empty
 
 
31.07.2025 07:32 AM
GBP/USD পেয়ারের পর্যালোচনা – ৩১ জুলাই: যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতি ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে

This image is no longer relevant

বুধবার GBP/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের সামান্য ঊর্ধ্বমুখী কারেকশন পরিলক্ষিত হয়েছে, এবং দিনের বেশিরভাগ সময়জুড়ে এই পেয়ারের ট্রেডিং নিষ্প্রাণ ও শান্ত ছিল। বুধবার সকালের বিশ্লেষণে আমরা যেমনটি পূর্বাভাস দিয়েছিলাম, জার্মানি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি প্রতিবেদনগুলো মার্কেটে খুব একটা উত্তেজনা সৃষ্টি করেনি, এবং যথারীতি, এই আর্টিকেলে আমরা ফেডের বৈঠকের ফলাফল নিয়ে আলোচনা করছি না। আমরা পাঠকদের আবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, আমাদের মতে ফেডারেল রিজার্ভের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর মার্কেট শান্ত হতে সাধারণত ১২–২৪ ঘণ্টা সময় লাগে। এমনকি যদি প্রথমিকভাবে কোনো অস্থিরতা না-ও দেখা দেয়, তবুও বিনিয়োগকারীদের তথ্য বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে সময় প্রয়োজন। প্রায়ই দেখা যায়, ফেডের বৈঠকের ঠিক পরপরই মূল্য একদিকে তীব্রভাবে মুভমেন্ট প্রদর্শন করে, কিন্তু পরদিন সকালে আবার আগের লেভেলে ফিরে আসে। তাই আমরা সবসময় দ্রুত সিদ্ধান্ত না নেয়ার পরামর্শ দিই।

এই আর্টিকেলে আমরা ফেডের মুদ্রানীতির ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা এবং যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে আলোচনা করব। গত কয়েক মাসে মার্কিন কনজ্যুমার প্রাইস ইনডেক্স বা ভোক্তা মূল্য সূচক সামান্য বেড়েছে, কিন্তু অনেক বিশ্লেষকের প্রত্যাশার তুলনায় তা অনেক কম। কেন এমন হয়েছে, তা আমরা ইতোমধ্যেই ব্যাখ্যা করেছি। প্রথমত, গত তিন মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্রে "সুবিধাজনক" এবং কম হারে শুল্ক চালু ছিল। উদাহরণস্বরূপ, ইউরোপীয় আমদানির ওপর শুল্ক এখন ১৫% পর্যন্ত বেড়েছে। দ্বিতীয়ত, মার্কিন উৎপাদক ও খুচরা বিক্রেতারা আগেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিল, ফলে তারা পুরোনো দামে মজুদকৃত পণ্য বিক্রি করে কয়েক মাস পার করতে পেরেছে। তাই মুদ্রাস্ফীতিতে সেই প্রভাব এখনও পুরোপুরিভাবে প্রতিফলিত হয়নি — কেবল ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায় শুরু হয়েছে মাত্র।

অতএব, আগামী মাসগুলোতে যদি বাণিজ্য চুক্তি সই হওয়ার পরও শুল্ক কার্যকর থাকে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতি আরও বাড়বে — এবং এটি শুধু সম্ভাবনা নয়, তা আবশ্যিক বলেই বিবেচনা করা উচিত। এমন পরিস্থিতিতে, বছরের শেষ নাগাদ ফেডের দুই দফায় সুদের হার হ্রাসের সম্ভাবনাও কমে যাবে। তবে বাড়তি মুদ্রাস্ফীতি একটি দ্বিমুখী তলোয়ার। এর পাশাপাশি শ্রমবাজার দুর্বল হতে শুরু করতে পারে। যদি মাসের পর মাস কর্মসংস্থান এবং বেকারত্ব সংক্রান্ত প্রতিবেদনের ফলাফল প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়, তবে ফেড তার দ্বিতীয় ম্যান্ডেট — অর্থাৎ সর্বোচ্চ কর্মসংস্থান — রক্ষার বাধ্যবাধকতার দিকে ফিরতে বাধ্য হবে। সে ক্ষেত্রে ফেডকে মূল সুদের হার কমাতেই হবে।

মূলত, ফেড এমন এক দ্বিধামূলক অবস্থায় পড়ে যেতে পারে যেখানে একদিকে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে — ফলে সুদের হার কমানো সম্ভব হবে না; অন্যদিকে শ্রমবাজার ভেঙে পড়ছে — সুদের হার হার কমানো দরকার। জেরোম পাওয়েল এবং ফেড এর মধ্যে কোন দিক বেছে নেবে তা পূর্বানুমান করা অসম্ভব। এছাড়াও ট্রাম্পের পক্ষ থেকে পাওয়েল ও ফেডের ওপর ক্রমাগত চাপের বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হবে, কারণ ট্রাম্পের দৃষ্টিতে কখনোই মুদ্রাস্ফীতি বাড়তি নয় — তার প্রয়োজন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি।

