empty
 
 
08.07.2025 09:58 AM
GBP/USD পেয়ারের পর্যালোচনা ৮ জুলাই, ২০২৫

This image is no longer relevant

সোমবার GBP/USD পেয়ারের সামান্য দরপতন হয়েছে, তবে এখনই এটিকে পূর্ণাঙ্গ নিম্নমুখী প্রবণতা বলা উচিত হবে না। টেকনিক্যাল দৃষ্টিকোণ থেকে, এই পেয়ারের মূল্য এখনো মুভিং অ্যাভারেজ লাইনের নিচে অবস্থান করছে; যদিও CCI ইনডিকেটর ওভারসল্ড জোনে প্রবেশ করেছে। মার্কিন ডলারের মূল্যের শক্তিশালী বৃদ্ধির প্রত্যাশা করার মতো কোনো মৌলিক কারণ নেই। মনে করিয়ে দিই, মার্কেটএর ট্রেডাররা এখনো নির্ভরযোগ্য মার্কিন অর্থনৈতিক সংবাদ—যেমন, শ্রমবাজারের প্রতিবেদন কিংবা ফেডের চলমান হকিশ বা কঠোর নীতিকে—পুরোপুরিভাবে উপেক্ষা করে চলেছে। এটি এই ইঙ্গিত দেয় যে ট্রেডাররা ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত ঘিরে ঘটা ঘটনাবলীতেই বেশি আগ্রহী। এবং সেই ক্ষেত্রে কোনো ইতিবাচক খবর না থাকায়, ডলার শক্তিশালী হতে ব্যর্থ হচ্ছে।

সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট আবারো সংবাদ শিরোনামে উঠে আসেন। তিনি সেই দেশগুলোর উপর আগের হার অনুযায়ী শুল্ক পুনর্বহাল করার পরিকল্পনা করছেন যারা তার পছন্দ অনুযায়ী শর্ত মানতে নারাজ, এবং সেইসঙ্গে সেসব দেশকে তিনি "আমেরিকা-বিরোধী অবস্থানে" রয়েছে বলে মনে করেন তাদের উপরও অতিরিক্ত শুল্ক আরোপেরও ঘোষণা দেন। এই কথার সুনির্দিষ্ট অর্থ অস্পষ্ট এবং সাধারণত ব্যবহৃত হয় না।

প্রথমত, ব্রিকস জোটে রাশিয়া, চীন, ভারত, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইরান এবং আরও কয়েকটি বৃহৎ দেশ রয়েছে। এই দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী। এক পর্যায়ে যৌক্তিক প্রশ্ন উঠেছিল: যদি যুক্তরাষ্ট্রকে বৈরী দেশ হিসেবে দেখা হয়, তবে এখনো কেন লেনদেনে ডলার ব্যবহার করা হচ্ছে? ব্রিকস জোটভুক্ত দেশগুলোর ডলার ব্যবহার বন্ধ করার আলোচনা বহুদিন ধরেই শোনা যাচ্ছে। যদিও বাস্তবে এখনো ডলারই বৈশ্বিক প্রধান মুদ্রা হিসেবে রয়ে গেছে। একে পরিত্যাগ করা সহজ নয়, এটি তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্তও নয়—তবে সেই পথেই অগ্রসর হওয়া শুরু হয়েছে।

গত পাঁচ মাসে যেসব পদক্ষেপে ডলারের উল্লেখযোগ্য দরপতন ঘটেছে, তার অন্যতম উৎস ট্রাম্প। তিনি যেকোনো কিছু যা আমেরিকান স্বার্থের পরিপন্থী বলে মনে করেন, তার বিরোধিতা করেন। তিনি চান বিশ্ব যেন ওয়াশিংটনের নেতৃত্বে চলে, আমেরিকার নিয়ম অনুযায়ী বাণিজ্য কার্যক্রম পরিচালনা করে, আমেরিকা যে দাম চায় তা মেনে চলে এবং এমন মুদ্রা ব্যবহার করে যা আমেরিকাকে উপকৃত করে। ভাবুন—এক দেশ কিভাবে আরেক দেশকে নির্দেশ দিতে পারে, তারা কী মুদ্রায় রিজার্ভ রাখবে বা লেনদেন করবে? যদি রাশিয়া ও ভারত একে অপরের সঙ্গে বাণিজ্য করে, তাহলে কেন তারা মার্কিন ডলার ব্যবহারে বাধ্য থাকবে?

