আরও দেখুন
যুক্তরাষ্ট্র তার উপগ্রহ ও মধ্যপ্রাচ্যের প্রক্সি—ইসরায়েল—কে ইরানের মুখোমুখি একা ফেলে রাখতে পারেনি। রোববার যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা চালায়, যদিও এই হামলাগুলো কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়। প্রত্যাশিতভাবেই ট্রেডাররা এই খবরে তুলনামূলকভাবে শান্ত প্রতিক্রিয়া দেখায়।
তেল আবিবের পাশে দাঁড়িয়ে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্র এই সংঘাতে তার 'শান্তির দূত' পরিচয়ের মুখোশ সরিয়ে ফেলেছে। বাস্তবিক অর্থে, পরিস্থিতি বিবেচনায় অন্য কিছু প্রত্যাশাও করা যাচ্ছিল না। প্রথম এবং সবচেয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল অপরিশোধিত তেলের দামে, যা ট্রেডিং সেশন শুরুর সময় ঊর্ধ্বমুখী গ্যাপ সৃষ্টি করে প্রায় 2% বাড়ে। এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত এই লাভের কিছু অংশ মুছে গেলেও, সার্বিকভাবে সংকট তীব্র হওয়ায় তেলের দাম সমর্থন পাচ্ছে। ইরান যদি হরমুজ প্রণালী অবরোধের সিদ্ধান্ত নেয়, যার ফলে বৈশ্বিক অপরিশোধিত তেলের 30% সরবরাহ বন্ধ হয়ে যেতে পারে—তাহলে তেলের দাম প্রায় নিশ্চিতভাবেই ব্যারেলপ্রতি $100 বা তার বেশি ছুঁয়ে ফেলবে, যা এই অঞ্চলের উত্তেজনার আরেকটি বড় পর্যায়ে উত্তরণ ঘটাবে।
বাকি মার্কেটগুলো এখন পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যের এই উত্তেজনার প্রতি তুলনামূলকভাবে দুর্বল প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। এর পেছনে প্রধান কারণ হলো ইরানের এই দাবি যে এই বোমাবর্ষণে কোনো উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়নি, কারণ সংঘাতের শুরুতেই পারমাণবিক উপকরণ অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। প্রধান কারেন্সিগুলোর তুলনায় মার্কিন ডলারের মান $99.00 এর আশেপাশে স্থির রয়েছে—এটি না উল্লেখযোগ্য সমর্থন পাচ্ছে, না বড় চাপের মুখে পড়ছে।
ক্রিপ্টোকারেন্সি মার্কেট বর্তমানে স্থবির অবস্থায় রয়েছে— বড় ধরনের কোনো উর্ধ্বমুখী বা নিম্নমুখী মুভমেন্টের জন্য প্রয়োজনীয় অনুঘটক অনুপস্থিত।
এশিয়ান স্টক সূচক এবং ইউরোপ ও আমেরিকার ইকুইটি ফিউচারগুলো বেশিরভাগই নিম্নমুখী প্রবণতায় ট্রেড করছে, যদিও তা কোনো ধ্বংসাত্মক মাত্রায় পৌঁছেনি। এই মৃদু প্রতিক্রিয়ার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যর্থ বোমাবর্ষণের প্রভাব রয়েছে, কারণ হামলাগুলো মূল লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে ব্যর্থ হয়েছে।
ঝুঁকি পরিহারের অন্যতম প্রধান নির্দেশক—স্বর্ণ—বর্তমানে স্পট এবং ফিউচার মার্কেটে নিম্নমুখী প্রবণতায় ট্রেড করছে। এটি প্রমাণ করে যে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন সামরিক পদক্ষেপ কার্যকর কোনো ফল বয়ে আনেনি।
এই সপ্তাহের গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট
বিনিয়োগকারীদের আসন্ন মার্কিন অর্থনৈতিক প্রতিবেদনগুলোর দিকে নিবিড় নজর রাখা উচিত। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হবে পারসোনাল কনজাম্পশন এক্সপেন্ডিচার্স (PCE) প্রাইস ইনডেক্স এবং এর কোর ভেরিয়েন্ট, পাশাপাশি আয় ও ব্যয়ের তথ্য—যা ফেডারেল রিজার্ভ এবং বিনিয়োগকারীরা সুদের হার কমানো পুনরায় শুরু হতে পারে কি না, তা নির্ধারণে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করে।
এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রান্তিকের জিডিপি প্রতিবেদনের ফলাফল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে। বিশ্লেষকরা প্রত্যাশা করছেন, সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচকগুলোতে নেতিবাচক গতি অব্যাহত থাকবে, যা ইঙ্গিত দিতে পারে যে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি মন্দার দিকে যাচ্ছে।
ফেডের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের নির্ধারিত বক্তৃতাগুলোও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে, কারণ ট্রেডাররা তার বক্তব্যের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক অবস্থা এবং ভবিষ্যৎ নীতিমালার দিক নির্দেশনার ইঙ্গিত খুঁজবে।
আজ মার্কেট থেকে কী প্রত্যাশা করা যায়
বিনিয়োগকারীরা সম্ভবত মধ্যপ্রাচ্যের ঘটনাপ্রবাহের দিকেই দৃষ্টি রাখবে। যদি পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটে—যার বাস্তব ঝুঁকি রয়েছে—তাহলে অপরিশোধিত তেল এবং পেট্রোলিয়াম পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পেতে পারে। অন্যান্য মার্কেট গুলো সম্ভবত এমন অবস্থার নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখাবে, যদিও আবারও নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণের চাহিদা ফিরে আসতে পারে।
দৈনিক পূর্বাভাস
#SPX
S&P 500 ফিউচারসের উপর ভিত্তি করা CFD কন্ট্র্যাক্ট বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনার মধ্যে সামান্য পতনের সঙ্গে ট্রেড করছে। পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে অধিকাংশ ইকুইটির চাহিদা কমে যেতে পারে—শুধুমাত্র এনার্জি ও তেল কোম্পানিগুলো হয়তো সাময়িকভাবে সমর্থন পেতে পারে, কিন্তু তা SPX সূচককে রক্ষা করার জন্য যথেষ্ট হবে না। SPX সূচক 5944.00 সাপোর্ট লেভেলের নিচে নেমে যেতে পারে, যেখানে পরবর্তী সম্ভাব্য টার্গেট হতে পারে 5915.65 এবং এমনকি 5858.35। এই সূচক বিক্রির জন্য 5940.75-এর লেভেল বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে।
#NDX
NASDAQ 100 ফিউচারসের উপর ভিত্তি করা CFD কন্ট্র্যাক্টও মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনার মধ্যে সামান্য নিম্নমুখী প্রবণতার সাথে ট্রেড করছে। উত্তেজনা বাড়লে প্রযুক্তি খাতের শেয়ারের চাহিদা কমে যেতে পারে, যার ফলে এই কন্ট্র্যাক্ট 21,324.70 এবং তারপর 21,120.40 পর্যন্ত নামতে পারে। এই সূচক বিক্রির জন্য 21,555.40-এর লেভেল বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে।