empty
 
 
27.11.2025 10:05 AM
যুক্তরাজ্যের নতুন বাজেট: ধনীদের কাঁধেই পড়ছে বাড়তি চাপ

গতকাল যুক্তরাজ্যের নতুন বাজেট প্রকাশিত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী দশকের শুরুতে প্রায় ৫.৪ মিলিয়ন ব্রিটিশ কর্মী ৪০% থেকে ৪৫% হারে আয়কর প্রদান করতে বাধ্য হবেন।

This image is no longer relevant

তবে লেবার পার্টির চ্যান্সেলর অব দ্য এক্সচেকার ঘোষণা দিয়েছেন যে বর্তমানে কার্যকর ব্যক্তি আয়করের অব্যাহতি সীমার ওপর জারিকৃত স্থগিতাদের মেয়াদ আরও তিন বছর বাড়ানো হবে — অর্থাৎ, এই সীমাগুলো মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে বৃদ্ধি করা হবে না। সমালোচকরা এই উদ্যোগকে অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে 'আর্থিক বাঁধা' এবং এক ধরনের 'গোপন কর আরোপ' হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এটি স্পষ্ট যে, রিভস কনজারভেটিভ পার্টির পূর্বসূরিদের দেখানো পথেই হেটেছেন, যেন সরাসরি কর হার বাড়ানো ছাড়া রাজস্ব বাড়ানো যায় এবং একই সঙ্গে রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়াও এড়ানো যায়।

এই স্থগিতাদের প্রভাব সুদূরপ্রসারী। মজুরি ও মূল্যস্ফীতি বাড়ার ফলে আরও বেশি মানুষকে উচ্চতর কর দিতে হবে — অর্থাৎ তাদের আয়ের বড় একটি অংশ বেশি হারে করযোগ্য হবে। যদিও বেতন বাড়ছে, কিন্তু প্রকৃত অর্থে খরচ করার মতো আয় কমে যাচ্ছে, ফলে পারিবারিক ব্যয় সংকুচিত হচ্ছে এবং খুচরা খাতে ব্যয় হ্রাস পাচ্ছে।

এ ধরনের 'আর্থিক বাঁধার' প্রভাব কেবল উচ্চ আয়ের কর্মীদের ওপর পড়বে না; যেহেতু আয়কর সীমা মূল্যস্ফীতি অনুযায়ী সমন্বয় করা হচ্ছে না, তাই মাঝারি আয়ের মানুষও বেশি হারে করের আওতায় পড়বে। বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে এটি বিশেষভাবে সংকটজনক, কারণ অনেক পরিবার আগেই জীবন-জীবিকার ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের চাপের সাথে লড়ছে।

তবে, যুক্তরাজ্য সরকারের বিশাল ঋণ এবং সরকারী ব্যয় নির্বাহের অর্থের প্রয়োজনে এই আর্থিক বাঁধা অতিরিক্ত রাজস্ব আদায়ে আকর্ষণীয় সমাধান হিসেবে মনে হতে পারে। যদিও সমালোচকরা বলছেন, এটি এক স্বল্পদৃষ্টিসম্পন্ন কৌশল, যা দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ব্যাহত করে।

অফিস ফর বাজেট রেসপনসিবিলিটির হিসাব অনুযায়ী, এই পদক্ষেপের ফলে সরকার ২০৩০–২০৩১ সালের মধ্যে প্রায় £১৩ বিলিয়ন রাজস্ব সংগ্রহ করতে পারবে, কারণ তখন লক্ষ লক্ষ ব্রিটিশ হঠাৎ আবিষ্কার করবেন যে তাদের বেতন এখন উচ্চ করের আওতায় পড়েছে। নির্ধারিত সময়ের শেষে, করদাতাদের প্রায় প্রতি চারজনের একজনই দুইটি উচ্চ করপ্রদানের যেকোনো একটিতে পড়বেন, যেখানে ২০২১–২০২২ অর্থবছরে এই সংখ্যা ছিল মাত্র ১৫%।

এই নীতির বারবার প্রয়োগের ফলে যুক্তরাজ্যের রাজস্ব, জিডিপির ৩৮%-এর ঐতিহাসিক সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছানোর পথে রয়েছে — যা পূর্বাভাস অনুযায়ী নজিরবিহীন। স্টারমার এবং রিভস বিরোধীদলে থাকার সময় টোরিদের রাজস্বনীতির বিলম্বের সমালোচনা করেছিলেন, এবং রিভস তাঁর প্রথম বাজেটে এই স্থগিত ব্যবস্থা বাতিলের পক্ষে সমর্থন ব্যক্ত করেছিলেন — বলেছিলেন, এটি না করলে "কর্মজীবী মানুষের ক্ষতি হবে।"


