আরও দেখুন
ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রকে একমাত্র আধিপত্য বিস্তারকারী শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে অন্যান্য দেশ ও মহাদেশকে জোরপূর্বক নতিস্বীকার করানোর পেছনে মরিয়া প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার এই শুল্কভিত্তিক নীতিই বর্তমানে মার্কেটে প্রাধান্য বিস্তার করছে এবং এর ফলে অস্থিরতার মাত্রা অনেক বেড়ে গেছে — যা উপেক্ষা করা অসম্ভব হয়ে উঠেছে।
একের পর এক নতুন শুল্কের ঘোষণায় মার্কেট ইতোমধ্যে বিশৃঙ্খল অবস্থায় চলে গেছে, কারণ এখনও স্পষ্ট নয়—শেষ পর্যন্ত এর পরিণতি কী হবে। তবে এমন অনিশ্চিত পরিস্থিতিতেও বিনিয়োগকারীরা লাভজনক ট্রেডিং সুযোগ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। উদাহরণস্বরূপ, ট্রাম্প যখন ঘোষণা দেন যে যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় উৎপাদকদের ছাড় দিয়ে বিদেশি কোম্পানির আমদানিকৃত সেমিকন্ডাক্টরের উপর 100% শুল্ক আরোপ করা হবে—তখন প্রযুক্তি খাতের স্টকের প্রতি ব্যাপক চাহিদা দেখা দেয়। এর ফলে বৃহস্পতিবার ট্রেডিং সেশনের শেষভাগে নাসডাক 100 সূচকের দর প্রায় সাম্প্রতিক সর্বকালের উচ্চতার কাছাকাছি ফিরে আসে।
অন্যদিকে, মার্কিন ডলার—যা তত্ত্ব অনুযায়ী বাণিজ্য ও শুল্ক-সম্পর্কিত অনিশ্চয়তা এবং ফেডারেল রিজার্ভের আগাম সুদের হার কমানোর প্রত্যাশা থেকে চাপের মুখে থাকার কথা—তা এখনও আশ্চর্যজনকভাবে স্থিতিশীল রয়ে গেছে। একই ধরনের পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে কমোডিটি মার্কেটেও। যেমন: অপরিশোধিত তেলের দাম একটি তুলনামূলকভাবে সংকীর্ণ রেঞ্জে রয়েছে। একই চিত্র দেখা যাচ্ছে ক্রিপ্টোকারেন্সি মার্কেটেও।
এই সবকিছুর মূল কারণ ট্রাম্পের আগ্রাসী ও স্বেচ্ছাচারী নীতিমালা। এটা এখনো অনিশ্চিত যে কবে এই প্রক্রিয়া শেষ হবে। বরং আরও বেশি সম্ভাবনা রয়েছে যে, নতুন শর্তে বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার পরও, মার্কিন বাণিজ্য অংশীদাররা বর্তমান কঠোর শর্তাবলীর বিরুদ্ধে আপত্তি জানাবে — যা পরবর্তীতে মার্কেটের পরিস্থিতিতে সরাসরি প্রতিফলিত হবে।
তাহলে এমন পরিস্থিতিতে কোন অ্যাসেটগুলো আকর্ষণীয় হতে পারে?
আমার মতে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানির স্টকগুলোই সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় বলে মনে হচ্ছে। ট্রাম্পের সিদ্ধান্তনির্ভর নীতির কারণে যতটা বিশৃঙ্খলা বাইরে তৈরি হচ্ছে, তার মধ্যেও স্পষ্ট একটা প্রবণতা দেখা যাচ্ছে—সেটি হলো বিদেশি প্রতিদ্বন্দ্বীদের উপর শুল্ক আরোপের মাধ্যমে স্থানীয় উৎপাদকদের সুরক্ষা দেওয়া এবং সুদের হার শূন্যের কাছাকাছি নামিয়ে আনার চেষ্টা। হ্যাঁ, এটি একটি সম্পূর্ণ ব্যবস্থাগত ও ইচ্ছাকৃত প্রক্রিয়া—কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট এটাকেই একমাত্র সঠিক পথ হিসেবে বিবেচনা করছেন। এর মানে, যেসব কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ভোক্তাদের জন্য পণ্য ও সেবা তৈরি করে, সেগুলোর শেয়ারের দাম বাড়ার সম্ভাবনাই বেশি।
ক্রিপ্টোকারেন্সি মার্কেটের বিষয়ে বলতে এগেলে, ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্টের নীতির অধীনে, নিকট ভবিষ্যতে ক্রিপ্টো মার্কেটে আত্মবিশ্বাসী প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে—এমনটা ঘটার খুব একটা সম্ভাবনা নেই। আমি আগেও উল্লেখ করেছি—যখন সুদের হার কমানোর প্রত্যাশা থাকে, তখন বন্ড এবং অন্যান্য সুদবিহীন অ্যাসেট (যেমন ক্রিপ্টোকারেন্সি, স্বর্ণ এবং ফরেক্স ইনস্ট্রুমেন্ট)–এর প্রতি চাহিদা কমে যায়। আর এই প্রেক্ষাপটে, মার্কিন ইকুইটি এগিয়ে থাকবে।
সার্বিকভাবে বিশ্লেষণ করলে বলা যায়—কমোডিটি, স্বর্ণ, ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং এমনকি মার্কিন ডলারের ডলারের সাইডওয়ে প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে। অপরদিকে, মার্কিন স্টক সূচক এবং মার্কিন কর্পোরেট স্টকসমূহ সমর্থন পেতে থাকবে।
আজকের পূর্বাভাস:
#SPX
S&P 500 ফিউচার কনট্রাক্টের সিএফডি 6336.85 লেভেলের ওপরে কনসোলিডেট করছে। এই লেভেলের নিচে সম্ভাব্য দরপতনের ক্ষেত্রে ক্রয় করার সুযোগ পাওয়া যেতে পারে, যেখানে সম্ভাব্য রিবাউন্ডের টার্গেট 6397.00। বাই এন্ট্রির সম্ভাব্য লেভেল হিসেবে 6325.43 বিবেচনা করা যেতে পারে।
#NDX
নাসডাক 100 ফিউচার কনট্রাক্টের সিএফডি-ও 23393.20 লেভেলের ওপরে কনসোলিডেট করছে। এই লেভেলের নিচে সম্ভাব্য দরপতনকেও বাই সিগন্যাল হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে, যেখানে সম্ভাব্য রিবাউন্ডের টার্গেট 23559.50। বাই এন্ট্রির সম্ভাব্য লেভেল হিসেবে 23316.70 বিবেচনা করা যেতে পারে।