আরও দেখুন
বিটকয়েনের মূল্য এখন ক্রমাগতভাবে স্থানীয় সর্বোচ্চ লেভেলের তুলনায় নিম্ন লেভেলের দিকেই বেশি যাচ্ছে। প্রতিটি বড় ধরনের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার পর ধীরে ধীরে কিন্তু ধারাবাহিকভাবে মুনাফা গ্রহণের প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা ক্রিপ্টো মার্কেটে আরও বড় ধরনের কারেকশন আসার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
এর মধ্যেই, গতকাল মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) এক নির্দেশনা জারি করে জানায়, কিছু নির্দিষ্ট ধরনের লিকুইড ক্রিপ্টোকারেন্সি স্টেকিং কার্যক্রমকে আর সিকিউরিটিজের অফার বা সেল হিসেবে গণ্য করা হবে না। এটি একটি বড় জয় এবং ডিজিটাল অ্যাসেটের জন্য আরও স্পষ্ট নিয়ন্ত্রণ কাঠামো গঠনের প্রচেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। একইসঙ্গে, দীর্ঘদিনের অনিশ্চয়তার আবছা মেঘ কেটে যাওয়ায় মার্কেটের স্টেকহোল্ডাররা এখন আরও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে আইনসঙ্গত উপায়ে তাদের প্রোডাক্ট ও সার্ভিস উন্নয়নে মনোনিবেশ করতে পারবে। এর আগে, এই অনিশ্চয়তার কারণে কোম্পানিগুলো আইন ভাঙার ভয়ে উদ্ভাবনী কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিল।
যদিও এসইসির সিদ্ধান্ত নিয়ে পুরোপুরি বিশদ তথ্য পাওয়া যায়নি, তবে এটি একটি উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, যা এই ইঙ্গিত দেয় যে নিয়ন্ত্রক সংস্থা নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য প্রস্তুত এবং ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত থেকে কাঠামোগত পরিবর্তনে আগ্রহী। যদিও এখনও অনেক বিষয় অনিষ্পন্ন রয়ে গেছে, যেগুলোর জন্য ভবিষ্যতে আরও আলোচনা ও ব্যাখ্যার প্রয়োজন হবে।
মঙ্গলবার দেওয়া এক বিবৃতিতে এসইসি জানায়, "নির্দিষ্ট প্রেক্ষাপট ও পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে, আজকের বিবৃতিতে আলোচিত লিকুইড স্টেকিং কার্যক্রমগুলো সিকিউরিটিজের অফার বা সেল আওতাভুক্ত নয় — এমনটাই আমাদের ডিভিশনের অভিমত।" তারা ১৯৩৩ সালের সিকিউরিটিজ অ্যাক্ট এবং ১৯৩৪ সালের এক্সচেঞ্জ অ্যাক্টের উল্লেখযোগ্য ধারাগুলো তুলে ধরে। স্টাফ বুলেটিনে, এসইসি 'লিকুইড স্টেকিং'-কে সংজ্ঞায়িত করেছে এমন একটি প্রক্রিয়া হিসেবে, যেখানে একটি প্রোটোকলের মাধ্যমে ডিজিটাল অ্যাসেট স্টেক করে বিনিময়ে স্টেকারের কাছে মালিকানার প্রমাণ প্রদান করা হয়।
এসইসি কমিশনার পল অ্যাটকিনস মন্তব্য করেছেন, "আজকের এই স্টাফ বিবৃতি লিকুইড স্টেকিং সম্পর্কে এসইসির অবস্থান স্পষ্ট করতে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।"
এসইসির এই ব্যাখ্যা এমন এক সময় এসেছে, যখন লিকুইড স্টেকিং এক্সচেঞ্জ-ট্রেডেড ফান্ড (ETF) নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক আগ্রহ দ্রুত বাড়ছে, এবং জিটো ল্যাবস, ভ্যানএক এবং বিটওয়াইজের মতো কোম্পানিগুলো সোলানা-ভিত্তিক ফান্ডের জন্য লিকুইড স্টেকিং কৌশল অনুমোদনের আহ্বান জানাচ্ছে।
ডিফাইলামার তথ্য অনুসারে, লিকুইড স্টেকিং এখন ক্রিপ্টো স্পেসের অন্যতম বৃহৎ খাত, যেখানে মোট টিভিএল (টোটাল ভ্যালি লকড) $67 বিলিয়নের কাছাকাছি পৌঁছেছে। এর মধ্যে $51 বিলিয়ন শুধু ইথেরিয়ামেই রয়েছে।
ট্রেডিংয়ের পরামর্শ:
BTC-এর ক্রেতারা বর্তমানে মূল্যকে $114,500 লেভেলে ফেরত নেওয়ার চেষ্টা করছে, যা $115,900-এর দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা উন্মুক্ত করবে এবং সম্ভবত মূল্য $117,500 জোনের দিকে চলে যাবে। সর্বোচ্চ ঊর্ধ্বমুখী লক্ষ্য হলো $118,800—যেখানে ব্রেকআউট ঘটলে মার্কেটে বুলিশ প্রবণতা আরও শক্তিশালী হবে। তবে যদি দরপতন ঘটে, তাহলে মূল্য $112,800 লেভেলের কাছে থাকা অবস্থায় ক্রেতাদের সক্রিয়তার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এই লেভেল ব্রেক করলে BTC-এর মূল্য তীব্র পতনের শিকার হয়ে $110,500-এর দিকে নেমে যেতে পারে এবং চূড়ান্ত নিম্নমুখী লক্ষ্যমাত্রা হবে $108,200।
ইথেরিয়ামের ক্ষেত্রে, যদি মূল্য $3,717 লেভেলের ওপরে স্থিতিশীল থাকে, তাহলে তা $3,827 পর্যন্ত উঠতে পারে। চূড়ান্ত লক্ষ্যমাত্রা $3,941—এই লেভেলে ব্রেক করলে নতুন করে ক্রেতাদের আগ্রহ নিশ্চিত হবে। যদি ETH-এর মূল্য কমে যায়, তাহলে ক্রেতারা সম্ভবত মূল্য $3,601 লেভেলের কাছে থাকা অবস্থায় সক্রিয় হবে। এই সাপোর্ট লেভেল ব্রেক করা হলে দ্রুত দরপতনের মাধ্যমে মূল্য $3,505-এর দিকে যেতে পারে, এবং চূড়ান্ত লক্ষ্যমাত্রা হবে $3,383।
চার্টে যা দেখা যাচ্ছে:
লাল লাইন: সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল, যেখানে মূল্যের মুভমেন্ট থেমে যেতে পারে বা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হতে পারে
সবুজ লাইন: ৫০-দিনের মুভিং এভারেজ
নীল লাইন: ১০০-দিনের মুভিং এভারেজ
হালকা সবুজ লাইন: ২০০-দিনের মুভিং এভারেজ
সাধারণভাবে, মূল্য মুভিং এভারেজে পৌঁছালে বা অতিক্রম করলে মুভমেন্টে সাময়িক বিরতি বা নতুন দিকনির্দেশনা সূচিত হয়।