এছাড়াও লক্ষ্যণীয়, গত কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্রের নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠী কম খরচ করতে শুরু করেছে, কিন্তু জাতীয় চাহিদা প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে। এটি প্রমাণ করে দরিদ্ররা আরও দরিদ্র হচ্ছে এবং ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে — এটি এমন একটি পরিস্থিতি যা ট্রাম্পের দৃষ্টিতে ইতিবাচক। মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলো সামগ্রিক পরিসংখ্যান, এটি না-যে সমাজের দুর্বল জনগোষ্ঠীর অবস্থা কেমন। মুদ্রাস্ফীতি মূলত ক্ষতিগ্রস্ত করে নিম্নআয়ের জনগণকে, ধনকুবেরদের নয়। সেজন্যই উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি ট্রাম্পকে শঙ্কিত করে না — তার দরকার জিডিপি প্রবৃদ্ধি এবং আরও বেশি টাকা, টাকা, টাকা।

This image is no longer relevant

গত পাঁচ দিনের ট্রেডিংয়ে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের গড় ভোলাটিলিটি ছিল 96 পিপস। পাউন্ড/ডলার পেয়ারের ক্ষেত্রে এটিকে "মধ্যম" মাত্রার বলে ধরা হয়। তাই বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই আমরা 1.3185 এবং 1.3377 এর রেঞ্জের মধ্যে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টের প্রত্যাশা করছি। দীর্ঘমেয়াদি লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেল ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা নির্দেশ করছে, যা একটি স্পষ্ট ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা ইঙ্গিত দেয়। CCI ইন্ডিকেটর দুইবার ওভারসোল্ড জোনে প্রবেশ করেছে, যা বুলিশ প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার সম্ভাবনার সংকেত দিচ্ছে। বর্তমানে নতুন করে এই পেয়ারের মূল্যের কারেকটিভ মুভমেন্ট শুরু হয়েছে।

নিকটতম সাপোর্ট লেভেল:

S1 – 1.3245

S2 – 1.3184

S3 – 1.3123

নিকটতম রেজিস্ট্যান্স লেভেল:

R1 – 1.3306

R2 – 1.3367

R3 – 1.3428

ট্রেডিংয়ের পরামর্শ:

GBP/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের একটি টেকনিক্যাল ডাউনওয়ার্ড কারেকশন শুরু হয়েছে। তবে মাঝারি মেয়াদে ট্রাম্পের গৃহীত অবস্থান ডলারের ওপর চাপ বজায় রাখবে বলেই সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে, যদি এই পেয়ারের মূল্য মুভিং অ্যাভারেজের ওপরে অবস্থান করে, তাহলে 1.3550 এবং 1.3611 লক্ষ্যমাত্রায় ধরে লং পজিশন ওপেন করা এখনও প্রাসঙ্গিক। অন্যদিকে, যদি মূল্য মুভিং অ্যাভারেজের নিচে থাকে, তাহলে শুধুমাত্র টেকনিক্যাল প্রেক্ষাপট বিবেচনায় 1.3245 এবং 1.3184-এর লক্ষ্যমাত্রা ধরে শর্ট পজিশন ওপেন করা যেতে পারে। মাঝে মাঝে মার্কিন ডলারের মূল্যের কারেকশন হয়, কিন্তু প্রবণতা-ভিত্তিক শক্তিশালী বৃদ্ধির জন্য বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধের সমাপ্তির প্রকৃত ইঙ্গিত দরকার — যা এই মুহূর্তে বেশ অসম্ভব বলেই মনে হচ্ছে।

চার্টের ব্যাখা:

লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেলস বর্তমান প্রবণতা নির্ধারণে সহায়তা করে। যদি উভয় চ্যানেল একই দিকে থাকে, তাহলে তা একটি শক্তিশালী প্রবণতা নির্দেশ করে।

মুভিং অ্যাভারেজ লাইন (সেটিংস: 20,0, স্মুদেড) স্বল্পমেয়াদি প্রবণতা নির্ধারণ করে এবং ট্রেডিংয়ের দিকনির্দেশনা প্রদান করে।

মারে লেভেলস মুভমেন্ট এবং কারেকশনের লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে।

ভোলাটিলিটি লেভেলস (লাল লাইন) বর্তমান অস্থিরতার মাত্রার তথ্যের ভিত্তিতে আগামী 24 ঘণ্টায় পেয়ারের মূল্যের সম্ভাব্য রেঞ্জ নির্দেশ করে।

CCI ইনডিকেটর: যদি এটি -250 এর নিচে ওভারসোল্ড বা +250 এর ওপরে ওভারবট জোনে প্রবেশ করে, তবে এটি প্রবণতা বিপরীতমুখী হওয়ার পূর্বাভাস দেয়।

Recommended Stories

এখন কথা বলতে পারবেন না?
আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন চ্যাট.