আরও দেখুন
বাণিজ্য শুল্ক নিয়ে লড়াই অব্যাহত রয়েছে, তবে এবার তা যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরেই ঘটেছে। গতকাল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আরোপিত শুল্কের বৈধতা নিশ্চিত করতে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছেন। এবং সেইসাথে তিনি এমন একটি মামলার পুনর্বিবেচনার জন্য চাপ দিচ্ছেন যা ট্রিলিয়ন ডলারের প্রভাব ফেলতে পারে এবং তাকে বৈশ্বিক অর্থনীতির উপর নতুন, বিস্তৃত প্রভাব বিস্তারের ক্ষমতা প্রদান করতে পারে।
মৌখিক যুক্তিতর্কসহ আপিলটি দ্রুত শুনানির আহ্বান জানানবো হচ্ছে। এটি এ বছরের নভেম্বরের শুরুতে আদালতে উত্থাপিত হতে পারে। মনে করিয়ে দিই যে সম্প্রতি একটি ফেডারেল আপিল আদালত রায় দিয়েছে যে ট্রাম্প 1977 সালের আইন অনুযায়ী আমদানিকৃত পণ্যের উপর ব্যাপক শুল্ক আরোপ করতে পারবেন না, যা জাতীয় জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রণীত হয়েছিল।
আপিলে, ট্রাম্প যুক্তি দিয়েছেন যে জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীনে তার বর্তমান শুল্কনীতি অব্যাহত রাখার ব্যাপক ক্ষমতা রয়েছে এবং নিম্ন আদালতগুলো ভুলভাবে এই অধিকার সীমিত করেছে।
যদি সুপ্রিম কোর্টের রায় ট্রাম্পের পক্ষে যায়, তবে এটি শুধু ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম, পণ্য এবং অন্যান্য দ্রব্যে আরোপিত শুল্ককেই বৈধতা দেবে না, ভবিষ্যতের প্রেসিডেন্টদের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য খাতের উপর উল্লেখযোগ্য ক্ষমতাও দেবে। অনেক অর্থনীতিবিদ মনে করেন এটি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক নীতিমালায় একটি মৌলিক পরিবর্তন আনতে পারে, যা প্রেসিডেন্টদের কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াই জাতীয় নিরাপত্তার অজুহাতে ইচ্ছামতো শুল্ক আরোপের সুযোগ দেবে। সমালোচকরা যুক্তি দিয়েছেন যে এ ধরনের বিস্তৃত ক্ষমতার অপব্যবহার হতে পারে, যা বাণিজ্যযুদ্ধ উসকে দেবে, ভোক্তাপণ্যের মূল্য বাড়াবে এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিকে অস্থিতিশীল করবে। তারা সতর্ক করেছেন যে এটি একটি "প্যান্ডোরার বাক্স" খুলে দেবে, যা মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে দুর্বল করে সুরক্ষাবাদী নীতিমালা অনুসরণের সুযোগ দেবে।
অন্যদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের সমর্থকরা যুক্তি দিচ্ছেন যে এ ধরনের ক্ষমতা অভ্যন্তরীণ শিল্পখাতকে সুরক্ষিত রাখতে এবং ন্যায্য বাণিজ্য হিস্যা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয়। তাদের দাবি, মার্কিন কোম্পানিগুলো প্রায়শই বিদেশি সরকারের অন্যায্য প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হয়, আর শুল্ক হলো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করার এবং মার্কিন কর্মসংস্থান রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় হাতিয়ার।
