empty
 
 
27.11.2025 10:29 AM
ডলারের বিপরীতে ইয়েনের স্থিতিশীলতা পরিলক্ষিত হচ্ছে

সাম্প্রতিক দিনগুলোতে মার্কিন ডলারের বিপরীতে জাপানি ইয়েনের মূল্য সামান্য ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা প্রদর্শন করেছে, যদিও এই প্রবৃদ্ধি মূলত টেকনিক্যাল কারণে হয়েছে।

জাপান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (BOJ) পলিসি বোর্ডের সদস্য আসাহি নোগুচি এক ভাষণে দাবি করেন যে তিনি এখনো ডভিশ বা নমনীয় অবস্থান বজায় রেখেছেন এবং ডিসেম্বর মাসে সম্ভাব্যভাবে সুদের হার বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে মার্কেটে ক্রমবর্ধমান জল্পনার পালে হাওয়া দেওয়া থেকে তিনি বিরত থাকছেন। সার্বিকভাবে, তিনি নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছেন এবং সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেওয়ার উপরে জোর দিয়েছেন।

This image is no longer relevant

বৃহস্পতিবার দক্ষিণ-পশ্চিম জাপানের ওইতায় স্থানীয় ব্যবসায়ী নেতাদের উদ্দেশে এক বক্তব্যে নোগুচি বলেন, "বিভিন্ন অর্থনৈতিক চ্যানেল কীভাবে শেষ পর্যন্ত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং মূল্যের উপর প্রভাব ফেলে, তা ব্যাংক অব জাপানকে সতর্কভাবে পর্যালোচনা করতে হবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী নীতিগত সুদের হার ব্যবহার করে মুদ্রানীতির নমনীয়করণের মাত্রা সমন্বয় করতে হবে।"

ট্রেডাররা এই বক্তব্যকে এই ইঙ্গিত হিসেবেই ব্যাখ্যা করেছে যে, ব্যাংক অব জাপান এখনই অতি নমনীয় মুদ্রানীতি কঠোর করতে যাচ্ছে না। ইয়েন সামান্য দরপতনের সাথে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে; তবে, মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের কাছ থেকে আরও ডভিশ বা নমনীয় পদক্ষেপের প্রত্যাশা এই দরপতনকে সীমিত করে দিয়েছে। ফেড সুদের হার হ্রাস অব্যাহত রাখবে কিনা, বিনিয়োগকারীরা সে বিষয়ে যেকোনো ইঙ্গিত পাওয়ার আশায় গভীর মনোযোগের সাথে অপেক্ষায় রয়েছেন।

এদিকে, ইয়েনের মূল্যের গতিশীলতায় জাপানের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। জাপানের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা এবং মূল্যস্ফীতির পূর্বাভাস ব্যাংক অব জাপানের আর্থিক নীতিমালা নির্ধারণের ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করবে। যদি জাপানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মন্থরতা অব্যাহত থাকে, তাহলে ব্যাংক অব জাপানের উপর আবার মুদ্রানীতি পর্যালোচনার চাপ বাড়তে পারে। স্বল্পমেয়াদে, ইয়েনের মূল্যের বিয়ারিশ প্রবণতা বজায় থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ এটি অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক উভয় ধরনের প্রভাবের অধীনে রয়েছে।

নোগুচির সাম্প্রতিক বক্তব্যের আগে দেখা গিয়েছিল যে, সেপ্টেম্বর মাসে তিনি এক ভাষণে সুদের হার বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা বেড়ে চলছে বলে ইঙ্গিত দেন, ট্রেডাররা যা দেখে অবাক হয়েছিলেন—তা থেকে তিনি কিছুটা নমনীয় অবস্থান ফিরে এসেছেন। বোর্ডের আরও বেশ কয়েকজন সদস্য সম্প্রতি আক্রমণাত্মক বিবৃতি দেওয়ার পর, নোগুচির বৃহস্পতিবারের মন্তব্য ব্যাংক অব জাপানকে ডিসেম্বর মাসে কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণ এড়াতে সাহায্য করতে পারে।

নোগুচির মতে, সবচেয়ে বাস্তবতামুখী নীতিকৌশল হবে নিরপেক্ষ সুদের হারের সম্ভাব্য সীমা নির্ধারণ করা এবং তারপরে সময়ের সাথে ধাপে ধাপে সুদের হার বাড়ানো, সেইসাথে তা অর্থনীতি ও মূল্যস্ফীতির উপর কীভাবে প্রভাব ফেলছে তা পর্যবেক্ষণ করা। সাবেক এই অর্থনীতির অধ্যাপক বলেন, "আমি মনে করি, পরিমিত ও সুসংহত নীতিনির্ধারক কৌশল এমনই হওয়া উচিত — এবং এটাই ব্যাংক অব জাপানের অনুসরণযোগ্য পথ হওয়া উচিত।"

গত সপ্তাহে বোর্ড সদস্য জুনকো কোয়েডা এবং কাজুয়ুকি মাসু আগামী মাসে সুদের হার বাড়ানোর সম্ভাবনা নিয়ে ট্রেডারদের জল্পনাকে আরও বাড়িয়ে দেন। কোয়েডা বলেন যে, ব্যাংক অব জাপানকে আর্থিক নীতিমালা স্বাভাবিকীকরণের পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে হবে, যদিও ডিসেম্বরেই সেই পদক্ষেপ নেয়া হবে কিনা, তা তিনি নিশ্চিত করেননি। অন্যদিকে, এক সাক্ষাৎকারে মাসু বলেন, "সুদের হার বাড়ানোর সময় ঘনিয়ে আসছে"।

এটি উল্লেখযোগ্য যে, বছরের শুরুতে ইয়েনের দর ডলারের বিপরীতে জানুয়ারির সর্বনিম্ন লেভেলের কাছাকাছি চলে যাওয়ার পর থেকেই সুদের হার বৃদ্ধি নিয়ে জল্পনা তীব্র আকার ধারণ করে।

USD/JPY-এর বর্তমান টেকনিক্যাল চিত্র অনুযায়ী, ক্রেতাদের অবশ্যই এই পেয়ারের মূল্যকে 156.30-এর রেজিস্ট্যান্স লেভেলে নিয়ে যেতে হবে। এটি করা গেলে, পরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হবে 156.70 — তবে এর ওপরে ব্রেকআউট ঘটানো বেশ কঠিন হবে। সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হলো 157.10 লেভেল।

যদি এই পেয়ারের দরপতন হয়, তাহলে বিক্রেতারা পুনরায় এই পেয়ারের মূল্যকে 155.90-এর দিকে নামিয়ে আনার চেষ্টা করবে। তারা সফল হলে, এই রেঞ্জ ব্রেক করে মূল্য 155.55-এর দিকে নেমে যেতে পারে এবং সম্ভাব্যভাবে আরও নিচে 155.15 পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।

Recommended Stories

এখন কথা বলতে পারবেন না?
আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন চ্যাট.