আরও দেখুন
ক্রিপ্টোকারেন্সি মার্কেটে কারেকশন দেখা গেলেও সবসময়ই কিছু বিনিয়োগকারী থাকেন যারা এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে ডিসকাউন্ট মূল্যে অ্যাসেট ক্রয় করেন।
বিশ্লেষক সংস্থাগুলোর তথ্যমতে, অনেক কোম্পানি তাদের ব্যালান্স শিটে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিটকয়েন জমা করছে। উদাহরণস্বরূপ, গতকাল মেটাপ্লানেট তাদের পোর্টফোলিওতে 780 বিটকয়েন যুক্ত করেছে, যার মোট মূল্য এখন $2 বিলিয়ন। শার্পলিংক গেমিং ইথেরিয়ামে $295 মিলিয়নের সমপরিমাণ বিনিয়োগ করেছে, BTCS $55 মিলিয়ন মূল্যের ইথেরিয়াম যোগ করেছে, এবং ম্যারাথন $950 মিলিয়ন মূল্যের বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে বিটকয়েন কেনার তহবিল সংগ্রহ করেছে।
এই প্রবণতা থেকে এটি স্পষ্ট যে ক্রিপ্টোকারেন্সিকে একটি অ্যাসেট ক্লাস হিসেবে দীর্ঘমেয়াদে মূল্যবান বলে বিবেচনা করার প্রবণতা বাড়ছে। কোম্পানিগুলো এখন বিটকয়েন ও ইথেরিয়ামকে কেবলমাত্র অনুমানভিত্তিক বিনিয়োগ নয়, বরং মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে সুরক্ষা, পোর্টফোলিও বৈচিত্র্যকরণের হাতিয়ার এবং ব্যালান্স শিট পরিবর্তনের মাধ্যম হিসেবেও দেখছে।
এখানে বিভিন্ন কোম্পানির ভিন্ন ভিন্ন কৌশল লক্ষ্য করা যায়। মেটাপ্লানেটের মতো কিছু প্রতিষ্ঠান কেবল বিটকয়েনের দিকে দৃষ্টি দিচ্ছে — সম্ভবত তারা এটিকে সবচেয়ে প্রতিষ্ঠিত ও নির্ভরযোগ্য ক্রিপ্টো অ্যাসেট হিসেবে দেখছে। অন্যদিকে, শার্পলিংক গেমিং ও BTCS ইথেরিয়াম যুক্ত করে তাদের পোর্টফোলিও বৈচিত্র্যময় করছে, যা বিকেন্দ্রীকৃত অ্যাপ্লিকেশন ও স্মার্ট কন্ট্রাক্টের সম্ভাবনার প্রতি তাদের আস্থার প্রতিফলন ঘটায়।
ম্যারাথনের বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ ইঙ্গিত দেয় যে কোম্পানিগুলো তাদের ক্রিপ্টো বিনিয়োগ নিয়ে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে। এটি দেখায় যে, তারা ঐতিহ্যগত ফিন্যান্সিয়াল ইন্সট্রুমেন্ট ব্যবহার করে ডিজিটাল কারেন্সির হোল্ডিং বাড়াতে প্রস্তুত।
সার্বিকভাবে, বর্তমানে যে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে তা হলো — ক্রিপ্টোকারেন্সি ধীরে ধীরে কর্পোরেট আর্থিক কৌশলের সঙ্গে একীভূত হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে ডিজিটাল অ্যাসেটের বিকাশ ও গ্রহণযোগ্যতায় উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে।
