empty
 
 
26.06.2025 08:16 AM
EUR/USD পেয়ারের পর্যালোচনা – ২৬ জুন: জেরোম পাওয়েল নতুন কিছুই বলেননি

This image is no longer relevant

বুধবারজুড়ে EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের পুরোপুরি শান্ত মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে। মনে করিয়ে দিই, এই সপ্তাহটি একপ্রকার ঝড় দিয়ে শুরু হয়েছিল, যার উৎস—অবশ্যই—ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি প্রথমে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন এবং তারপর তাদের "আলাদা" করার চেষ্টা করে পুরো দিন কাটান। তবে দিনের শেষে এক ধরনের ভঙ্গুর শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই শান্তি কত দিন স্থায়ী হবে, তা এখনও অনিশ্চিত। তবে সেটি আদৌ গুরুত্বপূর্ণ কি না, সেটাই বড় প্রশ্ন—বিশেষত মার্কিন ডলারের জন্য, যা গত পাঁচ মাস ধরে টানা দরপতনের শিকার হচ্ছে, এমনকি বিরল ইতিবাচক ইঙ্গিতগুলোকেও উপেক্ষা করে।

ঐতিহাসিকভাবে, মূলত মুদ্রানীতিই যেকোনো মুদ্রার বিনিময় হারে সবচেয়ে প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করে। কিন্তু 2025 সালে এসে এই ধারা আর কার্যকর হচ্ছে না। আবারও মনে করিয়ে দিই, এ বছর এখন পর্যন্ত ফেডারেল রিজার্ভ একবারও মূল সুদের হার কমায়নি—যেখানে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ইসিবি) ইতিমধ্যেই চারবার সুদের হার কমিয়েছে এবং ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড দুইবার কমিয়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে ব্রিটিশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন হয়তো সুদের হার হ্রাসে বিরতি নিতে পারে, এবং ইউরোজোনে মূল্যস্ফীতি যথেষ্ট কমে যাওয়ায় ইসিবির আর মুদ্রানীতি নমনীয় করার প্রয়োজন নেই। কিন্তু এটাই বর্তমান পরিস্থিতি। গত পাঁচ মাসে কী হয়েছে?

এ কথা বলা যেতে পারে যে ট্রাম্প প্রায় অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন। তিনি ডলারের জন্য যেকোনো ধরনের ইতিবাচক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ছাড়াই অল্প সময়ে 15 সেন্ট পর্যন্ত দরপতন ঘটিয়েছেন। হতে পারে ভবিষ্যতে "কালো তালিকায়" থাকা সব দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। হতে পারে বছরের শেষে মার্কিন অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু আমাদের বিশ্লেষণ বর্তমান সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচকের ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে, যেখানে মার্কিন অর্থনীতির জন্য আশাব্যঞ্জক কিছু নেই।

নতুন শুল্ক ও বাণিজ্য নীতির প্রেক্ষিতে ফেড সুদের হার কমাতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে, ফলে ট্রাম্প ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট অর্থনৈতিক মন্দা বা যেকোনো সম্ভাব্য সমস্যার জন্য ফেডের ওপর দায় চাপাতে চাইছেন। তার যুক্তি হচ্ছে: "যদি তারা আমার কথা শুনত, তাহলে কোনো অর্থনৈতিক মন্দা বা মূল্যস্ফীতি থাকত না।" কিন্তু জেরোম পাওয়েলের নেতৃত্বাধীন ফেড কেবল নিজেরাই নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে চায়। যদি মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক বহু বছর ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে, আর তারপর ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে ফেডের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনকে প্রতিহত করতে শুরু করেন, তাহলে পাওয়েল ও তার সহকর্মীদের কেন এই সমস্যা সমাধানের দায় নিতে হবে?

যদি ফেড আবার মুদ্রানীতি নমনীয় করে, তাহলে মূল্যস্ফীতি আরও সহজেই বাড়তে পারবে। ট্রাম্প যখন সারা বিশ্বের প্রায় সব দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করেন, তখন প্রথম তিন মাসে মার্কিন ভোক্তা মূল্য সূচকের তেমন উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি দেখা যায়নি। তবে ধরে নেওয়া যায় যে ফেডে কাজ করা অর্থনীতিবিদরা পেশাদার, এবং তারা তাদের বেতনের যথাযথ মূল্য দিচ্ছেন। বাস্তবে, তারা এই গ্রীষ্মে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিচ্ছেন। এজন্যই পাওয়েল সুদের হার কমানোর কোনো পরিকল্পনা করছেন না—যদিও এটি তার একক সিদ্ধান্ত নয়, যেমন ট্রাম্প ভুলেই গেছেন যে কংগ্রেস নামে কিছু একটা আছে। মঙ্গলবার এবং বুধবার পাওয়েল সরাসরি কংগ্রেসে ভাষণ দিয়েছেন। আমরা নতুন কিছু শুনিনি, এবং মার্কেটের ট্রেডারদের প্রতিক্রিয়া জানানোর মতো কিছু ছিল না। ইউরোর মূল্য আবারও তার তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লেভেলে পৌঁছেছে, কিন্তু টেকনিক্যাল চিত্র দেখে মনে হচ্ছে না যে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা সমাপ্তির পথে রয়েছে।

