empty
 
 
13.05.2025 11:13 AM
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার বাণিজ্য যুদ্ধে ৯০ দিনের বিরতি। মার্কিন মুদ্রাস্ফীতির প্রতিবেদনের অপেক্ষায় ট্রেডাররা (EUR/USD এবং GBP/USD-এর দরপতনের উচ্চ সম্ভাবনা রয়েছে)

সোমবার, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের ঘোষণার পর ট্রেডাররা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। এই চুক্তির আওতায় পারস্পরিক শুল্ক হ্রাস করা হয়েছে, তবে তা শুধুমাত্র ৯০ দিনের জন্য।

ট্রাম্প, যথারীতি, আমেরিকান জনগণকে শান্ত রাখতে এবং চীনকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করতে কৌশলী অবস্থান বজায় রাখছেন—সেটা হচ্ছে তার ইচ্ছার প্রতি আত্মসমর্পণ। ওয়াশিংটন ৯০ দিনের জন্য কাস্টমস শুল্ক কমাতে সম্মত হয়েছে। পশ্চিমা বিশ্বে এই পদক্ষেপকে "যুদ্ধবিরতি" বলা হচ্ছে, যা দুই দেশের বর্তমান সম্পর্কের প্রকৃত স্বরূপকে প্রতিফলিত করে: বাণিজ্য যুদ্ধ।

হ্যাঁ, ট্রেডাররা কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে, কিন্তু এই পদক্ষেপ কি প্রকৃত সমস্যার সমাধান করেছে? সম্ভবত না। দেখা যাচ্ছে, ট্রাম্প এই পদক্ষেপ নিয়েছেন কারণ যুক্তরাষ্ট্রে অভ্যন্তরীণ মূল্যস্ফীতি প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার অবস্থানকে দুর্বল করছে, যেখানে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের তীব্র বিরোধিতা রয়েছে। এই পদক্ষেপকে বাণিজ্য যুদ্ধে একটি বড় পশ্চাদপসরণ হিসেবেও দেখা যেতে পারে, যা ইঙ্গিত দেয় যে বেইজিং হয়তো ক্রমশ সুবিধাজনক অবস্থানে পৌঁছাচ্ছে। যদিও আরোপিত শুল্ক হারের দিক থেকে ট্রাম্পই এগিয়ে আছেন—যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা চীনা পণ্যের উপর ৩০% এবং চীনে প্রবেশ করা আমেরিকান পণ্যের উপর ১০%—তবুও এই পশ্চাদপসরণ আমেরিকান প্রেসিডেন্টের জন্য আদর্শগত পরাজয়ের ইঙ্গিত বহন করে।

মার্কেটের ট্রেডাররা এখন এটিকে অস্থায়ী পরিস্থিতি হিসেবে দেখছেন, যা ঝুঁকিপূর্ণ অ্যাসেটের চাহিদার সীমিত বৃদ্ধির দিকে নিয়ে যেতে পারে। কেননা, ৯০ দিনের সময়সীমা শেষ হলে ট্রাম্প তার বাণিজ্যনীতিতে নতুন কোনো "মোড়" আনতে পারেন, যা মার্কেটে আবার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে। তবে এই সম্ভাবনাও রয়েছে যে যুদ্ধবিরতির আড়ালে এই শুল্কহার আরও দীর্ঘ সময়ের জন্য বহাল থাকবে, এবং ট্রাম্পের "বিজয়" নিয়ে শোরগোল নিঃশব্দে মিলিয়ে যাবে।

যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনের দিকে দৃষ্টি

বাণিজ্য যুদ্ধে বিরতির খবরের পর, ট্রেডাররা এখন যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রাস্ফীতির প্রতিবেদনের দিকে দৃষ্টি দিচ্ছে। সম্মিলিত পূর্বাভাস অনুযায়ী, কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স বা ভোক্তা মূল্য সূচক (CPI)-এর বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার হেডলাইন ও কোর দুই ক্ষেত্রেই স্থিতিশীল থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে মাসিক ভিত্তিতে বড় ধরনের বৃদ্ধির প্রত্যাশা হচ্ছে: মার্চের -0.1% থেকে এপ্রিল মাসে হেডলাইন CPI 0.3%-এ বেড়ে যেতে পারে, এবং কোর CPI 0.15% থেকে বেড়ে 0.3% হতে পারে। বিরোধীপক্ষের অনুগত সংবাদমাধ্যম ইতোমধ্যেই এই মুদ্রাস্ফীতিকে "ট্রাম্পফ্লেশন" নামে অভিহিত করেছে।

ট্রেডারদের প্রতিক্রিয়া কেমন হতে পারে?

যদি আসন্ন মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনের ফলাফল প্রত্যাশা অনুযায়ী বা তার চেয়ে বেশি আসে, তাহলে এটি ডলারের জন্য সহায়ক হতে পারে, যেটি ইতিমধ্যেই ICE ডলার সূচকে 101.00-এর ওপরে ট্রেড করছে। এটি 102.00 লেভেলের ওপরে ওঠার সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে। একই সময়ে, উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি ক্রিপ্টোকারেন্সি মার্কেটে উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং স্টক সূচকের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে, কারণ মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পেলে সেটি ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হ্রাসের সম্ভাবনা কমিয়ে দিতে পারে। অন্যদিকে, যদি মুদ্রাস্ফীতি প্রত্যাশার চেয়ে কম হয়, তাহলে ঠিক বিপরীত প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে।

This image is no longer relevant

This image is no longer relevant

দৈনিক পূর্বাভাস
EUR/USD
এই পেয়ার 1.1080 সাপোর্ট লেভেলের ওপরে ট্রেড করছে। যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পেলে আবারও এই পেয়ারের দরপতন শুরু হতে পারে। মূল্য এই লেভেলের নিচে নামলে বিয়ারিশ মোমেন্টাম তীব্র হতে পারে এবং 1.0965 এর লক্ষ্যমাত্রার দিকে দরপতনের সম্ভাবনা থাকবে। এই পেয়ার বিক্রির জন্য উপযুক্ত লেভেল হতে পারে 1.1092।

GBP/USD
এই পেয়ার 1.3210 রেজিস্ট্যান্স লেভেলের নিচে ট্রেড করছে। যুক্তরাষ্ট্রে ভোক্তা মূল্যস্ফীতি বাড়লে এই পেয়ারের উপর চাপ তৈরি হতে পারে এবং এটির দর আবার 1.3085 লক্ষ্যমাত্রার দিকে নেমে যেতে পারে। বিক্রির জন্য সম্ভাব্য এন্ট্রি পয়েন্ট হতে পারে 1.3180।

Recommended Stories

এখন কথা বলতে পারবেন না?
আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন চ্যাট.