তবে, বিটকয়েন হোল্ডিংয়ে শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলোর একটি — স্ট্র্যাটেজির ব্যালান্স শিটে সম্প্রতি কোনো নতুন ক্রয় লক্ষ্য করা যায়নি। তাদের মোট হোল্ডিং এখনো 607,770 বিটকয়েনে অপরিবর্তিত রয়েছে। এই তথ্যটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ এবং কোম্পানিটির বর্তমান কৌশল নিয়ে প্রশ্ন তোলে। বর্তমান বাজারমূল্য হয়ত তাদের নতুন এন্ট্রি থেকে বিরত রেখেছে, কারণ তারা আরও অনুকূল এন্ট্রি মূল্যের জন্য অপেক্ষা করছে। বিকল্পভাবে, তারা হয়ত তাদের বিনিয়োগ কৌশল পুনর্মূল্যায়ন করছে এবং সম্ভাব্য ঝুঁকি ও সুযোগ পর্যালোচনা করছে — যদিও এটির কম সম্ভাবনা রয়েছে।
আরেকটি সম্ভাবনা হলো কোম্পানিটি বর্তমানে বিদ্যমান অ্যাসেট সংহতকরণ, সঞ্চয় কাজে লাগানো এবং বিটকয়েন রিজার্ভের নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় মনোযোগ দিচ্ছে। এত বড় ভলিউমের ক্রিপ্টোকারেন্সি পরিচালনার জন্য একটি সমন্বিত পদ্ধতি প্রয়োজন হয় — যার মধ্যে সুরক্ষিত স্টোরেজ ব্যবস্থা, ঝুঁকি পর্যবেক্ষণ এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার নীতিমালা অনুসরণ অন্তর্ভুক্ত।
আরও একটি সম্ভাব্য কারণ হতে পারে পোর্টফোলিও বৈচিত্র্যকরণ। কোম্পানিটি হয়ত ঝুঁকি কমাতে ও রিটার্ন সর্বাধিক করতে অন্যান্য ক্রিপ্টো অ্যাসেট বা ঐতিহ্যগত ফিন্যান্সিয়াল ইন্সট্রুমেন্টে বিনিয়োগ পুনর্বিন্যাস করছে।
ট্রেডিংয়ের পরামর্শ
বিটকয়েন
ক্রেতারা বর্তমানে বিটকয়েনের মূল্যকে $120,400 লেভেলে ফিরিয়ে নিইয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে, যা সরাসরি $122,000 পর্যন্ত যাওয়ার সম্ভাবনা উন্মুক্ত করবে; বিটকয়েনের মূল্যের পরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা $123,900-এর কাছাকাছি অবস্থিত। সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হলো $126,000-এর আশেপাশের লেভেল — যা ব্রেক করা হলে মার্কেটে বুলিশ প্রবণতা আরও শক্তিশালী হওয়ার সংকেত দেবে। তবে, বিটকয়েনের মূল্য কমে $118,800 লেভেলের আশেপাশে ক্রেতাদের সক্রিয় হতে দেখা যেতে পারে। এই জোন ব্রেক করে মূল্য নিম্নমুখী হলে BTC-এর মূল্য দ্রুত $117,200-এর দিকে এবং সর্বনিম্ন লক্ষ্যমাত্রা $115,900-এর দিকে নেমে যেতে পারে।
ইথেরিয়াম
$3,822 লেভেলের ওপর একটি সুস্পষ্ট কনসলিডেশন ইথেরিয়ামের মূল্যের $3,894-এর দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা উন্মুক্ত করবে। সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হলো $4,002-এর কাছাকাছি লেভেল— এটি ব্রেক করা হলে ক্রেতাদের আগ্রহ পুনরায় ফিরে আসবে। যদি ইথেরিয়ামের দরপতন হয়, তাহলে $3,740 লেভেলে ক্রেতাদের দেখা যেতে পারে। মূল্য এই লেভেলের নিচে নামলে ETH-এর মূল্য দ্রুত $3,654-এর দিকে এবং সর্বনিম্ন লক্ষ্যমাত্রা $3,589 পর্যন্ত নেমে যেতে পারে।
চার্টে যা দেখা যাচ্ছে
যদি মূল্য এই মুভিং অ্যাভারেজগুলোর কোনো একটি টেস্ট বা ক্রস করে, তাহলে সেটি সাধারণত মোমেন্টাম থামিয়ে দেয় অথবা মার্কেটে নতুন মোমেন্টাম সঞ্চার করে।