আরও দেখুন
ডোনাল্ড ট্রাম্প হঠাৎ ঘোষণা দিয়েছে যে—মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাপানের সঙ্গে একটি "বৃহৎ চুক্তি" স্বাক্ষর করেছে— যা বিনিয়োগকারীদের মাঝে স্বস্তি নিয়ে এসেছে, কোম্পানিগুলোর স্টকের চাহিদা বেড়েছে এবং সামগ্রিকভাবে মার্কেটে চাপ হ্রাস পেয়েছে।
মঙ্গলবার, মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে উচ্ছ্বসিতভাবে ঘোষণা দেন যে, যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপানের মধ্যে "সম্ভবত ইতিহাসের সবচেয়ে বড় চুক্তি" স্বাক্ষরিত হয়েছে। নতুন এই বাণিজ্য চুক্তির আওতায় জাপান থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর 15% শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। ট্রাম্প আরও জানান যে, জাপান মার্কিন অর্থনীতিতে 550 বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে এবং গুরুত্বপূর্ণ আমেরিকান পণ্যের জন্য নিজের বাজার উন্মুক্ত করবে। ট্রেজারি সেক্রেটারি এস. বেসেন্ট এই ঘোষণার প্রেক্ষিতে সতর্ক আশাবাদ প্রকাশ করেন এবং ইঙ্গিত দেন যে চীনের সঙ্গে বর্তমানে কার্যকর শুল্ক বিরতি ১২ আগস্টের পরও বর্ধিত হতে পারে।
আসলে, এটি ট্রাম্পের প্রথম ব্যক্তিগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে তাঁর চাপ প্রয়োগের কৌশল কার্যকর হচ্ছে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি, কারণ এটি চীন ও ভারতের মতো বৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তিগুলোর সঙ্গে চুক্তির সম্ভাবনা কমে যাওয়ার ফলে তৈরি নেতিবাচক মনোভাবকে আংশিক প্রশমিত করেছে—যেখানে এসব দেশ ট্রাম্পের হুমকি সত্ত্বেও প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।
জাপান কেন যুক্তরাষ্ট্রের চাপে নতি স্বীকার করলো?
চীন বা ভারতের তুলনায়, জাপান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে কার্যত যুক্তরাষ্ট্রের একটি নির্ভরশীল রাষ্ট্র, ফলে প্রতিকূল বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর কেবল সময়ের ব্যাপার ছিল। বর্তমানে প্রতিরোধের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও কানাডা, মেক্সিকো এবং শেষ পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রাথমিক প্রতিরোধের পর, ওয়াশিংটনের অধীনস্থ সব রাষ্ট্রই শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পের কাছে নতি স্বীকার করবে এবং নিজেদের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর চুক্তি স্বাক্ষর করবে, যা কার্যত মার্কিন আধিপত্যের প্রতি আনুগত্যের খরচ হিসেবে পরিশোধ করতে হবে।
জাপান থেকে আসা এই খবর মার্কেটকে কীভাবে প্রভাবিত করবে?
এরই মধ্যে এশিয়ার স্টক মার্কেটে ইতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে এবং এটি ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের স্টক ফিউচারকেও ত্বরান্বিত করছে। পূর্বে উল্লেখিত খবরের ফলে মার্কেটের বিনিয়োগকারীদের মনে আশার সঞ্চার হয়েছে যে, অদূর ভবিষ্যতেই এই শুল্ক নাটকের শেষ হতে পারে। যদিও চীন, ভারত এবং সম্ভবত অন্যান্য দেশের ওপর চাপ অব্যাহত থাকবে, বর্তমান বিজয়োল্লাসের ঢেউ হয়তো সেই নেতিবাচক দিকগুলোকে আড়াল করে ফেলবে।
আজকের মার্কেটে কী প্রত্যাশা করা যায়?
স্টক মার্কেটে সবচেয়ে বেশি চাহিদা বজায় থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা কমে যাওয়ার কারণে মার্কিন ডলারের দর কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে, যা পূর্বে ট্রাম্পের অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক উদ্যোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ফেডের পরবর্তী সুদের হার কমানোর সময়সূচি নিয়ে অনিশ্চয়তা এখনো ডলারের জন্য প্রধান সহায়ক শক্তি। এই প্রেক্ষাপটে, ডলার সূচক 98.00 লেভেলের দিকে এগিয়ে যেতে পারে।
দৈনিক পূর্বাভাস:
ইথেরিয়াম
মার্কিন-জাপান শুল্ক চুক্তির প্রেক্ষিতে ফরেক্স মার্কেটে ডলারের সম্ভাব্য দর বৃদ্ধি এবং মার্কেটে উত্তেজনা প্রশমিত হওয়ার কারণে, স্থানীয় পর্যায়ে ইথেরিয়ামের মূল্যের রিভার্সালের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে, ইথেরিয়ামের মূল্য 3,639.65 সাপোর্ট লেভেলের নিচে নেমে 3,462.65 পর্যন্ত কারেকশন করতে পারে। সম্ভাব্য সেল এন্ট্রি হিসেবে 3,610.17-এর লেভেল বিবেচনা করা যেতে পারে।
লাইটকয়েন
মার্কিন-জাপান বাণিজ্য চুক্তির কারণে উত্তেজনা প্রশমিতকরণ এবং ডলারের দর বৃদ্ধির সম্ভাবনা ফলে স্থানীয় পর্যায়ে লাইটকয়েনের মূল্যের রিভার্সাল ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে, এটির মূল্য 113.45 সাপোর্ট লেভেল ব্রেক করে নিচের দিকে 99.40 পর্যন্ত কারেকশন করতে পারে। সম্ভাব্য সেল এন্ট্রি হিসেবে 111.88-এর লেভেল বিবেচনা করা যেতে পারে।