আরও দেখুন
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশের পরপরই EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের তীব্র দরপতন ঘটেছে। প্রবাদে যেমন বলা হয়, কোনো কিছুই বিপদের ইঙ্গিত দিচ্ছিল না। পরপর কয়েক দিন ধরে, ট্রেডাররা এই পেয়ারের মূল্যকে দিয়ে 1.1666 লেভেল ব্রেক করাতে ব্যর্থ হয়েছে, এবং তাদের মধ্যে সেই প্রচেষ্টা চালানোর কোনো আগ্রহও দেখা যায়নি। কিন্তু, এখন রুটিন মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন ডলারের শক্তিশালী দর বৃদ্ধির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেন?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সামগ্রিক মুদ্রাস্ফীতি জুন মাসে বেড়ে 2.7% হয়েছে, যা পূর্বাভাস অনুযায়ীই ছিল। মূল মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে 2.9% হয়েছে, যা প্রত্যাশার তুলনায় কম। অর্থাৎ, সামগ্রিকভাবে মুদ্রাস্ফীতি প্রত্যাশার চেয়ে কম হারে বেড়েছে। তবে যেহেতু এটি বৃদ্ধি পেয়েছে, তাই নিকট ভবিষ্যতে ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা কার্যত শূন্য, যা অবশ্যই ডলারের মূল্যের বুলিশ প্রবণতা সৃষ্টির কারণ হিসেবে বিবেচনা করা যায়।
তবে এই কারণটি গত ছয় মাস ধরেই সক্রিয় রয়েছে, কারণ ফেড পুনরায় আর্থিক নীতিমালা নমনীয় করার প্রক্রিয়া শুরু করেনি এবং তা শিগগিরই শুরু করার পরিকল্পনাও নেই। মঙ্গলবারের মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনের ফলে ফেডের অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আসেনি। সুতরাং, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে এটি একটি নিছক টেকনিক্যাল কারেকশন, যেখানে ট্রেডাররা এই পেয়ার বিক্রির জন্য কেবল একটি আনুষ্ঠানিক অজুহাত ব্যবহার করেছে।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে মঙ্গলবার কয়েকটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছে। আমাদের মতে, এর কোনোটিতেই ট্রেডে এন্ট্রি করা উচিত ছিল না। মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশের সময় মার্কেটে অস্থিরতা শুরু হয় এবং "ব্যাপক" মুভমেন্ট দেখা যায়। শেষ পর্যন্ত, এই পেয়ার 1.1655–1.1666 জোনের নিচে কনসোলিডেট করে, তবে মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশের পর ডলারের দর বৃদ্ধির বিষয়টি এখনো প্রশ্নবিদ্ধ—বিশেষ করে দুই সপ্তাহ আগে শ্রমবাজার, ব্যবসায়িক কার্যকলাপ এবং বেকারত্ব সম্পর্কিত প্রতিবেদনের ইতিবাচক ফলাফলের প্রতি ট্রেডারদের শান্ত প্রতিক্রিয়ার কথা বিবেচনা করলে।
ঘন্টাভিত্তিক চার্টে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের কারেকশন অব্যাহত রয়েছে, তবে গত ছয় মাসব্যাপী চলমান ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এখনো অটুট রয়েছে। আমরা মনে করি না এটি ডলারের দরপতনের সমাপ্তি নির্দেশ করে। ছয় মাস ধরে ডলার দুর্বল হয়েছে এবং বর্তমানে কেবল একটি কারেকশন হচ্ছে। ট্রাম্পের অবস্থানে কোনো আমূল পরিবর্তন আসেনি যা মার্কিন কারেন্সির মূল্যের নতুন বুলিশ প্রবণতা শুরু হওয়ার যৌক্তিকতা প্রদান করে।
বুধবার EUR/USD পেয়ারের আরও দরপতন চলমান থাকতে পারে, কারণ ঘন্টাভিত্তিক চার্টে বিয়ারিশ প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। আমরা এখনো ডলার কেনার কোনো মৌলিক কারণ দেখছি না, তবে ট্রেডাররা সম্ভবত দেখছে। সম্ভাবনা রয়েছে যে এখন বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগ থেকে মুনাফা গ্রহণ করছে, বিশেষত লং পজিশন থেকে মুনাফা গ্রহণ করা হচ্ছে।
৫ মিনিটের চার্টে নিম্নোক্ত লেভেলগুলোর উপর লক্ষ্য রাখুন: 1.1198–1.1218, 1.1267–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1561–1.1571, 1.1609, 1.1655–1.1666, 1.1740–1.1745, 1.1808, 1.1851, 1.1908।
বুধবার ইউরোজোনে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নির্ধারিত নেই, যখন যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদক মূল্যসূচক (PPI) এবং শিল্প উৎপাদন সংক্রান্ত পরিসংখ্যান প্রকাশিত হবে। এগুলো খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ কোনো প্রতিবেদন নয়, তাই এই পেয়ারের মূল্যের অস্থিরতার মাত্রা কম থাকতে পারে। যদি আজ আবারও মার্কিন ডলার শক্তিশালী হয়, তাহলে সেটি আমাদের এই দৃষ্টিভঙ্গিকে আরও জোরালো করবে যে এই পেয়ারের মূল্যের বর্তমান মুভমেন্টটি কেবল একটি কারেকশন।
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।