empty
 
 
30.07.2025 07:43 AM
৩০ জুলাই কীভাবে EUR/USD পেয়ারের ট্রেডিং করবেন? নতুন ট্রেডারদের জন্য ট্রেডিংয়ের সহজ টিপস ও বিশ্লেষণ

মঙ্গলবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ

EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট

This image is no longer relevant

মঙ্গলবার, EUR/USD পেয়ারের দরপতন অব্যাহত ছিল, যদিও তা সোমবারের মতো দ্রুতগতিতে হয়নি। মনে করিয়ে দিই, সোমবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি ঘোষণা করা হয়, যেটিকে অনেক বিশেষজ্ঞ এবং রাজনীতিবিদ ইউরোজোনের জন্য দমনমূলক বলে অভিহিত করেছেন। মূলত এই চুক্তিই মার্কেটজুড়ে ইউরোর তীব্র দরপতন এবং ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বগতির সূচনা করে। আমরা আগে থেকেই আশা করেছিলাম যে মঙ্গলবারও বিনিয়োগকারীরা এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানাবে, এবং বাস্তবেও তাই হয়েছে। তবে, একটি মাত্র ঘটনার ভিত্তিতে ডলারের দর দীর্ঘ সময় ধরে ঊর্ধ্বমুখী থাকতে পারে না। মনে রাখতে হবে, গত ছয় মাসে মার্কিন ডলারের দরপতনের প্রধান কারণ ছিল শুধুমাত্র বাণিজ্য যুদ্ধ নয়, বরং ডোনাল্ড ট্রাম্পের সুরক্ষাবাদী নীতি, যা বিশ্বব্যাপী অস্থির ও অস্থিতিশীল ডলারের প্রতি আগ্রহ হ্রাস করেছে। বাণিজ্য যুদ্ধ অবশ্যই মার্কিন ও বৈশ্বিক উভয় অর্থনীতিকে প্রভাবিত করবে, এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে চুক্তি পূর্ববর্তী শুল্কগুলোই বহাল রয়েছে — এমনকি কিছু ক্ষেত্রে তার চেয়েও বেশি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট

This image is no longer relevant

৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে মঙ্গলবার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। ইউরোপীয় ট্রেডিং সেশনের শুরুতেই নতুন ট্রেডারদের কাছে সেল পজিশন ওপেন করার সুযোগ আসে। মাত্র ১৫ মিনিট পরেই মূল্য 1.1527 লেভেলে পৌঁছে রিবাউন্ড করে এবং তখন লং পজিশন ওপেন করার সুযোগ তৈরি হয়। এরপর 1.1563–1.1571 এর কাছাকাছি নতুন একটি সেল সিগন্যাল গঠিত হয়, যার পর মূল্য আবার 1.1527 লেভেল পর্যন্ত যায়। আরেকটি রিবাউন্ড ঘটে ও আরেকবার লং পজিশন ওপেন করার সুযোগ আসে — এবং মূল্য আবার 1.1563 লেভেলে ফিরে আসে। ফলে, মঙ্গলবার ট্রেডাররা মোট চারটি ট্রেড ওপেন করতে পেরেছেন, যেগুলোর প্রতিটিই লাভজনক হয়েছে।

বুধবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:

ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে আবারও EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী কারেকশন শুরু হয়েছে, যার মূল কারণ হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের অসম বাণিজ্য চুক্তি। যেহেতু সাম্প্রতিক সময়ে ট্রাম্পের অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আসেনি, এবং পাওয়েলের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ও চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ এখনও প্রভাব বিস্তার করছে, তাই আমরা এখনো মধ্যমেয়াদে ডলারের শক্তিশালী হওয়ার বিশেষ কারণ দেখছি না। সুতরাং, স্বল্পমেয়াদে ডলারের দর আরও কিছুটা বাড়তে পারে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে তা অসম্ভব বলেই মনে হচ্ছে।

বুধবার, স্থানীয় পর্যায়ে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী কারেকশন অব্যাহত থাকতে পারে, এবং আমরা নতুন ট্রেডারদের 1.1563–1.1571 এরিয়া নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করার পরামর্শ দিচ্ছি। এই জোন থেকে রিবাউন্ড হলে এই পেয়ারের মূল্য 1.1527 এবং 1.1474-এর দিকে যাবে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে শর্ট পজিশন ওপেন করা যেতে পারে। যদি এই পেয়ারের মূল্য এই জোনের উপরে কনসোলিডেট করে, তাহলে 1.1655–1.1666-এর দিকে যাবে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে নতুন লং পজিশন বিবেচনা করা যেতে পারে।

৫ মিনিট টাইমফ্রেমে গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.1198–1.1218, 1.1267–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1563–1.1571, 1.1655–1.1666, 1.1740–1.1745, 1.1808, 1.1851, 1.1908।

বুধবার জার্মানি, ইউরোজোন এবং যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় প্রান্তিকের জিডিপি প্রতিবেদন প্রকাশের কথা রয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রে ফেডের বৈঠকের ফলাফলও জানানো হবে। তাই আজকের দিনটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্টে পরিপূর্ণ থাকবে।

ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:

  1. সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
  2. ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
  3. ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
  4. ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
  5. MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
  6. নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
  7. স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।

চার্টের মূল উপাদান:

সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।

লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।

ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Recommended Stories

এখন কথা বলতে পারবেন না?
আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন চ্যাট.