empty
 
 
04.07.2025 09:56 AM
মার্কিন কর্মসংস্থান সংক্রান্ত প্রতিবেদনের শক্তিশালী ফলাফল সকল প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গেছে

মার্কিন ডলার বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ অ্যাসেটের বিপরীতে শক্তিশালী হয়েছে, কারণ জুন মাসের কর্মসংস্থান সংক্রান্ত প্রতিবেদনের মূল পরিসংখ্যানগুলো ফেডারেল রিজার্ভকে এই আস্থা দিয়েছে যে চলতি মাসে সুদের হার কমানোর কোনো প্রয়োজন নেই এবং তারা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এই সিদ্ধান্ত শরৎকাল পর্যন্ত স্থগিত রাখতে পারে।

This image is no longer relevant

ব্যুরো অফ লেবার স্ট্যাটিস্টিক্সের তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে মার্কিন নিয়োগকারীরা 147,000টি নতুন কর্মী নিয়োগ দিয়েছে, যা পূর্বাভাসকে ছাড়িয়ে গেছে, এবং বেকারত্বের হার কমে 4.1%-এ দাঁড়িয়েছে। অর্থনীতিবিদদের মধ্যে এই প্রতিবেদন ব্যাখ্যা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন যে স্থিতিশীল শ্রমবাজার শক্তিশালী অর্থনীতির ইঙ্গিত দেয়, যা ফেডকে মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে তার লড়াই চালিয়ে যেতে সাহায্য করবে। অন্যদিকে, অনেকে সতর্ক করে দিচ্ছেন যে আক্রমণাত্নক নীতিকৌশল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে শ্লথ করে ফেলতে পারে এবং সম্ভবত মন্দা সৃষ্টি করতে পারে। প্রতিবেদনে মজুরি বৃদ্ধির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে, যদিও তা আগের মাসগুলোর তুলনায় ধীর গতিতে হয়েছে। এটি ইঙ্গিত দিতে পারে যে শ্রমবাজার-চালিত মজুরির চাপ কমছে, যা মুদ্রাস্ফীতির বোঝা হ্রাসে সহায়ক হতে পারে। তবে, যদি মজুরি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে, তাহলে ব্যবসাগুলো সেই খরচ গ্রাহকদের উপর চাপিয়ে দিতে পারে, যা মুদ্রাস্ফীতিকে দীর্ঘস্থায়ী করতে পারে।

এই চমকপ্রদ ফলাফল বেসরকারি খাতের কর্মসংস্থান এবং শ্রমবাজারের অন্যান্য দুর্বলতা ঢেকে দিয়েছে। RSM US-এর বিশ্লেষকরা বলেছেন, "ফলাফল যতটা ভালো দেখাচ্ছে, বাস্তব পরিস্থিতি ততটা ইতিবাচক নয়।" তারপরও, সামগ্রিকভাবে এই তথ্য ফেডের দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে যে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি দুর্বল হলেও এখনও স্থিতিশীল, এবং বর্তমানে কোনো নীতিগত হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই।

যেমনটি আমি আগেও উল্লেখ করেছিলাম, এই প্রতিবেদন ফেডের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলকে মুদ্রানীতির নমনীয়করণে "অপেক্ষা ও পর্যবেক্ষণ" কৌশল অবলম্বনের সুযোগ দিয়েছে, যা তাদের গ্রীষ্মকালে সুদের হার হ্রাসে বিরতির সুবিধা দিচ্ছে।

এর প্রভাবে, মার্কিন ট্রেজারি বন্ডের দাম কমে গেছে, ডলার শক্তিশালী হয়েছে, এবং সুদের হার সংক্রান্ত পূর্বাভাসগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ট্রেডাররা ফেডের জুলাইয়ের বৈঠকে সুদের হার হ্রাসের আশা ত্যাগ করেছে। 2-বছর মেয়াদী ট্রেজারি নোটের ইয়েল্ড — যা মুদ্রানীতির পরিবর্তনের প্রতি বেশি সংবেদনশীল — প্রায় দুই সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে।

