আরও দেখুন
গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে দেশটির সরবরাহ শৃঙ্খলের বাণিজ্য অংশীদারদের ব্যবহার করছেন, যা চীনের প্রবৃদ্ধি এবং যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে ব্যাহত করতে পারে।
চীন বর্তমানে চূড়ান্ত পণ্য ও উপাদান উৎপাদনের জন্য দিন দিন আরও তৃতীয় দেশের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে—যা ট্রাম্পের প্রাথমিক বাণিজ্যযুদ্ধ এবং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের পর ত্বরান্বিত হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য উৎপাদিত চীনা ভ্যালু অ্যাডেড পণ্যের মধ্যে যেগুলো ভিয়েতনাম ও মেক্সিকোর মতো দেশের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়, সেই অনুপাত ২০১৭ সালে ছিল ১৪%, যা ২০২৩ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২%-এ।
অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করে বলছেন, যদি ট্রাম্প শিপমেন্ট ট্রান্সশিপমেন্টে আরও বেশি শুল্ক বা কড়াকড়ি আরোপে সফল হন, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রে চীনের মোট রপ্তানির ৭০% এবং জিডিপির ২.১%-এর বেশি হুমকির মুখে পড়তে পারে। এছাড়া, অন্যান্য দেশগুলোর চীনের সঙ্গে ব্যবসা করার আগ্রহে ভাটা পড়লে আরও অর্থনৈতিক ক্ষতির ঝুঁকি রয়েছে।
পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে, তৃতীয় দেশের মাধ্যমে বড় পরিসরে পণ্য সরবরাহ চলমান থাকায় মার্কিন শুল্কের বিরূপ প্রভাব কিছুটা প্রশমিত হয়েছে। তবে এই চালানগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ কঠোর হলে বাণিজ্যযুদ্ধের ক্ষতির মাত্রা বাড়বে এবং চীনের দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা বাধাগ্রস্ত হবে। এই প্রভাব আরও তীব্র হচ্ছে, কারণ অনেক প্রতিষ্ঠান চীনের বাইরে—বিশেষ করে ভিয়েতনাম, মেক্সিকো ও ভারতে—তাদের উৎপাদন কার্যক্রম স্থানান্তর করছে। সরবরাহ শৃঙ্খলের বৈচিত্র্য ও শুল্ক বাধা এড়াতে তারা নতুন উৎপাদন স্থাপনায় বিনিয়োগ করছে।
তবে কিছু ইতিবাচক দিকও আছে। এই বাণিজ্যযুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করেছে। উচ্চপ্রযুক্তি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেশীয় উদ্ভাবনে মনোযোগী করেছে, বিশেষ করে সেমিকন্ডাক্টর ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে। এতে চীনের প্রযুক্তিগত স্বনির্ভরতা বাড়লেও বৈশ্বিক প্রযুক্তিগত মানের বিচ্ছিন্নতার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।
উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো ছাড়াও, যুক্তরাষ্ট্র এখনো চীনের ওপর অন্যান্য দেশের মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রেখেছে। ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হতে যাওয়া নতুন শুল্ক ঘোষণার জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের পাঠানো একাধিক চিঠিতে হোয়াইট হাউস হুঁশিয়ারি দিয়েছে, ট্রান্সশিপড পণ্যের ওপর আরও বেশি শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। যদিও বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি, এতে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির জন্য আরও বিস্তৃতভাবে চীনা পণ্যকে লক্ষ্যবস্তু করার সম্ভাবনা উন্মুক্ত হবে। চীন সাধারণত মেক্সিকো ও ভিয়েতনামের মাধ্যমে পণ্য পাঠায়, ইউরোপীয় ইউনিয়নও একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট হাব হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এইভাবে পণ্য সরবরাহের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যত বাণিজ্য চুক্তিগুলোকে প্রভাবিত করতে পারে। এর লক্ষণ ইতোমধ্যে দেখা যাচ্ছে—যেমন যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য বাণিজ্য চুক্তিতে সরবরাহ শৃঙ্খলের নিরাপত্তা ও সংবেদনশীল খাতে মালিকানা অধিকারের শর্ত সংযোজিত হয়েছে।
বর্তমানে EUR/USD-এর টেকনিক্যাল দৃষ্টিকোণ থেকে: ক্রেতাদের এই পেয়ারের মূল্যকে 1.1700 লেভেলে পুনরুদ্ধারে মনোযোগী হতে হবে। কেবলমাত্র মূল্য এই লেভেলে পুনরুদ্ধার হলে 1.1720 লেভেল টেস্ট করার সম্ভাবনা উন্মুক্ত হবে। এরপর লক্ষ্যমাত্রা থাকবে 1.1750-এর লেভেল, যদিও বড় ক্রেতাদের সমর্থন ছাড়া মূল্যের এই লেভেলে যাওয়া কঠিন। দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে 1.1780-এর লেভেল বিবেচিত হচ্ছে। যদি দরপতন ঘটে, তাহলে কেবল মূল্য 1.1666 লেভেলের কাছাকাছি থাকা অবস্থায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ক্রেতাদের সক্রিয়তার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। সেখানে শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া না দেখা গেলে, এই পেয়ারের মূল্যের 1.1640-এর লেভেল পুনরায় টেস্ট হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত, অথবা 1.1615 লেভেল থেকে লং পজিশন বিবেচনা করা যেতে পারে।
GBP/USD-এর ক্ষেত্রে: পাউন্ড ক্রেতাদের এই পেয়ারের মূল্যের গুরুত্বপূর্ণ রেজিস্ট্যান্স 1.3500-এর লেভেল ব্রেক করতে হবে। কেবলমাত্র তখনই এই পেয়ারের মূল্যের 1.3540-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা উপযোগী হবে, যদিও এই পেয়ারের মূল্যের এই লেভেলের ওপরে ওঠা কঠিন হবে। দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যমাত্রা থাকবে 1.3580 লেভেল। যদি এই পেয়ারের দরপতন ঘটে, তাহলে মূল্য 1.3460-এর আশেপাশে থাকা অবস্থায় বিক্রেতারা নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করবে। তারা এতে সফল হলে মূল্য এই রেঞ্জ ব্রেক করে GBP/USD পেয়ারের মূল্য 1.3435-এর লেভেল এবং পরবর্তীতে 1.3400 লেভেলে নেমে যেতে পারে।