আরও দেখুন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক উভয় নীতিতেই পুরোপুরি আক্রমণাত্মক কৌশল গ্রহণ করছেন। যদিও বাণিজ্য অংশীদারদের প্রতি তার অবস্থান এখন অনেকটাই স্পষ্ট, ফেডারেল রিজার্ভকে কেন্দ্র করে সংকটের যে উত্তেজনা, তা যেন আরও বাড়ছে।
ট্রাম্প কেন ফেডের চেয়ারম্যানকে টার্গেট করছেন?
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বহুবার জেরোম পাওয়েলকে সুদের হার কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন, যুক্তি দিয়েছেন যে জাতীয় অর্থনীতি এবং প্রকৃত উৎপাদন খাতের প্রবৃদ্ধিকে উত্সাহিত করার জন্য এটি প্রয়োজন। তবে পাওয়েল মুদ্রাস্ফীতিকে 2%-এ রাখার নিয়ম মেনে চলছেন (যা বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে মোটামুটি কাকতালীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল) এবং যুক্তি দিচ্ছেন যে বর্তমানে মূল্যস্ফীতির মাত্রা ও বাণিজ্যযুদ্ধের পরিণতি ঘিরে সৃষ্ট অনিশ্চয়তা এই মুহূর্তে সুদের হার কমানোকে অযৌক্তিক করে তুলেছে।
ফলে এক ধরনের সংঘাতময় অবস্থা তৈরি হয়েছে। এর আগেই ট্রাম্প কংগ্রেসের অনুমোদন নিয়ে জাতীয় উৎপাদন খাতে উদ্দীপনা সৃষ্টির জন্য ঋণের সীমা বাড়িয়েছেন। এখন তিনি সুদের হার কমিয়ে ঋণের খরচও কমাতে চান। এই প্রেক্ষাপটে ফেড ও এর চেয়ারম্যানের প্রতি প্রেসিডেন্টের হঠাৎ সমালোচনা অনেকটাই কৌশলগত বলে মনে হচ্ছে।
যদি পাওয়েল আরও নমনীয় হতেন, তাহলে ট্রাম্প সম্ভবত ফেড ভবনের 3.1 বিলিয়ন ডলারের সংস্কার প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন তুলতেন না। এখন এই "অযৌক্তিক খরচ" প্রেসিডেন্টের জন্য চাপ সৃষ্টির আদর্শ অজুহাতে পরিণত হয়েছে। মূলত ট্রাম্প তার প্রিয় পদ্ধতিগুলোর একটি—চাপ প্রয়োগ ও ব্ল্যাকমেইল—বহাল রেখেছেন, যার মাধ্যমে তিনি ব্যক্তিগত লক্ষ্য পূরণ করতে চান।
তিনি কি শেষ পর্যন্ত সুদের হার কমাতে বাধ্য করতে পারবেন?
ট্রাম্পের স্বভাব ও দৃঢ় মনোভাব বিবেচনায়, আপোষমূলক পরিস্থিতির সম্ভাবনা অস্বীকার করা যায় না। সুদের হার কমবে—হয়তো ঠিক আগামী সপ্তাহে নয়, তবে আগস্ট বা সেপ্টেম্বরেই তার অনেকটাই সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে বার্ষিক মূল্যস্ফীতি 2.7% হলেও এটি সম্ভবত আর বাধা হয়ে দাঁড়াবে না।
ফেডের ওপর ট্রাম্পের জয় মার্কেটকে কীভাবে প্রভাবিত করবে?
প্রধান সুবিধাভোগী হতে পারে মার্কিন স্টক মার্কেট, যেখানে ইতোমধ্যেই নিরাপদ বিনিয়োগ খুঁজতে থাকা বৈদেশিক মূলধনের কারণে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে। ঋণের খরচ কমলে এই প্রবণতা আরও প্রসারিত হবে এবং শেয়ারমূল্য নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে।
অন্যদিকে, সুদের হার কমানোর প্রত্যাশা বাড়তে থাকলে ডলারের এক্সচেঞ্জ রেট চাপের মুখে পড়বে, যা ট্রাম্পের দেশপ্রেমমূলক ভাষার বিপরীত হলেও, মার্কিন উৎপাদকদের জন্য সহায়ক হবে। দুর্বল ডলার তাদের বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে রাখবে এবং উচ্চ শ্রম ব্যয়ের ভারসাম্য রক্ষা করবে।
আজ মার্কেট থেকে কী প্রত্যাশা করা যায়?
আমি মনে করি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে একটি সম্ভাব্য শুল্ক চুক্তির প্রত্যাশা মার্কিন ইকুইটির প্রতি চাহিদা বাড়াবে। স্টক মার্কেট সূচকের ফিউচার ইতোমধ্যেই এই প্রত্যাশায় দৃঢ়ভাবে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় রয়েছে।
এই পরিস্থিতি ক্রিপ্টোকারেন্সি মার্কেটে চাপ সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে ডলারের বিপরীতে টোকেনের মূল্য আরও কমতে পারে। অপরদিকে, তেলের বাজারে ইতিবাচক পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে, কারণ একটি বড় অনিশ্চয়তা হয়তো অচিরেই দূর হতে চলেছে।
দৈনিক পূর্বাভাস:
বিটকয়েন
মার্কিন স্টকের প্রতি চাহিদা বাড়ায় টোকেনটি ব্যাপক চাপের মধ্যে রয়েছে। এটির মূল্য 115,700.75-এর নিচে নেমে গেছে, যা নিম্নমুখী প্রবণতাকে আরও শক্তিশালী করেছে এবং এটির মূল্য 111,600.00 পর্যন্ত নামতে পারে। বিটকয়েন বিক্রির জন্য সম্ভাব্য লেভেল: 115,015.00।
#NDX
নাসডাক 100 ফিউচার কনট্রাক্টের CFD বর্তমানে 23,279.00 রেজিস্ট্যান্স লেভেলের নিচে ট্রেড করছে। এই লেভেল ব্রেক করা হলে পরবর্তী ঊর্ধ্বমুখী মোমেন্টামের প্রভাবে সূচকটি 23,418.00 পর্যন্ত যেতে পারে। ক্রয়ের জন্য সম্ভাব্য লেভেল: 23,294.50।