আরও দেখুন
ইউরোপীয় মুদ্রা মার্কিন ডলারের বিপরীতে ধারাবাহিকভাবে দরপতনের শিকার হচ্ছে, কারণ ট্রেডাররা ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ECB) আসন্ন মুদ্রানীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে জোরালোভাবে প্রত্যাশা ব্যক্ত করছেন।
তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসে ইসিবি সুদের হার কমাতে পারে — এমন সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এর পেছনে রয়েছে কয়েকটি কারণ, যার মধ্যে রয়েছে ইউরোজোনে মুদ্রাস্ফীতির ধীরগতি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দুর্বলতার ইঙ্গিত।
সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মুদ্রাস্ফীতি ধীরে ধীরে ইসিবির 2% লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছাচ্ছে, যা নীতিনির্ধারকদের জন্য মুদ্রানীতি নমনীয় করার সুযোগ তৈরি করছে। একইসাথে, PMI ব্যবসায়িক কার্যকলাপ সূচক এবং খুচরা বিক্রয়ের মতো অর্থনৈতিক সূচকগুলোর প্রবৃদ্ধি হ্রাসের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে — যা কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
আজ ইউরোজোনের নতুন মুদ্রাস্ফীতির পরিসংখ্যান প্রকাশিত হবে, যা আরেকবার সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে, কারণ মার্চে যেখানে মুদ্রাস্ফীতি ছিল 2.2%, তা এপ্রিল মাসে কমে 2.1%-এ নেমে আসবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। তুলনামূলকভাবে জানুয়ারিতে এটি ছিল 2.5%। এছাড়াও, ইউরোজোনজুড়ে ম্যানুফ্যাকচারিং PMI প্রতিবেদনের দুর্বল ফলাফল আজই প্রকাশিত হবে, যা ইসিবির পদক্ষেপের সম্ভাবনা ঘিরে আত্মবিশ্বাস আরও দৃঢ় করবে।
এই পরিস্থিতিতে, অনেক ট্রেডার মনে করছেন ইসিবি আগামী বৈঠকে মূল সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এটি এমন একটি পদক্ষেপ যা ব্যবসা ও ভোক্তাদের ঋণ গ্রহণের খরচ কমিয়ে অর্থনৈতিক কার্যকলাপে উৎসাহ দিতে পারে। তবে, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কের কারণে মুদ্রাস্ফীতির পুনরায় বেড়ে ওঠার ঝুঁকিও মাথায় রাখতে হবে — যা ইসিবির আরও সতর্ক মুদ্রানীতির পথে হাঁটতে বাধ্য করতে পারে।
সামগ্রিকভাবে, পরিস্থিতি এখনো গতিশীল এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও মার্কেটের ট্রেডারদের কাছ থেকে ঘনিষ্ঠ পর্যবেক্ষণের দাবি রাখে। ইসিবির সিদ্ধান্ত ইউরোজোনের অর্থনীতির উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব তৈরি করবে।
স্পষ্টভাবে বলা যায়, গত এক মাসে নিকটমেয়াদে ইসিবির ঋণগ্রহণের খরচ কমানোর প্রত্যাশা বেড়েছে, কারণ যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্ক ইউরোজোনের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের প্রাথমিক ধাপ নিয়ে উদ্বেগ প্রশমিত করেছে। ইউরোজোনের ব্যবসায়িক কার্যকলাপ সূচক দুর্বলতা নির্দেশ করছে, এবং অপ্রত্যাশিতভাবে শক্তিশালী ইউরো মুদ্রাস্ফীতি আরও কমবে — এই ধারণাকেই সমর্থন করছে। কিছু ট্রেডার মনে করছেন, আগামী চার মাসে নীতিনির্ধারকরা সুদের হার ৭৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে 1.5%-এ নিয়ে আসতে পারেন।
ফিন্যান্সিয়াল মার্কেটের ট্রেডাররা বর্তমানে ইসিবির অতিরিক্ত 67 বেসিস পয়েন্ট সুদের হার হ্রাস সম্পূর্ণভাবে মূল্যায়ন করেছে, যার মানে দুই বার ২৫ বেসিস পয়েন্ট করে সুদের হার হ্রাস সম্ভাবনা নিশ্চিত এবং তৃতীয়বার এই পদক্ষেপের সম্ভাবনা 68%। এতে করে মূল সুদের হার 2% থেকে নেমে 1.5%-এ পৌঁছাতে পারে।
EUR/USD পেয়ারের টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ
বর্তমানে, ক্রেতাদের জন্য মূল লক্ষ্য হবে 1.1337 লেভেল ব্রেক করা। কেবল তখনই 1.1386 লেভেল টেস্টের সম্ভাবনা তৈরি হবে। এরপর পেয়ারটির মূল্য 1.1437 লেভেলের দিকে অগ্রসর হতে পারে, যদিও বড় বিনিয়োগকারীদের সমর্থন ছাড়া মূল্যের এই লেভেল পর্যন্ত পৌঁছানো কঠিন হবে। সর্বশেষ লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.1487। যদি ইনস্ট্রুমেন্টটির দরপতন হয়, তাহলে আমি 1.1265 লেভেলের কাছাকাছি শক্তিশালী ক্রেতাদের সক্রিয় হওয়ার প্রত্যাশা করবো। যদি সেখানে প্রতিক্রিয়া না দেখা যায়, তাহলে 1.1215-এর নতুন লো অথবা 1.1185 লেভেল থেকে লং পজিশনে এন্ট্রির কথা বিবেচনা করা যেতে পারে।
GBP/USD পেয়ারের টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ
পাউন্ড ক্রেতাদের জন্য তাৎক্ষণিক লক্ষ্য হলো 1.3315 রেজিস্ট্যান্স লেভেল ব্রেক করা। কেবল তখনই মূল্যের 1.3354 লেভেলের দিকে অগ্রসর হওয়া সম্ভব হবে — যার উপরে ওঠা বেশ কঠিন হবে। সর্বশেষ লক্ষ্যমাত্রা থাকবে 1.3394 লেভেল। যদি এই পেয়ারের মূল্য কমে যায়, তাহলে বিক্রেতারা 1.3280 লেভেলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করবে। যদি তারা সফল হয়, তাহলে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের এই রেঞ্জ ব্রেক ব্রেক করে ওপরের দিকে যেয়ে ক্রেতাদের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়াবে এবং পেয়ারটির মূল্য 1.3250 এবং পরবর্তীতে 1.3205 লেভেলের দিকে নিচের দিকে নেমে যেতে পারে।