empty
 
 
08.05.2025 09:17 AM
ফেডারেল ওপেন মার্কেটের কমিটির বৈঠকের ফলাফল

ফেডারেল রিজার্ভের বৈঠকের ফলাফল প্রকাশের পর ইউরো ও ব্রিটিশ পাউন্ডের দর আবারও মার্কিন ডলারের বিপরীতে কিছুটা নিম্নমুখী হয়েছে; তবে এই দরপতন খুব একটা বেশি ছিল না, এবং এই পেয়ারগুলোর মূল্যের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা এখনো অনিশ্চিত।

প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার ৪.৫০%-এ অপরিবর্তিত রেখেছে, যা অর্থনীতিবিদদের পূর্বাভাসের সঙ্গে পুরোপুরি সঙ্গতিপূর্ণ। অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের মিশ্র ফলাফলের প্রেক্ষাপটে নেওয়া এই সিদ্ধান্ত মুদ্রানীতির ব্যাপারে ফেডের সতর্ক মনোভাব প্রতিফলিত করে। একদিকে, মুদ্রাস্ফীতি এখনো ২%০-এর লক্ষ্যমাত্রার ওপরে রয়েছে, যা ব্যাপক নজরদারির প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ করে। অন্যদিকে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধীরগতির কিছু লক্ষণ আছে, যা আরও নমনীয় নীতিমালা প্রণয়নের পক্ষে যৌক্তিকতা সৃষ্টি করেছে।

This image is no longer relevant

সংযুক্ত বিবৃতিতে, ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটি (FOMC) বলেছে, তারা আসন্ন প্রতিবেদনের ফলাফল নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে এবং অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের ভিত্তিতে প্রয়োজন হলে নীতিমালা সমন্বয় করতে প্রস্তুত থাকবে। মুদ্রাস্ফীতির প্রবণতা এবং শ্রমবাজারের অবস্থা বিশেষভাবে নজরদারির আওতায় থাকবে।

ফেডের সিদ্ধান্তে মার্কেটের ট্রেডারদের প্রতিক্রিয়া ছিল দুর্বল। বিনিয়োগকারীরা মনে হয় আগেই সুদের হার অপরিবর্তিত থাকবে বলে অনুমান করেছিল। তবে ভবিষ্যতের মুদ্রানীতি নিয়ে এখনো বিতর্ক রয়ে গেছে, এবং ফেডের পরবর্তী পদক্ষেপগুলো নির্ভর করবে অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নয়ন বা অবনতির উপর।

বৈঠক-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে ফেডের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল বলেন, নীতিনির্ধারকেরা সুদের হার পরিবর্তনে কোনো তাড়াহুড়ো করতে চান না, কারণ শুল্ক আরোপের ফলে মুদ্রাস্ফীতি ও বেকারত্ব দুটোই বাড়তে পারে। বুধবার ওয়াশিংটনে দুই দিনের বৈঠক শেষে পাওয়ল বলেন "যদি ঘোষিত শুল্ক বলবৎ থাকে, তাহলে তা সম্ভবত মুদ্রাস্ফীতি বাড়াবে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে মন্থর করবে এবং বেকারত্ব বাড়াবে।" তিনি আরও বলেন, "তবে মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব সাময়িক হতে পারে, যা কেবল একবারের পুনর্বিন্যাসের প্রতিফলন।"

এই প্রেক্ষাপটে, অর্থনৈতিক দিকনির্দেশনা নিয়ে অনিশ্চয়তা আরও বাড়ছে, এবং একই সঙ্গে বেকারত্ব ও মুদ্রাস্ফীতির ঝুঁকিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সব মিলিয়ে, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আরও মন্থর হতে পারে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির কারণে অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তার ঢেউ সৃষ্টি হয়েছে। যদিও শুল্ক নিয়ে আলোচনা চলছে, অর্থনীতিবিদদের সাধারণ মত হলো ব্যাপক হারে শুল্ক আরোপ মুদ্রাস্ফীতি বাড়াবে এবং প্রবৃদ্ধি কমিয়ে দেবে। এর ফলে ফেডের দুটি মূল লক্ষ্য—মূল্যস্ফীতির স্থিতিশীলতা ও সর্বোচ্চ কর্মসংস্থান—একটির সঙ্গে অন্যটির সাথে সাংঘর্ষিক পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। বর্তমানে মুদ্রাস্ফীতি বেশি এবং বেকারত্ব কম থাকার পরিপ্রেক্ষিতে, ফেডের কর্মকর্তারা বলছেন, যতক্ষণ না অর্থনীতির গতিপথ পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে, ততক্ষণ তারা সুদের হার অপরিবর্তিত রাখতে প্রস্তুত।

