empty
 
 
19.09.2025 11:37 AM
নতুন প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় পাউন্ডের দরপতন ঘটেছে

ব্রিটিশ পাউন্ডের আবারও দরপতন শুরু হয়েছে, কারণ আগস্ট মাসে যুক্তরাজ্য সরকারের ঋণগ্রহণের পরিমাণ পূর্বাভাস ছাড়িয়ে গেছে—যা আসন্ন শরতের বাজেটের আগে চ্যান্সেলর অব দ্য এক্সচেকার র্যাচেল রিভসের জন্য একটি বড় ধাক্কা। এমনকি খুচরা বিক্রয় প্রতিবেদনের শক্তিশালী ফলাফলও পাউন্ডকে সহায়টা করতে ব্যর্থ হয়েছে, যেটির ফলাফল অর্থনীতিবিদদের প্রত্যাশার চেয়ে ইতিবাচক এসেছিল।

This image is no longer relevant

শুক্রবার প্রকাশিত ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্স অফিসের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যের ঋণ ঘাটতি দাঁড়িয়েছে 18 বিলিয়ন পাউন্ড স্টার্লিং-এ, যা বাজেট রেসপনসিবিলিটি অফিসের 12.5 বিলিয়ন পাউন্ডের পূর্বাভাসের অনেক উপরে এবং গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় মাসিক ঋণগ্রহণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

অপ্রত্যাশিতভাবে ঋণগ্রহণের মাত্রা বৃদ্ধির ফলে যুক্তরাজ্যের ইতোমধ্যেই জটিল অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে, যা ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি এবং মন্থর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। ট্রেডাররা সঙ্গে সঙ্গে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে এবং যুক্তরাজ্যের সরকারের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। পাউন্ড কিছুটা দরপতনের শিকার হয়েছে, যা ব্রিটিশ অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের আস্থা হ্রাসের সংকেত দিচ্ছে। ঋণগ্রহণের মাত্রা আরও বাড়তে থাকলে যুক্তরাজ্যের ক্রেডিট রেটিংয়ের অবনমন হতে পারে, যা বিনিয়োগ আকর্ষণকে আরও কঠিন করে তুলবে এবং সরকারি ঋণ পরিশোধের খরচ বাড়িয়ে তুলবে।

র্যাচেল রিভস এখন কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে, যেখানে তাকে এমন একটি বাজেট প্রস্তুত করতে হবে যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করবে কিন্তু ঋণের বোঝা বাড়াবে না। তাকে অবকাঠামো ও সামাজিক কর্মসূচিতে বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা এবং সরকারি অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে ব্যয় সংকোচনের দাবির মধ্যে ভারসাম্য আনতে হবে। এই শরতে প্রকাশিতব্য বাজেট যুক্তরাজ্য সরকারের জন্য একটি বড় পরীক্ষা হবে। এর ফলাফল শুধু আগামী কয়েক বছরের অর্থনৈতিক নীতিমালাই নির্ধারণ করবে না, বরং পাউন্ডের মূল্যের ভবিষ্যৎও নির্ধারণ করবে, যা সরকারের প্রতিটি ঘোষণা ও পরিকল্পনার পরিবর্তনের প্রতি তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাবে।

অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাস শেষে বাজেট ঘাটতি দাঁড়িয়েছে 83.8 বিলিয়ন পাউন্ডে, যা বাজেট রেসপনসিবিলিটি অফিসের পূর্বাভাসের চেয়ে 11.4 বিলিয়ন বেশি এবং এক বছর আগের তুলনায় 67.6 বিলিয়ন পাউন্ড বেশি। এই অবনতির পেছনে রয়েছে জনসেবা, সামাজিক সুবিধা এবং ঋণের সুদ প্রদানে ব্যয় বৃদ্ধি, পাশাপাশি প্রতিকূল সংশোধিত পূর্বাভাসও এতে ভূমিকা রেখেছে।

ঋণ পরিষেবার বাড়তি খরচ, ধারাবাহিকভাবে আর্থিক নীতিমালার পরিবর্তন, এবং বাজেট রেসপনসিবিলিটি অফিস কর্তৃক উৎপাদনশীলতার প্রত্যাশিত নিম্নমুখী সংশোধন চ্যান্সেলরের নিজস্ব আর্থিক নিয়ম ভাঙতে পারে, যেখানে বলা হয়েছে 2029–30 অর্থবছরের মধ্যে রাজস্ব দিয়ে বর্তমান ব্যয় মেটাতে হবে।

উল্লেখযোগ্য যে, আগস্ট মাসে যুক্তরাজ্যের খুচরা বিক্রয় প্রত্যাশার চেয়ে বেশি হারে বেড়েছে। শুক্রবার প্রকাশিত ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্স অফিস জানিয়েছে, অনলাইন ও দোকানে বিক্রিত পণ্যের পরিমাণ 0.5% বেড়েছে, যা জুলাই মাসের সংশোধিত 0.5% বৃদ্ধির সাথে মিলে গেছে। উষ্ণ আবহাওয়ার কারণে পোশাক ও বেকারি পণ্যের বিক্রি বেড়েছে, যা কম্পিউটার ও টেলিযোগাযোগ সরঞ্জামের দোকানের বিক্রি হ্রাসকে পুষিয়ে দিয়েছে। অর্থনীতিবিদরা খুচরা বিক্রয় সূচকের 0.4% প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। এই প্রতিবেদনটি নিশ্চিত করছে যে ভোক্তারা গ্রীষ্মকালে কর্মী ছাঁটাই, মজুরি বৃদ্ধির ধীরগতি এবং মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির সতর্কতাকে উপেক্ষা করেছেন, যার একটি বড় অংশ লেবার সরকারের 26 বিলিয়ন পাউন্ড মজুরি ব্যয়ের বৃদ্ধির ফল। স্পষ্টতই, খুচরা বিক্রয় সূচকের শক্তিশালী ফলাফল এখন চ্যান্সেলর র্যাচেল রিভসকে কিছুটা স্বস্তি দেবে।

বর্তমানে GBP/USD পেয়ারের টেকনিক্যাল চিত্রের ক্ষেত্রে, পাউন্ডের ক্রেতাদের এখন এই পেয়ারের মূল্যকে নিকটবর্তী রেজিস্ট্যান্স 1.3570-এ পুনরুদ্ধার করতে হবে। কেবল তখনই তারা এই পেয়ারের মূল্যকে 1.3620 লেভেলের লক্ষ্যমাত্রায় নিয়ে যেতে পারবে, যা ব্রেক করা কঠিন হবে। সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হলো 1.3655 লেভেল। অন্যদিকে, যদি দরপতন ঘটে, তবে মূল্য 1.3495 লেভেলে থাকা অবস্থায় বিক্রেতারা মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করবে। এই লেভেল ব্রেক করা হলে সেটি GBP/USD ক্রেতাদের জন্য বড় ধাক্কা হবে এবং এই পেয়ারের মূল্য 1.3455 লেভেলে নেমে যেতে পারে, যেখানে আরও দরপতন হয়ে 1.3420 পর্যন্ত পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

Recommended Stories

এখন কথা বলতে পারবেন না?
আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন চ্যাট.