empty
 
 
18.06.2025 11:38 AM
১৮ জুন কীভাবে EUR/USD পেয়ারের ট্রেডিং করবেন? নতুন ট্রেডারদের জন্য ট্রেডিংয়ের সহজ টিপস ও বিশ্লেষণ

মঙ্গলবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ

EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট

This image is no longer relevant

EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্য মঙ্গলবার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়, এবং এটি বোঝা কঠিন কেন মার্কিন ডলার হঠাৎ করে শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। ওই দিনের সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট অনুযায়ী ডলারের আরও দুর্বল হওয়ার কথা ছিল, কারণ যুক্তরাষ্ট্রের শিল্প উৎপাদন ও খুচরা বিক্রয় সংক্রান্ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনগুলো প্রত্যাশার চেয়ে দুর্বল এসেছে। তবে, মার্কেট আবারও সামষ্টিক প্রতিবেদন উপেক্ষা করেছে এবং এবার ডলারের পক্ষে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, যা একেবারেই অপ্রত্যাশিত। আমরা কেবল অনুমান করতে পারি এটি হয়তো আজকের ফেডারেল রিজার্ভ মিটিংয়ের আগাম প্রতিক্রিয়া, অথবা মূল্যের পরবর্তী পতনের আগের একটি টেকনিক্যাল র্যালি। মঙ্গলবার ডলারের মূল্যবৃদ্ধির পেছনে কোনো ফান্ডামেন্টাল কারণ ছিল না। অবশ্য, মাঝে মাঝে টেকনিক্যাল কারেকশন ঘটে থাকে, তবে মঙ্গলবারের মুভমেন্টের জন্য কোনো স্পষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। অনেকে অনুমান করতে পারেন, মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত আরও ঘনীভূত হওয়ার আশঙ্কার কারণে ডলার শক্তিশালী হয়েছে।

EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট

This image is no longer relevant

মঙ্গলবার ৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে বেশ কিছু শক্তিশালী ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। পুরো ইউরোপিয়ান সেশনে এই পেয়ারের মুভমেন্ট ছিল একটি ফ্ল্যাট রেঞ্জের ভেতরে, তবে ইউএস সেশন শুরুর পর 1.1561–1.1571 এর এরিয়া থেকে শেষ পর্যন্ত মূল্য নিচের দিকে শক্তিশালীভাবে নেমে যায়। তাই নতুন ট্রেডারদের জন্য শর্ট পজিশনে প্রবেশের ভালো সুযোগ ছিল। দুর্ভাগ্যবশত, 1.1513 লেভেলের আশেপাশে একটি স্পষ্ট রিবাউন্ড দেখা দেওয়ায় একটি ভুল বাই সিগন্যাল সক্রিয় হয়েছিল, তবে এই লং ট্রেডটি ক্ষতির কারণ হয়নি—মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকে 15 পিপসের বেশি এগিয়ে যায়। এরপর একই লেভেলের কাছাকাছি আরেকটি সেল সিগন্যাল তৈরি হয় এবং পেয়ারের মূল্য পরবর্তী টার্গেট এরিয়া 1.1474–1.1481 পর্যন্ত পৌঁছে যায়। ফলে মোট তিনটি ট্রেডের মধ্যে দুটি লাভজনক হয়।

বুধবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:

ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে EUR/USD পেয়ারের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এখনো বজায় রয়েছে, যা ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার সময় থেকে শুরু হয়েছে এবং মনে হচ্ছে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট এলেও এই ট্রেন্ড শেষ হবে না। আপাতত, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট—এই একটি তথ্যই ডলারের নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় রাখার জন্য যথেষ্ট। এমনকি ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার সংঘাত তীব্র হওয়ার পরও ডলারের সামগ্রিক অবস্থানে খুব একটা প্রভাব পড়েনি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এখনো হুমকি দিচ্ছেন, আল্টিমেটাম দিচ্ছেন, শুল্ক আরোপ করছেন কিংবা বাড়াচ্ছেন, এবং ইরানের সঙ্গে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। ফলে, মার্কেট প্রতিদিন ডলার বিক্রি না করলেও, মধ্যমেয়াদে ডলার ক্রয়ের ইচ্ছাও দেখা যাচ্ছে না।

বুধবার EUR/USD পেয়ার আবারও সক্রিয়ভাবে মুভ করতে পারে, কারণ ট্রাম্প ইরানে হামলার প্রস্তুতি সম্পর্কিত একাধিক সিগন্যাল পাঠাচ্ছেন। সন্ধ্যায় ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত প্রকাশিত হবে।

৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচ্য লেভেলগুলো হলো: 1.1132–1.1140, 1.1198–1.1218, 1.1267–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413–1.1424, 1.1474–1.1481, 1.1513, 1.1561–1.1571, 1.1609, 1.1666, 1.1704, 1.1802। বুধবার ইউরোপ বা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন নির্ধারিত নেই, তবে দিনের প্রধান চালক হবে সন্ধ্যার ফেড সিদ্ধান্ত।

ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী

  1. সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
  2. ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
  3. ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
  4. ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
  5. MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
  6. নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
  7. স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।

চার্টের মূল উপাদান:

সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।

লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।

MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।

ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Recommended Stories

এখন কথা বলতে পারবেন না?
আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন চ্যাট.