আরও দেখুন
ডলার দরপতনের সাথে নতুন সপ্তাহ শুরু করেছে। সোমবার ডলার সূচক 0.2% হ্রাস পেয়েছে, যা টানা দ্বিতীয় দিনের মতো দরপতন নির্দেশ করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি শাটডাউনের সম্ভাবনার কারণে—যেখানে দুই রাজনৈতিক দলই নিজেদের অবস্থানে অনড়—স্বল্পমেয়াদে ডলারের মূল্য উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত হতে পারে। এ সপ্তাহে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মার্কিন অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যার মধ্যে শুক্রবার প্রকাশিতব্য মাসিক কর্মসংস্থান সংক্রান্ত প্রতিবেদন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
মার্কিন অর্থনীতির ওপর ড্যামোক্লিসের তলোয়ারের মতো ঝুলে থাকা শাটডাউনের সম্ভাবনা কারেন্সি মার্কেটে উল্লেখযোগ্য অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। ট্রেডাররা, যারা সাধারণত অশান্ত সময়গুলোতে নিরাপদ অ্যাসেটে আশ্রয় খোঁজেন, তারা এখন স্থিতিশীল অ্যাসেটে মূলধন স্থানান্তর করতে শুরু করেছেন, যা ইতোমধ্যেই ডলারের ওপর সরাসরি চাপ সৃষ্টি করছে। সরকারি কার্যক্রমের তহবিল অনুমোদনে বিলম্ব, ফেডারেল কর্মীসংখ্যা হ্রাস, এবং ভোক্তা কার্যকলাপের পতন—সবগুলোই মার্কিন অর্থনৈতিক কর্মক্ষমতাকে দুর্বল করতে পারে।
এই সপ্তাহে বিশেষ মনোযোগ থাকবে গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ওপর, বিশেষত কর্মসংস্থান সংক্রান্ত প্রতিবেদনের উপর। এই প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল শ্রমবাজারের অবস্থা এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক হিসেবে কাজ করবে। যদি ফলাফল প্রত্যাশার চেয়ে দুর্বল হয়, তাহলে সম্ভাব্য শাটডাউনের নেতিবাচক প্রভাব আরও বেড়ে যেতে পারে এবং ডলারের আরও দরপতন হতে পারে। অন্যদিকে, কর্মসংস্থান প্রতিবেদনের শক্তিশালী ফলাফল কিছুটা হলেও উদ্বেগ কমাতে পারে এবং স্বল্পমেয়াদে মার্কিন মুদ্রাকে সহায়তা করতে পারে।
ডলারের বিপরীতে ইয়েনের মূল্যের শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, কারণ জাপানে নিজস্ব অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হতে যাচ্ছে এবং দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বক্তব্য অনুষ্ঠিত হবে বলে নির্ধারিত আছে। এছাড়া, শাসক দল আগামী শনিবার নতুন নেতা নির্বাচিত করবে। ট্রেডাররা ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন, এই বিষয়গুলো ফেডের সুদের হার কমানো বা ব্যাংক অব জাপানের সুদের হার বৃদ্ধির প্রত্যাশাকে প্রভাবিত করে কি না। যেকোনো একটি বা উভয় পরিস্থিতিই ডলার-ইয়েনের এক্সচেঞ্জ রেটে প্রভাব ফেলবে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিনিয়োগকারীদের ফেডের ভবিষ্যৎ সুদের হার কমানোর প্রত্যাশা হ্রাস পাওয়ার কারণে ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গিয়েছিল। ফেডের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল সম্প্রতি আবারও উল্লেখ করেছেন যে নীতিনির্ধারকদের সামনে একটি চ্যালেঞ্জিং পথ অপেক্ষা করছে, কারণ শ্রমবাজার এবং মুদ্রাস্ফীতি ঝুঁকিপূর্ণ পর্যায়ে রয়ে গেছে, যা আর্থিক নীতিমালা নমনীয় করার প্রত্যাশা হ্রাস করেছে।
EUR/USD-এর টেকনিক্যাল চিত্র অনুযায়ী ক্রেতাদের এখন এই পেয়ারের মূল্যকে 1.1750 লেভেলে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে হবে। কেবল মূল্য এই লেভেল অতিক্রম করলে 1.1780-এ পৌঁছানো সম্ভব হবে। সেখান থেকে এই পেয়ারের মূল্য 1.1820 পর্যন্ত উঠতে পারে, যদিও বড় বিনিয়োগকারীদের সহায়তা ছাড়া এটি করা কঠিন হবে। সর্বোচ্চ লক্ষ্যমাত্রা 1.1845 লেভেলে নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে, দরপতনের ক্ষেত্রে কেবল মূল্য 1.1705 লেভেলের কাছাকাছি থাকা অবস্থায় আমি ক্রেতাদের ব্যাপক সক্রিয়তার আশা করছি । যদি কেউ সেখানে সক্রিয় না হয়, তবে এই পেয়ারের মূল্যের 1.1670-এ পুনরায় নেমে যাওয়ার অপেক্ষা করা বা 1.1650 থেকে নতুন লং পজিশন ওপেন করাই উচিত হবে।
GBP/USD-এর টেকনিক্যাল চিত্র অনুযায়ী পাউন্ডের ক্রেতাদের এখন এই পেয়ারের মূল্যকে 1.3460 রেজিস্ট্যান্স লেভেল অতিক্রম করাতে হবে। কেবল এই লেভেল ব্রেক করলে 1.3500-এর দিকে মুভমেন্টের সম্ভাবনা রয়েছে, যদিও এই পেয়ারের মূল্যকের পক্ষে এর উপরে ওঠা বেশ চ্যালেঞ্জিং হবে। সর্বোচ্চ লক্ষ্যমাত্রা 1.3534-এ নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে, যদি এই পেয়ারের দরপতন শুরু হয়, তাহলে মূল্য 1.3410 লেভেলে থাকা অবস্থায় বিক্রেতারা মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করবে। এই এরিয়া সফলভাবে ব্রেকআউট করে মূল্য নিম্নমুখী হলে সেটি বুলিশ পজিশনের ওপর বড় ধরনের চাপ হবে এবং GBP/USD পেয়ারের দর 1.3370-এ নেমে যেতে পারে, এমনকি 1.3330 পর্যন্তও দরপতন ঘটতে পারে।