স্মরণ করিয়ে দেওয়া যেতে পারে, ফেডের কর্মকর্তারা এ বছর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল সুদের হার অপরিবর্তিত রেখেছেন, কারণ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি মুদ্রাস্ফীতির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। কর্মকর্তারা শ্রমবাজারের সামগ্রিক স্থিতিশীলতার দিকটিও তুলে ধরেছেন, যা সুদের হার না কমানোর পক্ষে তাদের অবস্থানকে সমর্থন করে।

আটলান্টা ফেডের প্রেসিডেন্ট রাফায়েল বস্টিকও এই মনোভাবের প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। তিনি বলেন, "আমি মনে করি, এত ব্যাপক অনিশ্চয়তায় পরিপূর্ণ একটি সময়ে মুদ্রানীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন উপযুক্ত নয়। এটি আরও বেশি কার্যকর, যেহেতু সামগ্রিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনও স্থিতিশীল রয়েছে এবং আমাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে পর্যাপ্ত সুযোগ দিচ্ছে।"

উল্লেখযোগ্য যে, ফেডের এই "অপেক্ষা ও পর্যবেক্ষণের" কৌশল ট্রাম্প ও তার প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তার সমালোচনার মুখে পড়েছে, যারা মনে করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এখনই সুদের হার কমানো উচিত। তারা উল্লেখ করেছেন যে ট্রাম্পের শুল্কনীতির প্রতিক্রিয়ায় মুদ্রাস্ফীতির হার অনেকটাই নিম্নমুখী থেকে গেছে।

এখন এটা স্পষ্ট যে, ট্রেডাররা তাদের দৃষ্টি জুন মাসের পরবর্তী মুদ্রাস্ফীতির প্রতিবেদনের দিকে সরিয়ে নিচ্ছেন — যা 15 জুলাই প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে।

EUR/USD-এর বর্তমান টেকনিক্যাল চিত্র অনুযায়ী, ক্রেতাদের অবশ্যই এই পেয়ারের মূল্যকে 1.1790 লেভেলের ওপরে নিয়ে যেতে হবে। কেবল তখনই তারা 1.1825 লেভেল টেস্ট করার লক্ষ্যে এগোতে পারবে। আরও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার ক্ষেত্রে 1.1866 পর্যন্ত মুভমেন্টের সম্ভাবনা রয়েছে, তবে বড় ট্রেডারদের সমর্থন না পেলে মূল্যের এই লেভেলে পৌঁছানো কঠিন হবে। চূড়ান্ত লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.1910-এর লেভেল। যদি এই পেয়ারের দরপতন ঘটে, তাহলে আমি কেবল 1.1750 লেভেলের কাছে ক্রেতাদের উল্লেখযোগ্য সক্রিয়তার আশা করছি। যদি সেখানে ক্রেতাদের কোনো আগ্রহ না দেখা যায়, তাহলে 1.1715-এর লেভেলের পুনরায় টেস্ট বা 1.1675 থেকে লং পজিশন বিবেচনা করাই ভাল হবে।

GBP/USD-এর টেকনিক্যাল চিত্রের ক্ষেত্রে, পাউন্ডের ক্রেতাদের অবশ্যই এই পেয়ারের মূল্যের নিকটতম রেজিস্ট্যান্স 1.3675 ব্রেক করতে হবে। কেবল তখনই তারা মূল্যের 1.3705-এর লক্ষ্যমাত্রার দিকে এগোতে পারবে, যার ওপরে মোমেন্টাম ধরে রাখা বেশ কঠিন হয়ে পড়বে।চূড়ান্ত লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.3746 লেভেল। যদি এই পেয়ারের দরপতন হয়, তাহলে বিক্রেতারা 1.3635-এ নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করবে। এই রেঞ্জ ব্রেক করতে পারলে তা ক্রেতাদের জন্য একটি বড় ধাক্কা হবে এবং GBP/USD পেয়ারের মূল্য 1.3600 এবং সম্ভবত 1.3565 পর্যন্ত কমে যাবে।

Recommended Stories

এখন কথা বলতে পারবেন না?
আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন চ্যাট.