আরও দেখুন
মঙ্গলবার দিনব্যাপী GBP/USD পেয়ারের দরপতন অব্যাহত ছিল, যা গত সপ্তাহে শুরু হয়েছে। মনে করিয়ে দেওয়া যাক যে, গত সপ্তাহে মার্কিন ডলারের দর বৃদ্ধির পক্ষে একাধিক কারণ থাকলেও, এটির মূল্য কেবল একদিনই বৃদ্ধি পেয়েছিল—তাও যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত কোনো সামষ্টিক প্রতিবেদনের শক্তিশালী ফলাফলের প্রতিক্রিয়ায় নয়। এই সপ্তাহে যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশেই এখনো পর্যন্ত কোনো গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি, অথচ সামগ্রিক মৌলিক প্রেক্ষাপট এখনো ডলারের বিপক্ষে কাজ করছে। গতকাল খবর এসেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প তার তথাকথিত "কালো তালিকা"ভুক্ত কয়েকটি দেশের ওপর আবারও শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যা বাণিজ্য যুদ্ধের নতুন এক উত্তেজনাপূর্ণ ধাপের সূচনা বলে মনে হচ্ছে।
যেমনটা বারবার উল্লেখ করা হয়েছে, মার্কিন প্রশাসন এখন পর্যন্ত খুব বেশি বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদন করতে পারেনি—এখন পর্যন্ত কেবলমাত্র তিনটি দেশের সাথে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যদিও হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে নিয়মিত ঘোষণা করা হচ্ছে যে আরও অনেক চুক্তি "প্রক্রিয়াধীন" রয়েছে। চীনের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তির বেশিরভাগ অংশ এখনও অপ্রকাশিত, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তিটিকে তিন মাস আগেও নিশ্চিত বলে মনে করা হয়েছিল, আর ভিয়েতনামের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তিটি মার্কেটে বিশেষ কোনো প্রভাব ফেলবে কিনা, সেটিও অনিশ্চিত।
বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরে অগ্রগতির অভাব স্বীকার করে ট্রাম্প আবারও সময় বাড়িয়েছেন—এবার ১ আগস্ট পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে। তবে সেইসাথে তিনি এও ঘোষণা দিয়েছেন যে ১ আগস্ট থেকে নতুন করে শুল্ক বাড়ানো হবে। মূলত বার্তাটি এমন: "যদি ১ আগস্টের মধ্যে আমাদের জন্য গ্রহণযোগ্য কোনো প্রস্তাব না আসে, তাহলে শুল্কের পরিমাণ আরও বাড়বে।" ফলে ৩১ জুলাই যদি ট্রাম্প আবারও শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়ে তা কার্যকর করার সময় আরও কয়েক সপ্তাহ পিছিয়ে দেন, তাতেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
গতকাল 5-মিনিট টাইমফ্রেমে বেশ কিছু ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। প্রথমে এই পেয়ারের মূল্য 1.3615-এর লেভেল ব্রেক করে নিম্নমুখী হয়, তারপর সেনকৌ স্প্যান B লাইনের নিচে চলে যায়, এবং শেষে 1.3537 লেভেল থেকে দুইবার বাউন্স করে। ট্রেডাররা 1.3615 লেভেলের কাছাকাছি শর্ট পজিশন ওপেন করে 1.3537 থেকে মূল্যের বাউন্সের পরে তা ক্লোজ করতে পারতেন। লং ট্রেডের সুযোগও ছিল, কারণ দিনের শেষে পাউন্ডের মূল্য আবারও সেনকৌ স্প্যান B লাইনের কাছাকাছি ফিরে আসে।
