empty
 
 
10.11.2025 09:30 AM
ইসিবির গৃহীত পদক্ষেপ বেশ ভালো ফলাফলই প্রদর্শন করছে

সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপীয় মুদ্রা (ইউরো) তুলনামূলকভাবে আত্মবিশ্বাসী মুভমেন্ট প্রদর্শন করছে—যার একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ECB) প্রতিনিধিগণ কর্তৃক গৃহীত "অপেক্ষা ও পর্যবেক্ষণ" ভিত্তিক অবস্থান।

ইসিবির গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য বোরিস ভুজসিক সম্প্রতি পুনরায় উল্লেখ করেছেন যে, বর্তমানে মুদ্রানীতি যথাযথ স্তরে রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ইসিবি তাদের কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করেছে—যেখানে অর্থনৈতিক মন্দার সম্ভাবনা তৈরি না করেই তারা মুদ্রাস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে।

This image is no longer relevant

ভুজসিক এমন এক সময়ে এই মন্তব্য করেছেন, যখন ইউরোজোনে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির স্থায়ীত্ব নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। যদিও মুদ্রাস্ফীতির লাগাম টেনে ধরার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে, তবে অনেক বিশ্লেষক ধারণা করছেন এখনও আত্মতুষ্ট হওয়ার সময় আসেনি। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিচ্ছেন, ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং জ্বালানি সংকটের মতো ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়ের কারণে ভবিষ্যতে আবারও মূল্যস্ফীতির চাপ দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে, অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, সাম্প্রতিক সময়ে মুদ্রাস্ফীতি কমার মূল কারণ হলো জ্বালানি মূল্য হ্রাস, যেখানে মূল মুদ্রাস্ফীতি (যে সূচকটি অস্থির উপাদানগুলো বাদ দিয়ে বিবেচনা হয়) এখনও তুলনামূলকভাবে উচ্চস্তরে রয়েছে। এর মানে হলো, যদি আবারও জ্বালানি সংকট দেখা দেয় বা ভোক্তা চাহিদা হঠাৎ বেড়ে যায়, তাহলে মূল্যস্ফীতির চাপ পুনরায় ফিরে আসতে পারে।

এছাড়াও, ইসিবির কঠোর মুদ্রানীতি বিনিয়োগ কার্যক্রম এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ঋণের খরচ বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে অর্থনৈতিক গতিশীলতা হ্রাস পেয়েছে। এখন, যখন মুদ্রাস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রার নিকটে রয়েছে, তখন ইসিবির জন্য সবচেয়ে কঠিন কাজ হচ্ছে—মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে কঠোর অবস্থান বজায় রাখা এবং অর্থনীতিকে সহায়তা দেওয়ার মাঝে ভারসাম্য রক্ষা করা।

মিয়ামিতে একটি ইভেন্ট চলাকালীন সময়ে ক্রোয়েশিয়ার এই কর্মকর্তা উল্লিখিত মন্তব্য করেছেন, ঠিক এক সপ্তাহ পরেই যখন ইসিবি টানা তৃতীয় বৈঠকে ঋণের সুদের হার অপরিবর্তিত রেখেছে। ইসিবি এ ব্যাপারে আশ্বস্ত যে, বর্তমানে যে মুদ্রানীতি অনুসরণ করা হচ্ছে, তা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হচ্ছে—একই সঙ্গে অর্থনীতির উপরও বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে না।

যেহেতু মুদ্রাস্ফীতি এখন ২%-এর লক্ষ্যমাত্রার আশেপাশে রয়েছে এবং তৃতীয় প্রান্তিকে ইউরোজোনের জিডিপি প্রতিবেদনের ফলাফল প্রত্যাশার চেয়ে ইতিবাচক এসেছে, তাই অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন—এখনই সুদের হার পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। উল্লেখ্য, মুদ্রানীতির এই চক্রে ইসিবির এখন পর্যন্ত সুদের হার ৮ বার কমিয়ে ৪% থেকে ২%-এ নামিয়ে এনেছে।

এখন এটা প্রায় নিশ্চিত যে, ডিসেম্বর মাসে বছর শেষে অনুষ্ঠেয় ইসিবির চূড়ান্ত বৈঠকেই পরবর্তী তিন বছরের মুদ্রাস্ফীতির সম্ভাবনা সম্পর্কে বেশি স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে, কারণ তখনই ত্রৈমাসিক পূর্বাভাস হালানাগাদ করা হবে। তবে ইসিবির অভ্যন্তরেও কয়েকজন কর্মকর্তা আশঙ্কা করছেন—নতুন পূর্বাভাসগুলো ভবিষ্যতের লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে নাও সঙ্গতিপূর্ণ হতে পারে।

এছাড়া ভুজসিক ইউরোপীয় অর্থনীতির সামনে থাকা কয়েকটি বড় ঝুঁকির কথাও তুলে ধরেছেন—যার মধ্যে অন্যতম হলো ইউরোজোন সরকারগুলোর মধ্যে রাজস্ব শৃঙ্খলার অভাব এবং ফিন্যান্সিয়াল মার্কেটে অ্যাসেটের অতিমূল্যায়নের লক্ষণ।

EUR/USD-এর বর্তমান টেকনিক্যাল পূর্বাভাস অনুযায়ী—ক্রেতাদের এখন এই পেয়ারের মূল্যকে নিশ্চিতভাবে 1.1570 লেভেলে ধরে রাখতে হবে। শুধুমাত্র তারপরেই তারা এই পেয়ারের মূল্যের 1.1590-এর লেভেল পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে পারবে। সেখান থেকে মূল্য 1.1610-এর দিকে যেতে পারে, যদিও বড় ট্রেডারদের সহযোগিতা ছাড়া এটা করা বেশ কঠিন হবে। সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.1636 লেভেল। তবে যদি এই পেয়ারের মূল্য হ্রাস পায়, তাহলে আমি কেবলমাত্র মূল্য 1.1545-এর আশপাশে থাকা অবস্থায় উল্লেখযোগ্য ক্রয় কার্যক্রমের আশা করছি। যদি সেখানে বড় কোনো ক্রেতা সক্রিয় না থাকে, তাহলে 1.1520 পর্যন্ত পুনরায় দরপতনের জন্য অপেক্ষা করা যুক্তিযুক্ত হবে কিংবা 1.1490 থেকে লং পজিশন ওপেন করার কথা বিবেচনা করা যেতে পারে।

অন্যদিকে, GBP/USD-এর টেকনিক্যাল পূর্বাভাস

অনুযায়ী, পাউন্ডের ক্রেতাদের এই পেয়ারের মূল্যের 1.3150 রেজিস্ট্যান্স লেভেল নিয়ন্ত্রণে নেওয়া প্রয়োজন। শুধুমাত্র তখনই তারা এই পেয়ারের মূল্যের 1.3180-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করতে পারবে—যার ওপরে ব্রেকআউট করা তুলনামূলকভাবে কঠিন হবে। সবচেয়ে বেশি দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হতে পারে 1.3215 লেভেল। তবে যদি পেয়ারের মূল্য হ্রাস পায়, তাহলে বিক্রেতারা পুনরায় 1.3135 লেভেলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করবে। যদি তারা এতে সফল হয়, তাহলে সেটি ব্রেক করে মূল্য নিম্নমুখী হলে সেটি ক্রেতাদের উপর বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি করবে এবং GBP/USD পেয়ারের মূল্যকে 1.3095 পর্যন্ত নিম্নমুখী করতে পারে, যার পরে মূল্যের 1.3056-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে।

Recommended Stories

এখন কথা বলতে পারবেন না?
আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন চ্যাট.