This image is no longer relevant

২৬ জুন পর্যন্ত গত পাঁচ দিনের ট্রেডিংয়ের EUR/USD পেয়ারের মূল্যের গড় অস্থিরতার মাত্রা ছিল 71 পিপস, যা "মাঝারি" হিসেবে বিবেচনা করা যায়। আমরা আশা করছি যে বৃহস্পতিবার এই পেয়ারের মূল্য 1.1564 এবং 1.1706 লেভেলের মধ্যে থাকবে। লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেল ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে, যা নির্দেশ করে যে এখনো বুলিশ প্রবণতা বিরাজ করছে। CCI সূচকটি ওভারবট জোনে প্রবেশ করেছে, যার ফলে আবারও শুধুমাত্র একটি সামান্য নিম্নমুখী কারেকশন দেখা গেছে।

নিকটতম সাপোর্ট লেভেল:

S1 – 1.1597

S2 – 1.1475

S3 – 1.1353

নিকটতম রেজিস্ট্যান্স লেভেল:

R1 – 1.1719

R2 – 1.1841

R3 – 1.1963

ট্রেডিংয়ের পরামর্শ:

EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে—যার মূল চালক হচ্ছে ট্রাম্পের দেশীয় ও বৈদেশিক নীতি, যা মার্কিন ডলারের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। এর পাশাপাশি মার্কেটের ট্রেডাররা প্রায়ই অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফলগুলো ডলারের ক্ষেত্রে নেতিবাচকভাবে ব্যাখ্যা করছে বা একেবারে উপেক্ষা করছে। আমরা এখনো যেকোনো পরিস্থিতিতেই মার্কেটের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ডলার কেনার প্রতি সম্পূর্ণ অনীহা লক্ষ্য করছি।

যদি এই পেয়ারের মূল্য মুভিং অ্যাভারেজের নিচে থাকে, তাহলে 1.1475 এবং 1.1353-এর লক্ষ্যমাত্রায় শর্ট পজিশন প্রাসঙ্গিক থাকবে, যদিও বর্তমান পরিস্থিতিতে বড় ধরনের নিম্নমুখী মুভমেন্টের সম্ভাবনা কম। যদি এই পেয়ারের মূল্য মুভিং অ্যাভারেজের ওপরে থাকে, তাহলে চলমান প্রবণতার ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে 1.1706 এবং 1.1719-এর লক্ষ্যমাত্রায় লং পজিশন বিবেচনা করা যেতে পারে।

চিত্রের ব্যাখা:

লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেল বর্তমান প্রবণতা নির্ধারণে সহায়তা করে। যদি উভয় চ্যানেল একসঙ্গে থাকে, তাহলে এটি শক্তিশালী প্রবণতা নির্দেশ করে।

মুভিং এভারেজ লাইন (সেটিংস: 20,0, স্মুথেদ) স্বল্পমেয়াদি প্রবণতা নির্ধারণ করে এবং ট্রেডিংয়ের দিকনির্দেশনা নির্দেশ করে।

মারে লেভেল মুভমেন্ট ও কারেকশনের লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে।

ভোলাট্যালিটি লেভেল (লাল লাইন) বর্তমান অস্থিরতার মাত্রা অনুসারে আগামী 24 ঘণ্টার জন্য পেয়ারটির মূল্যের সম্ভাব্য রেঞ্জ নির্দেশ করে।

CCI ইনডিকেটর: যদি এটি ওভারসোল্ড জোনে (–250-এর নিচে) বা ওভারবট জোনে (+250-এর ওপরে) প্রবেশ করে, তাহলে এটি বিপরীত দিক থেকে প্রবণতার বিপরীতমুখী হওয়ার সংকেত দেয়।

Recommended Stories

এখন কথা বলতে পারবেন না?
আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন চ্যাট.