ব্রিটিশ পাউন্ডের সর্বশেষ COT রিপোর্ট অনুযায়ী, কমার্শিয়াল ট্রেডারদের মনোভাব গত কয়েক বছরে বারবার পরিবর্তিত হয়েছে। কমার্শিয়াল এবং নন-কমার্শিয়াল ট্রেডারদের নেট পজিশন নির্দেশকারী লাল এবং নীল লাইনগুলো প্রায়শই একে অপরকে অতিক্রম করছে এবং সাধারণত শূন্য স্তরের কাছাকাছি রয়েছে। বর্তমানে এই লাইনগুলো আবারও কাছাকাছি অবস্থান করছে, যা লং এবং শর্ট পজিশনের সংখ্যা প্রায় সমান হওয়ার ইঙ্গিত দেয়। তবে গত 18 মাসে সামগ্রিকভাবে নেট পজিশনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সাম্প্রতিক মাসগুলোতেও এই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের গৃহীত নীতিমালার কারণে ডলার অব্যাহতভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে, তাই পাউন্ডের প্রতি মার্কেট মেকারদের চাহিদার বিষয়টি বর্তমানে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। যেভাবেই হোক, বাণিজ্য যুদ্ধ আরও দীর্ঘ সময় ধরে চলবে বলে মনে হচ্ছে। সেই অনুযায়ী, ডলারের চাহিদা দুর্বল থাকাটাই স্বাভাবিক। সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, "নন-কমার্শিয়াল" গ্রুপ 7,300টি লং এবং 10,300টি শর্ট পজিশন ওপেন করেছে। সুতরাং, সপ্তাহজুড়ে নেট পজিশনের সংখ্যা 3,000 কমেছে, যা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ নয়।
2025 সালে, পাউন্ড উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী হয়েছে, তবে এর কারণ হচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি। এই প্রভাব একবার শেষ হলে, ডলার আবারও শক্তিশালী হতে পারে, তবে তা কখন হবে কেউ জানে না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প কেবল দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন, এবং আগামী চার বছরে আরও অনেক অস্থিরতা দেখা যেতে পারে।
GBP/USD 1H চার্টের পেয়ারের বিশ্লেষণ
ঘণ্টাভিত্তিক চার্টে এখনো GBP/USD পেয়ারের দরপতনের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে, যা একটি টেকনিক্যাল কারেকশন হিসেবেও দেখা যেতে পারে। গত সপ্তাহে মার্কেটের ট্রেডাররা যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত সকল সামষ্টিক প্রতিবেদনের ইতিবাচক ফলাফল উপেক্ষা করেছিল এবং কেবলমাত্র ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বিতর্ক চলাকালীন সময়ে চ্যান্সেলর র্যাচেল রিভসের কান্নায় ভেঙে পড়ার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল। সেনকৌ স্প্যান বি লাইন এই পেয়ারের দরপতন থামাতে ব্যর্থ হয়েছে, তাই স্বল্পমেয়াদে ডলার আরও শক্তিশালী হতে পারে।
9 জুলায়ে গুরুত্বপূর্ণ ট্রেডিং লেভেলসমূহ:
সাপোর্ট/রেজিস্ট্যান্স লেভেল: 1.3212, 1.3288, 1.3358, 1.3439, 1.3489, 1.3537, 1.3615, 1.3741–1.3763, 1.3833, 1.3886
সেনকৌ স্প্যান B লাইন: 1.3578
কিজুন-সেন লাইন: 1.3628
নোট: ইচিমোকু সূচকের লাইনগুলো দিনের বেলা অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে, যা ট্রেডিং সিগন্যাল নির্ধারণের সময় বিবেচনায় নেওয়া উচিত। এই পেয়ারের মূল্য সঠিক দিকে 20 পয়েন্ট অগ্রসর হলে ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে, যেন ভুল সিগন্যাল থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়।
বুধবার যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো বড় ধরনের ইভেন্ট নির্ধারিত নেই। তবে এই সপ্তাহে প্রতিকূল মৌলিক প্রেক্ষাপট উপেক্ষা করেই ডলার ধারাবাহিকভাবে শক্তিশালী হচ্ছে। এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা গঠিত হয়েছে। এই প্রবণতা বিপরীতমুখী না হলে নতুন বাই পজিশন ওপেন করা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
চার্টের উপাদানগুলোর ব্যাখ্যা: