পরে মার্কিন সেশনের শুরুতে একই এরিয়া থেকে রিবাউন্ড করে। ফলে, নতুন ট্রেডাররা দুটি শর্ট পজিশন ওপেন করতে পারতেন। দুর্ভাগ্যবশত, কোনো ক্ষেত্রেই পেয়ারটির মূল্য নিকটবর্তী লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে পারেনি, তবে উভয় ক্ষেত্রেই মূল্য অন্তত ১৫ পিপস সঠিক দিকেই মুভমেন্ট প্রদর্শন করেছে। ওপেন করা ট্রেডগুলোর মধ্যে কোনোটি লোকসানে ক্লোজ হতো না।

সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:

ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে EUR/USD পেয়ারের মূল্য অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ড লাইনের নিচে নেমে গেছে; তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কারণে শুরু হওয়া এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এখনো অব্যাহত থাকতে পারে। মূলত, যেকোনো ইতিবাচক বা নেতিবাচক কারণ ছাড়াই ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকা মানেই মার্কেটে ডলার বিক্রির প্রবণতা অব্যাহত থাকবে। যদি ট্রাম্প আবার হুমকি-ধামকি, আল্টিমেটাম ও শুল্ক আরোপ/বৃদ্ধির ঘোষণা দিতে শুরু করেন, তাহলে ট্রেডারদের সামনে ডলার বিক্রি করা ছাড়া খুব একটা বিকল্প থাকবে না। ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ক বাতিল না করা মানেই বাণিজ্যযুদ্ধের পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকছে।

সোমবার পুনরায় EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী কারেকশন শুরু হতে পারে, যেহেতু ট্রেন্ডলাইন ইতোমধ্যেই ব্রেক হয়েছে। একই সঙ্গে, এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, মার্কিন ডলারের মূল্যের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির জন্য কোনো শক্তিশালী কারণ আপাতত নেই।

৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে বিবেচ্য লেভেলগুলো হলো: 1.0940–1.0952, 1.1011, 1.1088, 1.1132–1.1140, 1.1198–1.1218, 1.1267–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413–1.1424, 1.1474–1.1481, 1.1513, 1.1548, 1.1571, 1.1607–1.1622।

সোমবার জার্মানি, ইউরোজোন এবং যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন খাতের ব্যবসায়িক কার্যক্রম সূচক প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের ISM সূচকের দিকে নিবিড়ভাবে নজর রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:

  1. সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
  2. ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
  3. ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
  4. ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
  5. MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
  6. নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
  7. স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।

চার্টের মূল উপাদান:

সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।

লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।

MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।

ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Recommended Stories

এখন কথা বলতে পারবেন না?
আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন চ্যাট.