ট্রাম্পের অবস্থান বোঝা কঠিন। যদি ব্রিকস জোটভুক্ত দেশগুলো তাদের "আমেরিকা-বিরোধী নীতি" বজায় রাখে, তবে তাদের ওপর অতিরিক্ত 10% শুল্ক আরোপ হবে। আমরা দেখতেই পাচ্ছি, শুল্ক যুদ্ধ এখনো ট্রাম্পের প্রধান অস্ত্রগুলোর একটি। তাই, 75টি দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর হলেও নিশ্চিত করে বলা যায় না যে এক মাস পর ট্রাম্প আবার "বিশ্বব্যাপী কোনো অন্যায়" খুঁজে বের করে নতুন শুল্ক আরোপ করবেন না। হোয়াইট হাউজের পরিকল্পনা অনুযায়ী কিছু না ঘটলেই—শুল্ক আরোপ করা হতে পারে।

সুতরাং, আমরা প্রায় নিশ্চিত যে বৈশ্বিক শুল্ক যুদ্ধ শিগগিরই শেষ হচ্ছে না। অনেক দেশ হয়তো এখনই বুঝে গেছে, ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকাকালীন এই চাপ চলতেই থাকবে। তাই কেউ কেউ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনাই বন্ধ করে দিতে পারে। যদি তিনি শুল্ক আরোপ করতে চান—তাহলে সেটাই হোক। এতে আমেরিকারই ক্ষতি বেশি হবে। যত বেশি ক্ষতি হবে, তত দ্রুত রিপাবলিকানরা ক্ষমতা হারাবে, এবং হয়তো মাস্কের দল বা ডেমোক্র্যাটরা ক্ষমতায় আসবে—যাদের সঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতা বজায় রাখা সম্ভব।

This image is no longer relevant

গত পাঁচদিনের ট্রেডিংয়ে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের গড় অস্থিরতার মাত্রা ছিল 99 পয়েন্ট, যা এই পেয়ারের জন্য "মাঝারি" হিসেবে বিবেচিত। ৮ জুলাই, মঙ্গলবার আমরা 1.3501 এবং 1.3699 এর মধ্যবর্তী রেঞ্জে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টের প্রত্যাশা করছি। সিনিয়র লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেল ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে, যা একটি স্পষ্ট উর্ধ্বমুখী প্রবণতার সম্ভাবনা নির্দেশ করে। CCI ইনডিকেটর সম্প্রতি দ্বিতীয়বারের মতো ওভারসোল্ড জোনে প্রবেশ করেছে, যা আবারো সম্ভাব্য ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।

নিকটতম সাপোর্ট লেভেল:

  • S1 – 1.3550
  • S2 – 1.3489
  • S3 – 1.3428

নিকটতম রেজিস্ট্যান্স লেভেল:

  • R1 – 1.3611
  • R2 – 1.3672
  • R3 – 1.3733

ট্রেডিংয়ের পরামর্শ: GBP/USD পেয়ারের মূল্যের দুর্বল নিম্নমুখী প্রবণতা কারেকশন অব্যাহত রয়েছে, যা খুব শিগগিরই শেষ হতে পারে। মধ্যমেয়াদে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের গৃহীত নীতিমালার কারণে ডলারের ওপর চাপ অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। অতএব, যদি এই পেয়ারের মূল্য মুভিং অ্যাভারেজ লাইনের ওপরে অবস্থান ধরে রাখে, তাহলে 1.3699 এবং 1.3733 টার্গেটসহ লং পজিশন প্রাসঙ্গিক থাকবে। তবে যদি এই পেয়ারের মূল্য মুভিং অ্যাভারেজ লাইনের নিচে থেকে যায়, তাহলে 1.3550 এবং 1.3501 টার্গেটসহ শর্ট পজিশন বিবেচনায় আনা যেতে পারে—তবে আগের মতোই, আমরা ডলারের মূল্যের শক্তিশালী বৃদ্ধির প্রত্যাশা করছি না। মাঝে মাঝে মার্কিন মুদ্রার মূল্যের কারেকটিভ মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে, তবে শক্তিশালী দর বৃদ্ধির জন্য বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধের সমাপ্তির স্পষ্ট সংকেত প্রয়োজন।

চিত্রের ব্যাখা:

  • লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেল: বর্তমান প্রবণতা নির্ধারণে সহায়তা করে। উভয় চ্যানেল একই দিকে নির্দেশ করলে প্রবণতা বেশ শক্তিশালী বলে ধরা হয়।
  • মুভিং অ্যাভারেজ (সেটিংস: 20.0, স্মুদ): স্বল্পমেয়াদী প্রবণতা এবং ট্রেডিংয়ের কার্যকর দিক নির্ধারণ করে।
  • মারে লেভেলস: মুভমেন্ট এবং কারেকশনের টার্গেট জোন নির্দেশ করে।
  • ভোলাটিলিটি লেভেলস (লাল লাইন): বর্তমান অস্থিরতার ভিত্তিতে পরবর্তী 24 ঘণ্টার জন্য মূল্যের প্রত্যাশিত রেঞ্জ নির্দেশ করে।
  • CCI ইনডিকেটর: -250 এর নিচে থাকলে ওভারসোল্ড, +250 এর ওপরে থাকলে ওভারবট স্ট্যাটাস নির্দেশ করে—যা সম্ভাব্য ট্রেন্ড রিভার্সালের এরিয়া হতে পারে।

Recommended Stories

এখন কথা বলতে পারবেন না?
আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন চ্যাট.