আরও দেখুন
গতকাল, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন যে তিনি শিগগিরই ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য ও সেমিকন্ডাক্টরের ওপর শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছেন—যা মার্কিন স্টক মার্কেটে দরপতন ঘটিয়েছে, আর মার্কিন ডলার আরও শক্তিশালী হয়েছে।
মঙ্গলবার পিটসবার্গে এআই সম্মেলনে যোগ দিয়ে ওয়াশিংটনে ফেরার পথে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, "সম্ভবত, আমরা চলতি মাসের শেষে স্বল্প হারে শুল্ক আরোপ দিয়ে শুরু করব এবং ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোকে মানিয়ে নেওয়ার জন্য এক বছরের মতো সময় দেব, এরপর শুল্ক অনেক বেশি হবে।" তিনি আরও জানান, সেমিকন্ডাক্টরের ক্ষেত্রেও সময়সূচি "প্রায় একই রকম" হবে এবং চিপের উপর শুল্ক আরোপ প্রক্রিয়া "সহজতর" করা হবে, যদিও এ নিয়ে তিনি অতিরিক্ত কোনো তথ্য দেননি।
চলতি মাসের শুরুতে এক মন্ত্রিসভা বৈঠকে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি আসন্ন কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তামার ওপর 50% শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছেন এবং ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যে শুল্ক 200% পর্যন্ত বাড়ানোর চিন্তা করছেন, যেহেতু কোম্পানিগুলোকে উৎপাদন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনতে এক বছর সময় দেওয়া হয়েছে। ট্রাম্প ইতোমধ্যেই 1962 সালের ট্রেড এক্সপ্যানশন অ্যাক্টের সেকশন 232-এর আওতায় ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের আমদানি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে তদন্তের ঘোষণা দিয়েছেন।
তবে বিশ্লেষকরা সতর্ক করছেন, এ ধরনের মাত্রায় শুল্ক আরোপ করা হলে এলি লিলি অ্যান্ড কো, মার্ক অ্যান্ড কো, ও ফাইজার ইনকর্পোরেটেডের মতো ওষুধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর তাৎক্ষণিক প্রভাব ফেলতে পারে, যাদের উৎপাদন কার্যক্রম বিদেশে — ফলে আমেরিকান ভোক্তাদের ওষুধের দাম বেড়ে যেতে পারে। ট্রাম্প প্রস্তাবিত সেমিকন্ডাক্টর পণ্যে শুল্কের ক্ষেত্রেও একই ঝুঁকি বিদ্যমান রয়েছে, যা কেবল চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানই নয়, অ্যাপল ইনকর্পোরেটেডের মতো স্যামসাং ইলেকট্রনিক্স কো.-এর মতো জনপ্রিয় ল্যাপটপ ও স্মার্টফোন নির্মাতাদেরও প্রভাবিত করতে পারে।
পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে, যদি শুল্ক আরোপ করা হয়, তাহলে বিদেশে উৎপাদন—যা এতদিন উৎপাদন খরচ কমাতে সাহায্য করেছে—ততটা কার্যকর থাকবে না, যার প্রভাব পড়বে মূল্য নির্ধারণ কৌশল ও মার্কিন ভোক্তাদের ওষুধের ক্রয়ক্ষমতার ওপর। কোম্পানিগুলো বাড়তি খরচ নিজেরা বহন করবে নাকি তা সরাসরি গ্রাহকের ওপর চাপিয়ে দেবে—তা এখনো স্পষ্ট নয়। মার্কিন মূল্যস্ফীতির সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানিগুলো ইতিমধ্যে তাদের কিছু বাড়তি খরচ ভোক্তাদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে। প্রশ্ন হলো, এই প্রবণতা কতদূর গড়াবে।
সেমিকন্ডাক্টর খাতেও একই পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে। ট্রাম্পের শুল্ক পরিকল্পনা কেবল চিপ নির্মাতাদেরই নয়, বরং প্রতিদিনের জীবনে ইলেকট্রনিকস ব্যবহার করা ভোক্তাদেরও প্রভাবিত করতে পারে। অ্যাপল ও স্যামসাংয়ের ল্যাপটপ ও স্মার্টফোনের দাম বাড়লে, চাহিদা কমে যেতে পারে এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর বৈশ্বিক প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে।
গতকাল ট্রাম্প আরও ঘোষণা করেন যে, তিনি ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে এক চুক্তিতে পৌঁছেছেন যাতে পূর্ব ঘোষিত 32% শুল্ক কমিয়ে 19%-এ আনা হবে। চুক্তির অংশ হিসেবে ইন্দোনেশিয়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে $15 বিলিয়ন মূল্যের জ্বালানি পণ্য, $4.5 বিলিয়ন মূল্যের কৃষিপণ্য এবং 50টি বোয়িং কো. বিমানের অর্ডার দিতে সম্মত হয়েছে।
ট্রাম্প আরও বলেন, তিনি শুল্ক আরোপ কার্যকর হওয়ার আগেই—যা ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়ার কথা—"দুই বা তিনটি" দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করতে পারেন এবং ভারতের সঙ্গে চুক্তিকে সবচেয়ে সম্ভাব্য বলে উল্লেখ করেন।
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তারা—যাদের ওপর সম্ভাব্য 30% শুল্ক আরোপ হতে পারে—এই সপ্তাহেই মার্কিন আলোচকদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন।
EUR/USD পেয়ারের বর্তমান টেকনিক্যাল দৃশ্যপট অনুযায়ী, ক্রেতাদের এখন এই পেয়ারের মূল্যের 1.1625 লেভেল ব্রেক করাতে হবে। কেবল তখনই 1.1660-এর লেভেল টেস্টের সম্ভাবনা তৈরি হবে। সেখান থেকে 1.1690-এর দিকে একটি মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে, যদিও বড় বিনিয়োগকারীদের শক্তিশালী সহায়তা ছাড়া এই মুভমেন্ট হওয়া বেশ কঠিন হবে। সর্বোচ্চ লক্ষ্যমাত্রা থাকবে 1.1720 লেভেল। যদি এই পেয়ারের মূল্য কমে যা, তাহলে মূল্য 1.1590 লেভেলে থাকা অবস্থায় ক্রেতাদের সক্রিয়তা আশা করা যায়। সেখানে ক্রয়ের আগ্রহ না দেখা গেলে, 1.1550-এর লেভেল টেস্ট হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা বা 1.1495 লেভেল থেকে লং পজিশনে এন্ট্রি করা উচিত হবে।
GBP/USD-এর ক্ষেত্রে, পাউন্ডের ক্রেতাদের প্রথমেই 1.3420-এর রেজিস্ট্যান্স ব্রেক করতে হবে। কেবল তখনই তারা মূল্যকে 1.3464-এর দিকে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে পারবে, যেটি অতিক্রম করা বেশ কঠিন হবে। সর্বোচ্চ লক্ষ্যমাত্রা থাকবে 1.3500 লেভেল। যদি এই পেয়ারের দরপতন ঘটে, তাহলে বিক্রেতারা এই পেয়ারের মূল্যকে 1.3375 লেভেলে পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করবে। তারা সফল হলে, এই রেঞ্জ ব্রেক করে মূল্য নিচে নেমে গেলে সেটি ক্রেতাদের জন্য তা বড় একটি আঘাত হবে এবং GBP/USD পেয়ারের মূল্য 1.3335 পর্যন্ত নেমে যেতে পারে , এবং এমনকি মূল্য 1.3290-এও পৌঁছাতে পারে।