এটা স্পষ্ট যে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত মার্কিন অর্থনীতি এবং বিশ্বে দেশটির অবস্থানের উপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে। এটি বাণিজ্য সংক্রান্ত বিষয়ে নির্বাহী ও আইনসভা শাখার মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য নির্ধারণ করবে এবং বহু বছর ধরে প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদারদের সঙ্গে মার্কিন সম্পর্ককে প্রভাবিত করবে। সুপ্রিম কোর্ট সম্ভবত মামলাটি বিবেচনা করবে, তবে এর জন্য এখনো বিচারপতিদের অনুমোদন প্রয়োজন। মার্কিন প্রশাসন আদালতকে 10 সেপ্টেম্বরের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছে।
আপিলটি ট্রাম্প কর্তৃক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিকটতম প্রতিবেশী কানাডা ও মেক্সিকো এবং চীনের উপর আরোপিত শুল্কের সঙ্গেও সম্পর্কিত।
এটা স্পষ্ট যে এই আপিল আদালতের জন্য একটি পরীক্ষা হবে, যা কনজারভেটিভদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, যারা এতদিন ট্রাম্পকে ব্যাপকভাবে সমর্থন করেছে, কারণ তিনি এমন ক্ষমতার দাবি করছেন যা তার পূর্বসূরিরা কখনো করেননি। যদি বিচারপতিরা মামলাটি গ্রহণ করেন, তবে তাদের এমন একটি আইন ব্যাখ্যা করতে হবে যা প্রেসিডেন্টকে জাতীয় নিরাপত্তা, বৈদেশিক নীতি এবং অর্থনৈতিক জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য একগুচ্ছ হাতিয়ার প্রদান করে, তবে স্পষ্টভাবে শুল্ক আরোপ সেই ক্ষমতার মধ্যে নেই।
এখন পর্যন্ত, এ ধরনের কার্যক্রম কারেন্সি মার্কেটে সরাসরি তেমন কোনো প্রভাব ফেলেনি, তবে এই মামলার যেকোনো নাটকীয় অগ্রগতি সার্বিক পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাতে পারে। আমরা মনে করিয়ে দিতে চাই যে গত শরতে ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধের ঘোষণার ফলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে মূলধন বহির্গমন শুরু হয়েছিল। এবার কী হবে তা এখনো দেখা বাকি।
EUR/USD-এর টেকনিক্যাল চিত্র: বর্তমানে ক্রেতাদের এই পেয়ারের মূল্যের 1.1680 লেভেল ব্রেক করাতে হবে। কেবল এর পরেই তারা মূল্যকে 1.1715 লেভেলে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে পারবে। সেখান থেকে এই পেয়ারের মূল্য 1.1740 পর্যন্ত উঠতে পারে, তবে বড় ট্রেডারদের সহায়তা ছাড়া এটি করা কঠিন হবে। সর্বোচ্চ লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে 1.1790 লেভেল। যদি এই ইন্সট্রুমেন্টের দরপতন ঘটে, আমি কেবল মূল্য 1.1645 লেভেলের আশেপাশে থাকা অবস্থায় ক্রেতাদের উল্লেখযোগ্য সক্রিয়তার প্রত্যাশা করছি। যদি সেখানে ক্রেতারা সক্রিয় না হয়, তাহলে মূল্যের 1.1610 নতুন সর্বনিম্ন লেভেল টেস্ট হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত হবে অথবা 1.1575 থেকে লং পজিশন ওপেন করা যেতে পারে।
GBP/USD-এর টেকনিক্যাল চিত্র: পাউন্ডের ক্রেতাদের এই পেয়ারের মূল্যের নিকটতম রেজিস্ট্যান্স লেভেল 1.3445 ব্রেক করাতে হবে। কেবল এরপরেই তারা মূল্যকে 1.3485-এর দিকে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে পারবে, যার ব্রেকথ্রু করে ঊর্ধ্বমুখী হওয়া মূল্যের পক্ষে বেশ কঠিন হবে। সর্বোচ্চ লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে 1.3515 লেভেল। অন্যদিকে, এই পেয়ারের দরপতনের ক্ষেত্রে বিক্রেতারা মূল্য 1.3415 লেভেলে থাকা অবস্থায় নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করবে। তারা সফল হলে, এই রেঞ্জ ব্রেক করে GBP/USD পেয়ারের মূল্য 1.3380 লেভেলের দিকে নেমে যাবে এবং পরবর্তীতে 1.3340-এ পৌঁছানোর সম্ভাবনা থাকবে।