আরও দেখুন
গতকাল ক্লিভল্যান্ড ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট লোরেটা হ্যাম্যাকের এক সাক্ষাৎকার ট্রেডারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। তিনি বলেন যে তিনি এখনও মুদ্রাস্ফীতির হার নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং বাড়তি অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা এড়াতে সুদের হার কমানোর ক্ষেত্রে নীতিনির্ধারকদের সতর্ক থাকা উচিত। এই মন্তব্যটি বেশ বিস্ময়কর ছিল—বিশেষত গত সপ্তাহেই ফেড কর্তৃক সুদের হার হ্রাসের পর।
হ্যাম্যাক উল্লেখ করেন যে সাম্প্রতিক সময়ে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হার ধীর হয়ে সার্বিকভাবে শ্রমবাজার স্থিতিশীল রয়ে গেছে, যেখানে কর্মী ছাঁটাই এবং বেকারত্বের হার কম রয়েছে। একই সময়ে, মুদ্রাস্ফীতি গত চার বছরেরও বেশি সময় ধরে ফেডের 2%-এর লক্ষ্যমাত্রার উপরে রয়েছে এবং আগামী কয়েক বছরেও লক্ষ্যমাত্রা নাও অর্জিত হতে পারে।
তার মন্তব্যগুলো মুদ্রানীতি নমনীয় করার সাধারণ প্রবণতার বিপরীতে গিয়ে বিশ্লেষক ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। ট্রেডাররা ক্লিভল্যান্ড ফেডের প্রধান কর্তাব্যক্তির বক্তব্যকে এই সংকেত হিসেবে নিয়েছিল যে, ভবিষ্যতে সুদের হার হ্রাসের গতি মন্থর হতে পারে। এর ফলে ইকুইটি মার্কেটে কিছুটা অস্থিরতা দেখা যায় এবং মার্কিন ডলার সাময়িকভাব্বে এই পরিস্থিতি থেকে সহায়তা পেয়েছিল।
সোমবার ক্লিভল্যান্ড ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে এক আলোচনায় হ্যাম্যাক বলেন, "আমার মনে হয় আমাদের মুদ্রানীতি নমনীয় করার ক্ষেত্রে খুব সতর্ক হওয়া উচিত। আমি উদ্বিগ্ন যে যদি আমরা এই সীমাবদ্ধতাগুলো তুলে নিই, অর্থনীতি আবারও অতিরিক্ত অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে।"
হ্যাম্যাকের বক্তব্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো মুদ্রাস্ফীতির স্থায়ী চাপের উপর তার দৃষ্টি। চলমান শুল্ক যুদ্ধ এবং অনিশ্চিত বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ফেডের শীর্ষ অগ্রাধিকার রয়ে গেছে। একদিকে, সুদের হার কমানো হলে তা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করে, অন্যদিকে এটি মুদ্রাস্ফীতি বাড়িয়ে দিতে পারে, যা ভবিষ্যতে আবারও নীতিমালা কঠোর করার প্রয়োজন সৃষ্টি করতে পারে। এই দুই লক্ষ্যের মধ্যে সঠিক ভারসাম্য রক্ষা করাই ফেডের প্রধান চ্যালেঞ্জ।
বর্তমানে ফেডের নেতৃত্ব সক্রিয়ভাবে আলোচনা করছে যে এই বছর সুদের হার আরও কতটা কমানো যায়, বিশেষত গত সপ্তাহে সুদের হার হ্রাসের পর, যা ডিসেম্বরের পর প্রথমবারের মতো করা হয়েছে। কিছু নীতিনির্ধারক ক্রমবর্ধমানভাবে শ্রমবাজারের ঝুঁকি নিয়ে উদ্বিগ্ন, আবার অন্যরা মূলত ধারণ করছে যে শুল্ক এবং অন্যান্য পদক্ষেপগুলো মুদ্রাস্ফীতিকে লক্ষ্যমাত্রার উপরে নিয়ে যেতে পারে।
হ্যাম্যাক বলেন, গত সপ্তাহে সুদের হার হ্রাসের পর আর্থিক নীতিমালা এখন "খুব মাঝারি পর্যায়ে" কঠোর রয়েছে, যা সুদের হারকে নিরপেক্ষ লেভেলের কাছাকাছি নিয়ে এসেছে—যা প্রবৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করে না, আবার বাধাও সৃষ্টি করে না। তিনি আরও বলেন, "আমি মনে করি শ্রমবাজার এখনও যথেষ্ট ইতিবাচক অবস্থায় রয়েছে এবং আমি মুদ্রাস্ফীতি পরিস্থিতি নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন।"
এদিকে, কারেন্সি মার্কেটের ট্রেডাররা হ্যাম্যাকের বক্তব্যে উল্লেখযোগ্য প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।
EUR/USD পেয়ারের টেকনিক্যাল প্রেক্ষাপট: বর্তমানে এই পেয়ারের মূল্যকে 1.1820 লেভেলে পুনরুদ্ধার করা ক্রেতাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। কেবল তখনই 1.1850 লেভেল টেস্ট করা সম্ভব হবে। সেখান থেকে পেয়ারটির মূল্য 1.1882 লেভেলের দিকে যেতে পারে, তবে বড় ট্রেডারদের সমর্থন ছাড়া এটি করা কঠিন হবে। চূড়ান্ত লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.1920-এর লেভেল। যদি দরপতন ঘটে, আমি আশা করি মূল্য 1.1785 লেভেলের কাছাকাছি থাকা অবস্থায় উল্লেখযোগ্য ক্রয়ের আগ্রহ দেখা দেবে। যদি তা না হয়, তাহলে 1.1760 লেভেল টেস্টের জন্য অপেক্ষা করাই উচিত হবে অথবা 1.1725 লেভেল থেকে লং পজিশন ওপেন করার কথা বিবেচনা করা যেতে পারে।
GBP/USD পেয়ারের টেকনিক্যাল প্রেক্ষাপট: পাউন্ড ক্রেতাদের জন্য মূল লক্ষ্য হল এই পেয়ারের মূল্যের নিকটতম রেজিস্ট্যান্স 1.3540 লেভেল ব্রেক করানো। কেবল তখনই এই পেয়ারের মূল্যকে 1.3565 লেভেলের লক্ষ্যমাত্রায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে, যার উপরে ওঠা কঠিন হবে। চূড়ান্ত লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.3605 লেভেল। যদি এই পেয়ারের দরপতন ঘটে, তাহলে মূল্য 1.3490 লেভেলের কাছাকাছি থাকা অবস্থায় বিক্রেতারা মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করবে। এই লেভেল ব্রেকআউট হয়ে মূল্য নিম্নমুখী হলে সেটি বুলিশ পজিশনের জন্য বড় আঘাত হবে এবং GBP/USD পেয়ারের মূল্য 1.3455 লেভেলে নেমে যেতে পারে, এরপর 1.3415 লেভেল পর্যন্ত দরপতন প্রসারিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।