আরও দেখুন
মার্কিন শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, 4.3% বেকারত্বের হার উদ্বেগ সৃষ্টি করছে যে অনিশ্চয়তা এবং ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধ সম্পর্কিত ব্যয় বৃদ্ধির আঘাতে মার্কিন শ্রমবাজার আরও একটি বড় মন্দার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে।
বেকারত্বের হার 4.3%-এ পৌঁছানো কেবল কোনো প্রতিবেদনের সংখ্যা নয়। এটি এমন একটি জটিল চিত্র উপস্থাপন করছে যেখানে পরস্পর সংযুক্ত অর্থনৈতিক শক্তিগুলো ক্রমে আমেরিকার কর্মসংস্থানের ভিত্তি ক্ষয় করছে। ট্রাম্প প্রশাসনের শুরু করা বাণিজ্যযুদ্ধ এক প্রকার অনুঘটকের মতো কাজ করেছে, যা একটি শৃঙ্খল প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। উচ্চতর শুল্ক এবং বাণিজ্য বাধা শুধু মার্কিন কোম্পানিগুলোর উৎপাদন খরচ বাড়ায়নি, বরং অস্থির পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে, যা ব্যবসাগুলোকে সম্প্রসারণ এবং নতুন কর্মী নিয়োগ থেকে নিরুৎসাহিত করেছে।
অনিশ্চয়তাই শ্রমবাজারের সবচেয়ে বড় শত্রুতে পরিণত হয়েছে। উদ্যোক্তারা আগামী দিনে কী ঘটতে পারে তা নিশ্চিত না হয়ে বড় বিনিয়োগ স্থগিত করছে এবং সম্ভাব্য অর্থনৈতিক অস্থিরতার প্রস্তুতি হিসেবে কৌশলগতভাবে কর্মী ছাঁটাই করছে। এ প্রভাব বিশেষভাবে দৃশ্যমান আন্তর্জাতিক বাণিজিনির্ভর খাতগুলোতে—যেমন ম্যানুফ্যাকচারিং, কৃষি এবং লজিস্টিক্স।
বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাবে ব্যয় বৃদ্ধি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ছোট এবং মাঝারি আকারের ব্যবসাগুলোর ওপর চাপ তৈরি করছে, যারা দেশটির কর্মসংস্থানের মেরুদণ্ড হিসেবে বিবেচিত হয়। অনেক প্রতিষ্ঠান এই বাড়তি আর্থিক বোঝা বহন করতে না পেরে টিকে থাকতে কর্মী ছাঁটাই করতে বাধ্য হচ্ছে। এর ফলে ভোক্তা চাহিদা হ্রাস পাচ্ছে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আরও মন্থর হচ্ছে।
প্রতিবেদনে গত মাসের কর্মসংস্থান সংক্রান্ত প্রতিবেদনের ফলাফলকেও নিশ্চিত করেছে, যেখানে প্রত্যাশার তুলনায় অত্যন্ত স্বল্প নিয়োগ দেখা গিয়েছিল। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে কর্মসংস্থানের প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে মন্থর হয়েছে, শূন্যপদ হ্রাস পেয়েছে এবং মজুরি প্রবৃদ্ধিও ধীর হয়েছে—যা সামগ্রিক অর্থনৈতিক কার্যকলাপে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
মার্কেটের ট্রেডাররা ধারণা করছে শুক্রবারের প্রতিবেদন সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গিকে নাটকীয়ভাবে বদলে দিয়েছে। বাস্তবে, নীতিনির্ধারকরা এটাই আশা করছিল। সাধারণত, মার্কিন শ্রমিকদের জন্য এ ধরনের খারাপ খবর ওয়াল স্ট্রিটের জন্য ইতিবাচক হয়, কারণ এটি ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। এটি আরও বেশি ঋণগ্রহণ, আরও প্রবৃদ্ধি, স্টকের দর বৃদ্ধি এবং ডলারের দরপতনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
মার্কেটে যেমনটি দেখা যাচ্ছে, কারেন্সি ট্রেডাররা সময় নষ্ট না করে ডলারভিত্তিক অ্যাসেটের বিক্রি অব্যাহত রেখেছে।
EUR/USD-এর বর্তমান টেকনিক্যাল চিত্রের ক্ষেত্রে, ক্রেতাদের এখন এই পেয়ারের মূল্যকে 1.1740-এর লেভেল ব্রেক করে ওপরের দিকে নিয়ে যেতে হবে। কেবল তখনই এই পেয়ারের মূল্যের 1.1781 লেভেল টেস্টের সুযোগ তৈরি হবে। সেখান থেকে মূল্যের 1.1825 পর্যন্ত ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে, যদিও বড় ট্রেডারদের সহায়তা ছাড়া এটি অর্জন করা কঠিন হবে। চূড়ান্ত লক্ষ্যমাত্রা হলো 1.1875-এর উচ্চতা। অন্যদিকে, দরপতনের ক্ষেত্রে আমি কেবল মূল্য 1.1705 এর আশেপাশে থাকা অবস্থায় ক্রেতাদের মধ্যে এই পেয়ার ক্রয়ের শক্তিশালী আগ্রহের প্রত্যাশা করছি। যদি সেখানেও ক্রেতারা সক্রিয় না হয়, তবে 1.1660 লেভেল টেস্টের জন্য অপেক্ষা করা বা 1.1630 থেকে লং পজিশন ওপেন করাই উত্তম হবে।
GBP/USD-এর বর্তমান টেকনিক্যাল চিত্রের ক্ষেত্রে, পাউন্ডের ক্রেতাদের এই পেয়ারের মূল্যের 1.3520 নিকটবর্তী রেজিস্ট্যান্স অতিক্রম করাতে হবে। কেবল তখনই মূল্যকে 1.3550-এর লক্ষ্যমাত্রার দিকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে, যার ওপরে মূল্যের আরও ঊর্ধ্বমুখী হওয়া কঠিন হবে। চূড়ান্ত লক্ষ্যমাত্রা হলো 1.3590 লেভেল। অন্যদিকে, দরপতনের ক্ষেত্রে মূল্য 1.3485 এর আশেপাশে থাকা অবস্থায় বিক্রেতারা পুনরায় নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করবে। তারা সফল হলে, এই রেঞ্জ ব্রেক করে GBP/USD পেয়ারের মূল্য দ্রুত 1.3450-এর দিকে নেমে যাবে এবং পরবর্তীতে 1.3415 পর্যন্ত পৌঁছানোর সম্ভাবনা তৈরি হবে।