আরও দেখুন
ডোনাল্ড ট্রাম্পের অস্থির কর্মকাণ্ডের প্রেক্ষাপটে মার্কেটে এখনো কোনো স্পষ্ট দিকনির্দেশনা পরিলক্ষিত হচ্ছে না—যেন ট্রাম্প নিজেই নিজের চুল টেনে নিজেকে চোরাবালি থেকে বের করার মতো যুক্তরাষ্ট্রকেও গভীর এবং সর্বগ্রাসী সংকট থেকে টেনে বের করতে চাইছেন।
বিনিয়োগকারীরা যেন মেনে নিয়েছেন যে মার্কিন প্রেসিডেন্টের মাধ্যমে শুরু হওয়া এই বিশৃঙ্খল যুগ—হোক তা ভূরাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক—এখনই শেষ হচ্ছে না। যুক্তিবোধসম্পন্ন বিশ্লেষকদের মধ্যে এখন আর কোনো সন্দেহ নেই যে আমেরিকা এবং সামগ্রিকভাবে পুরো পশ্চিমা বিশ্বের ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব খর্ব হতে চলেছে। ট্রাম্পের ধারাবাহিকভাবে কৌশল পরিবর্তন, বাণিজ্য অংশীদারদের প্রতি প্রকাশ্য চাপ, এবং সাধারণ যৌক্তিকতার বাইরে গিয়ে করনীতিতে পরিবর্তন—এসবই মার্কেটে অস্থিরতা বাড়িয়ে তুলছে।
এই পরিস্থিতিতে মার্কেটের ট্রেডাররা কোনো স্থিতিশীল প্রবণতার ওপর নির্ভর করতে পারছেন না। ট্রেডাররা এই পরিস্থিতিকে ক্ষণস্থায়ী ও স্থানীয় হিসেবে দেখছেন—আজ কিনো, কাল বিক্রি করো। গুজব, সংবাদ শিরোনাম, এবং ৪৭তম প্রেসিডেন্টের যেকোনো মন্তব্যই স্বল্পমেয়াদি স্পেকুলেটিভ ট্রেডের জন্য ট্রিগার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ট্রেডাররা এখন সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফলের প্রতি প্রতিক্রিয়া জানানো অনেকাংশে বন্ধ করে দিয়েছে—এমন দৃশ্য আমি আমার ২৬ বছরের পেশাগত জীবনে দেখিনি।
ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আশংকার এই বাস্তবতা স্বর্ণের মূল্যে স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। সাপ্তাহিক চার্টে ২০২৩ সালের শরৎকাল থেকে শুরু হওয়া ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শেষে স্বর্ণের মূল্য একটি বিশৃঙ্খল সাইডওয়েজ রেঞ্জে প্রবেশ করেছে। দৈনিক চার্টে স্বল্পমেয়াদে নিম্নমুখী প্রবণতা গঠিত হচ্ছে, যার একটি শক্তিশালী রেজিস্ট্যান্স লেভেল হলো 3358.50। স্বর্ণের মূল্য এই লেভেল ব্রেক করতে ব্যর্থ হওয়ায় একটি "ডিসেন্ডিং ফ্ল্যাগ" গঠিত হয়েছে—যা সাধারণত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার ধারাবাহিকতা নির্দেশ করে। তবে বর্তমান অনিশ্চয়তার কারণে স্বর্ণের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। এই অনিশ্চয়তা স্বর্ণের মূল্যকে উল্লিখিত ফ্ল্যাগের নিচের সীমানা, প্রায় 3100.00-এর দিকে পৌঁছে দিতে পারে।
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ঘোষিত ৯০-দিনের শুল্ক যুদ্ধের বিরতি মানা হবে কি না, কর রাজস্ব হ্রাসের কারণে বাড়তে থাকা বাজেট ঘাটতি, এবং চলমান অস্থিরতার কারণে বিনিয়োগকারীরা মূলধনের বণ্টনে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছে।
আরও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে:
– কর হ্রাসের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতির সম্ভাব্য ঊর্ধ্বগতি
– এবং দীর্ঘস্থায়ী অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে মার্কেট এক প্রকার বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মধ্যেই আছে, এবং পরিস্থিতি কীভাবে এগোবে, সে ব্যাপারে কোনো সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না। এই অস্থিরতা গতকালও অব্যাহত ছিল, যখন হঠাৎ করেই বড় মার্কেটগুলোতে সরকারি বন্ড বিক্রি শুরু হয়—যা আবারও নিশ্চিত করে যে একমাত্র কার্যকর ট্রেডিং কৌশল হলো: "দ্রুত ক্রয় করো এবং দ্রুত বিক্রি করো"।
বর্তমান পরিস্থিতি দীর্ঘকাল ধরে চলমান থাকতে পারে। প্রাথমিক কৌশল হিসেবে দীর্ঘমেয়াদি পজিশনের বদলে স্বল্পমেয়াদি স্পেকুলেটিভ ট্রেডিংয়ের ওপর মনোযোগ দেয়া উচিত।
#USDX
ডলার সূচক বর্তমানে 99.40-এর ওপরে ট্রেড করছে। ডলারের ওপর চাপ অব্যাহত থাকলে এটির দর 98.85-এ নেমে যেতে পারে—বিশেষ করে যদি এটি এই লেভেল ব্রেক করে ফেলে। সম্ভাব্য শর্ট এন্ট্রি পয়েন্ট হতে পারে 99.35।
স্বর্ণ
বর্তমানে স্বল্পমেয়াদে নিম্নমুখী প্রবণতার সাথে স্বর্ণের ট্রেড করা হচ্ছে এবং আবারও দরপতন শুরু হতে পারে। যদি স্বর্ণের মূল্য 3358.50 লেভেল ব্রেক করে উপরের দিকে যেতে ব্যর্থ হয়, তাহলে এটির মূল্য 3263.75 লেভেলের দিকে নেমে যেতে পারে। স্বর্ণ বিক্রি করার জন্য সম্ভাব্য লেভেল হিসেবে 3322.42 এর লেভেল বিবেচনা করা যেতে পারে।