আরও দেখুন
ব্যাংক অফ জাপানের ডেপুটি গভর্নর রিওজো হিমিনোর মন্তব্যের পর জাপানি ইয়েন মার্কিন ডলারের বিপরীতে তীব্র দরপতনের শিকার হয়েছে। তিনি মূল সুদের হার বৃদ্ধির ব্যাপারে জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, তবে কখন এটি কার্যকর হতে পারে সে সম্পর্কে কোনো ইঙ্গিত দেননি।
মঙ্গলবার হোক্কাইডোর কুশিরো শহরে স্থানীয় ব্যবসায়িক নেতাদের উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে হিমিনো বলেন,"অর্থনৈতিক কার্যক্রম ও মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতি উন্নতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে ব্যাংক অফ জাপানের সুদের হার বৃদ্ধি করা এবং মুদ্রানীতি সমন্বয় করা যথোপযুক্ত হবে।"
হিমিনোর সুদের হার বৃদ্ধির সময়কাল নিয়ে অনিশ্চয়তার ইঙ্গিত মার্কেটে ইয়েন বিক্রির চাপ তৈরি করেছে, কারণ ট্রেডাররা এটিকে ব্যাংক অফ জাপানের অতিরিক্ত নমনীয় মুদ্রানীতি দ্রুত পরিত্যাগ না করার সংকেত হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে। বিনিয়োগকারীরা, যারা দীর্ঘদিন ধরে নীতিমালা কঠোর হওয়ার প্রত্যাশা করছিলেন, স্পষ্ট দিকনির্দেশনার অভাবে হতাশ হয়েছেন এবং মুনাফা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যা জাপানি মুদ্রার উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করেছে।
একই সময়ে, অন্যান্য কারেন্সি বিপরীতে মার্কিন ডলারের শক্তিশালী হওয়াও ইয়েনের দরপতনে অবদান রেখেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের সুদের হারের পার্থক্য উল্লেখযোগ্য রয়ে গেছে, যা মার্কিন অ্যাসেটে মূলধন প্রবাহকে উৎসাহিত করছে এবং পরিণতিতে ইয়েনের উপর চাপ বাড়াচ্ছে।
যদিও পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে সুদের হার বৃদ্ধিই করা হবে, তবে এর সময়কাল এখনও অনিশ্চিত। এ বছরের গ্রীষ্মের শুরুর দিকে ধারণা ছিল যে ব্যাংক অফ জাপান বছরের শেষ নাগাদ সুদের হার বাড়াতে পারে, তবে এর পর থেকে মার্কেটের ট্রেডারদের প্রত্যাশা বদলে গেছে। হিমিনোর বক্তব্যের পর এ বছর ব্যাংক অফ জাপানের সুদের হার বৃদ্ধির প্রত্যাশা সামান্য কমেছে, যা সম্ভবত ইয়েনের উপর আরও চাপ সৃষ্টি করেছে। বর্তমানে মার্কেটের ট্রেডারদের মূল্যায়ন অনুযায়ী বছরের শেষ নাগাদ এমন পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনা প্রায় 70%।
হিমিনো ঝুঁকির কারণ হিসেবে অস্থিতিশীল শ্রমবাজার এবং বৈশ্বিক অর্থনীতির সম্ভাব্য কাঠামোগত পরিবর্তনের বিষয়টি চিহ্নিত করেছেন , যা মূল্যস্ফীতি আরও ঊর্ধ্বমুখী করতে পারে, অন্যদিকে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মন্থর হলে শুল্ক ও পণ্যমূল্য মুদ্রাস্ফীতি হ্রাসের চাপ তৈরি করতে পারে।
যখন নীতিনির্ধারকরা মার্কিন শুল্কের প্রভাব মূল্যায়নের জন্য অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের অপেক্ষা করছেন, সর্বশেষ মুদ্রাস্ফীতি ও অর্থনৈতিক সূচকগুলোর ফলাফল অনুযায়ী ব্যবসায়িক কার্যক্রম তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী রয়েছে। দ্বিতীয় প্রান্তিকে জাপানের অর্থনীতি প্রত্যাশার চেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে এবং গত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে মূল মূল্যস্ফীতি সূচক ব্যাংক অফ জাপানের 2%-এর লক্ষ্যমাত্রার সমান বা তার উপরে রয়েছে।
USD/JPY-এর বর্তমান টেকনিক্যাল চিত্র অনুযায়ী, ক্রেতাদের এই পেয়ারের মূল্যকে নিকটতম রেজিস্ট্যান্স 147.90 লেভেলে পুনরুদ্ধার করতে হবে। এটি এই পেয়ারের মূল্যের 148.25-এর দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা উন্মুক্ত করবে, যদিও এই পেয়ারের মূল্যের আরও ঊর্ধ্বমুখী হওয়া বেশ কঠিন হবে। সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হলো 148.50 লেভেল। অন্যদিকে, এই পেয়ারের মূল্য নিম্নমুখী হলে মূল্য 147.50 লেভেলে থাকা অবস্থায় বিক্রেতারা নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করবে। তারা সফল হলে, এই রেঞ্জ ব্রেক হয়ে USD/JPY পেয়ারের মূল্য 147.20-এর দিকে নেমে যাবে, যেখান থেকে 146.80 পর্যন্ত দরপতন আরও প্রসারিত হতে পারে।
You have already liked this post today
*এখানে পোস্ট করা মার্কেট বিশ্লেষণ আপনার সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রদান করা হয়, ট্রেড করার নির্দেশনা প্রদানের জন্য প্রদান করা হয় না।