This image is no longer relevant

কিন্তু যে প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছিলেন, বাস্তবে তা পূরণ হয়নি। বুধবার সাংবাদিকেরা যখন রিভসের কাছে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করার বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন, তিনি বলেন, তিনি দেশের ব্যয়ভার সুষ্ঠুভাবে সামলানোর জন্য প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন এবং জীবন-জীবিকার বাড়তি ব্যয়ের চাপ কমাতে বিভিন্ন অন্যান্য পদক্ষেপ নিয়েছেন।

রিভস বলেন, "আমি সৎ ও খোলামেলা আচরণ করছি। ২০২৮ সাল থেকে এই অব্যাহতির সীমাগুলো আরও দীর্ঘ সময়ের জন্য স্থগিত থাকবে — এবং হ্যাঁ, এর ফলে কিছু ব্যয় বাড়বে। তবে আমরা এখন কর্মজীবী মানুষের পকেটে অর্থ পৌঁছে দিচ্ছি।"

এই স্থগিতাদেশের অর্থ হলো, পূর্বাভাসকৃত সময়ের শেষে ৫.২ মিলিয়ন মানুষ এখনও মূল আয়ের ২০% হারে কর দিতে থাকবেন। এর পাশাপাশি আরও ৪.৮ মিলিয়ন ব্যক্তি বাৎসরিক £৫০,২৭১ থেকে £১২৫,১৪০ আয়ের মধ্যে থাকা ৪০% হারে করপ্রদানের ক্যাটাগরিতে চলে যাবেন; এবং আরও ৬০০,০০০ ব্যক্তি সর্বোচ্চ আয়ের ৪৫% কর ক্যাটাগরিতে পড়বেন।

নতুন কর কাঠামো ও বাজেট ব্যয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট করনীতি দেখে ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্য শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে এবং বৃদ্ধি পেয়েছে।

GBP/USD-এর বর্তমান টেকনিক্যাল চিত্র অনুযায়ী, ক্রেতাদের অবশ্যই এই পেয়ারের মূল্যকে 1.3270 নিকটবর্তী রেজিস্ট্যান্স লেভেলে নিয়ে যেতে হবে। কেবল তখনই মূল্যের 1.3310-এর দিকে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে, যা ব্রেকআউট করে উপরের দিকে যাওয়া বেশ চ্যালেঞ্জিং হবে। সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হলো 1.3335 লেভেল।

যদি কারেন্সি পেয়ারটির দরপতন হয়, তাহলে বিক্রেতারা পুনরায় এই পেয়ারের মূল্য 1.3245-এ নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে। তারা সফল হলে মূল্য এই রেঞ্জ ব্রেক করলে সেটি ক্রেতাদের জন্য বড় ধাক্কা হবে এবং GBP/USD পেয়ারের মূল্য 1.3215 নেমে যেতে পারে এবং এরপরে 1.3185-এর লক্ষ্যমাত্রার দিকে দরপতন হতে পারে।

অন্যদিকে, EUR/USD-এর বর্তমান টেকনিক্যাল চিত্র অনুযায়ী, ক্রেতাদের এই পেয়ারের মূল্যকে 1.1615 লেভেলে নিয়ে যাওয়ার ওপর মনোনিবেশ করতে হবে। কেবল এর ফলে মূল্যের 1.1635 লেভেলে পৌঁছানোর সুযোগ তৈরি হবে। সেখান থেকে পেয়ারটির মূল্য 1.1655 লেভেলের দিকে অগ্রসর হতে পারে, যদিও মার্কেটের বড় ট্রেডারদের সমর্থন ছাড়া তা অর্জন করা কঠিন হতে পারে। সবচেয়ে উচ্চতর লক্ষ্যমাত্রা হলো 1.1675।

যদি ট্রেডিং ইনস্ট্রুমেন্টটির দরপতন শুরু হয়, তবে মূল্য 1.1590 লেভেলের আশপাশে থাকা অবস্থায় আমি বড় ক্রেতাদের কার্যকলাপের প্রত্যাশা করছি। যদি সেখানে কেউ সক্রিয় না হয়, তবে মূল্যের 1.1570-এর লেভেলের নেমে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে অথবা 1.1550 লেভেল থেকে লং পজিশন ওপেন করা যেতে পারে।

Recommended Stories

এখন কথা বলতে পারবেন না?
আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন চ্যাট.