পাওয়েল বলেন, "আমরা মনে করি, আমরা এখন এমন একটি অবস্থানে আছি, যেখানে বসে পরিস্থিতির বিকাশ পর্যবেক্ষণ করা সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত।" সেইসাথে তিনি বলেন, "আমরা কোনো তাড়াহুড়োর প্রয়োজন অনুভব করছি না। ধৈর্য ধরাই যুক্তিযুক্ত মনে হচ্ছে।"

তবে, যেমনটি আগেও উল্লেখ করা হয়েছে, ট্রাম্প বারবার বলে আসছেন যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এখনই ঋণের খরচ কমানো উচিত। তারপরও, পাওয়েল গতকাল পরিষ্কার করে দিয়েছেন, যদি ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক বাস্তবায়িত হয়, তাহলে চলতি বছরে ফেড তাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের দিকে অগ্রসর হতে পারবে না।

মন্দার আশঙ্কা বাড়ছে। কিছু কোম্পানি ইতোমধ্যেই অনিশ্চয়তার কারণে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে। তবুও, শ্রমবাজার পরিস্থিতি এখনো ইতিবাচক রয়েছে: এপ্রিল মাসে নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ১৭৭,০০০ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে, যার ভিত্তিতে পাওয়েল শ্রমবাজারকে "শক্তিশালী" বলে উল্লেখ করেছেন। অর্থনীতিবিদরা বলেন, নতুন শুল্কগুলোর পূর্ণ প্রভাব অর্থনীতিতে প্রতিফলিত হতে কিছুটা সময় লাগবে।

ফেড আরও নিশ্চিত করেছে যে তারা তাদের ব্যালান্স শীট মার্চে ঘোষিত ধীর গতিতে হ্রাস করা অব্যাহত রাখবে। ট্রেজারি সিকিউরিটিজের জন্য মাসিক সীমা অপরিবর্তিতভাবে $৫ বিলিয়ন থাকবে, এবং মর্টগেজ-ভিত্তিক সিকিউরিটিজের সীমাও অপরিবর্তিতভাবে $৩৫ বিলিয়ন রাখা হয়েছে।

টেকনিক্যাল চিত্র: EUR/USD
ক্রেতাদের এখন মূল্যকে দিয়ে 1.1340 লেভেল ব্রেক করাতে হবে। কেবল এর ফলে 1.1380 লেভেল টেস্টের সুযোগ তৈরি হবে। সেখান থেকে পরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হতে পারে 1.1420 এর লেভেল, যদিও মার্কেটের বড় ট্রেডারদের সহায়তা ছাড়া মূল্যের এই লেভেলে পৌঁছানো কঠিন হবে। সর্বোচ্চ লক্ষ্যমাত্রা হলো 1.1450 এর সর্বোচ্চ লেভেল। যদি এই পেয়ারের দরপতন হয়, তবে কেবল 1.1305 এর কাছাকাছি ক্রেতাদের উল্লেখযোগ্য সক্রিয় থাকার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। যদি সেখানে আগ্রহ দেখা না যায়, তাহলে 1.1270 এর নিম্ন লেভেল রিটেস্ট না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত হবে, অথবা 1.1230 থেকে লং পজিশন বিবেচনা করা যেতে পারে।

টেকনিক্যাল চিত্র: GBP/USD
পাউন্ডের ক্রেতাদের প্রথমে মূল্যকে 1.3365 এর নিকটবর্তী রেজিস্ট্যান্স পুনরুদ্ধার করতে হবে। কেবল তখনই তারা 1.3399 লেভেলের দিকে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করতে পারবে, যেটি ব্রেকআউট করে মূল্যের উপরের দিকে যাওয়া কঠিন হতে পারে। চূড়ান্ত লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.3437 লেভেল। যদি এই পেয়ারের মূল্য হ্রাস পায়, তাহলে বিক্রেতারা মূল্যকে 1.3285 লেভেল পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করবে। যদি তারা সফল হয়, তাহলে GBP/USD পেয়ারের মূল্য এই রেঞ্জ ব্রেক করে 1.3260 এর নিম্ন লেভেল এবং সম্ভবত 1.3235 পর্যন্ত নেমে যেতে পারে।

Recommended Stories

এখন কথা বলতে পারবেন না?
আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন চ্যাট.