শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
শুক্রবার EUR/USD পেয়ারের মূল্যের স্বাভাবিক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়। গত সপ্তাহে আমরা আরেকটি টেকনিক্যাল কারেকশন লক্ষ্য করেছি, কারণ ইউরোর উল্লেখযোগ্য দরপতনের জন্য মৌলিক কোনো কারণ ছিল না। ফেডারেল রিজার্ভ এবং ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈঠকের ফলাফল ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করা যেত—এবং ট্রেডাররাও তাই করেছে। জেরোম পাওয়েল ও ক্রিস্টিন লাগার্ডের বক্তৃতাও পরিস্থিতির তেমন কোনো মৌলিক পরিবর্তন ঘটায়নি বা কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর অবস্থান পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়নি। ডলারের একমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় প্রান্তিকের জিডিপি প্রতিবেদনের ফলাফল থেকে সহায়তা পেয়েছে। তবে শুক্রবার মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত ভোক্তা আস্থা সূচক আবারও হতাশাজনক ফলাফল প্রদর্শন করে, যা আংশিকভাবে ট্রেডারদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে। পরে ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। এর ফলে আবারও মার্কিন ডলারের দরপতন শুরু হয়। আমাদের ধারণা, দৈনিক টাইমফ্রেমে শীঘ্রই পুনরায় এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হবে, কারণ এখনও মধ্যমেয়াদে ডলারের দর বৃদ্ধির জন্য কোনো চালিকা শক্তি নেই।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
শুক্রবার 5-মিনিটের টাইমফ্রেমে দুটি বাই সিগন্যাল গঠিত হয়। এই পেয়ারের মূল্য দু'বার 1.1655–1.1666 এরিয়া থেকে রিবাউন্ড করে এবং ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়। নতুন ট্রেডাররা এই দুটি সিগন্যালের যেকোনো একটির উপর ভিত্তি করে লং পজিশন ওপেন করতে পারতেন, কারণ এগুলো মূলত একে অপরের পুনরাবৃত্তি ছিল। শুক্রবার সন্ধ্যার মধ্যে ট্রেডটি লাভসহ ক্লোজ করা যেত বা সপ্তাহান্তের আগে ব্রেকইভেন লেভেল স্টপ লস দিয়ে সুরক্ষিত রাখা যেত। সোমবারের এশিয়ান সেশনে এই পেয়ারের মূল্য নিকটবর্তী লক্ষ্যমাত্রা 1.1737-এ পৌঁছে যায়।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে নতুন করে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের কারেকশন শুরু হয়েছে, যা দ্বিতীয় প্রান্তিকের মার্কিন জিডিপি প্রতিবেদনের সহায়তায় ঘটেছে। তবে এখনও মার্কিন ডলারের জন্য সামগ্রিক মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অনুকূল নয়, তাই আমরা মার্কিন গ্রিনব্যাকের শক্তিশালী ও টেকসই দর বৃদ্ধির আশা করছি না। আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে, আপাতত শুধুমাত্র ডলারের মূল্যের টেকনিক্যাল কারেকশনের ওপর নির্ভর করা যেতে পারে, এবং বর্তমানে আমরা সেটিই লক্ষ্য করছি।
সোমবার এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট সম্ভবত টেকনিক্যাল কারেকশন ওপর নির্ভর করবে। 1.1737–1.1745 এরিয়া মূল লেভেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে: এখান থেকে রিবাউন্ড হলে শর্ট পজিশন ওপেন করা যেতে পারে, আর ব্রেকআউট হলে নতুন লং পজিশনের সুযোগ উন্মুক্ত হবে।
5-মিনিট টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো: 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1571–1.1584, 1.1655–1.1666, 1.1737–1.1745, 1.1808, 1.1851, 1.1908, 1.1970–1.1988। সোমবার ইউরোজোন ও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে কার্যত তেমন কিছু নেই, কেবল ইসিবি এবং ফেডের একাধিক প্রতিনিধিদের বক্তব্য অনুষ্ঠিত হবে। তবে এই পর্যায়ে উভয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতিগত অবস্থান নিয়ে তেমন কোনো প্রশ্ন অবশিষ্ট নেই।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।