আরও দেখুন
সোমবার 4-ঘন্টার টাইমফ্রেমে, EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্য তীব্রভাবে বিপরীতমুখী হয় এবং শক্তিশালী দরপতন ঘটে। আমাদের দৃষ্টিতে, এই মুভমেন্ট অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং বার্তাবহ। আসুন বিস্তারিতভাবে বিশ্লেষণ করি।
সোমবার রাতে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লায়েনের সঙ্গে যৌথভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের ঘোষণা দেন। চুক্তির প্রধান প্রধান দিকগুলো হলো:
তৎক্ষণাৎ যে প্রশ্নটি উঠে আসে তা হলো: যুক্তরাষ্ট্র কী প্রতিশ্রুতি দিয়েছে? এই প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই। হয়তো মার্কিন পক্ষের দায়বদ্ধতা গণ্যমাধ্যমে প্রকাশ পায়নি, অথবা আদৌ তেমন কিছু নেই। ট্রাম্প একতরফা ও একচেটিয়াভাবে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য লাভজনক চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন — একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়। আর ইউরোপীয় ইউনিয়ন? কী-ই বা বলা যায়? ট্রাম্পের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারার মতো শক্তিশালী একটি সত্তা হিসেবে যাকে মনে করা হচ্ছিল, সেই ইইউ শেষ পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্টের সামনে নতি স্বীকার করলো। আরও একবার শান্তিপ্রিয় ও সচ্ছল ইউরোপ দেখিয়ে দিলো যে, প্রকৃত চাপের মুখে তারা পিছু হটতে প্রস্তুত এবং সীমান্তের অভ্যন্তরে শান্তি বজায় রাখার স্বার্থে একতরফা চুক্তিও মেনে নিতে পারে।
কেন ইউরোর দরপতন ঘটল?
এটাও ব্যাখ্যার দাবি রাখে। ইউরোর দরপতন ঘটেছে শুধু এই কারণে যে, ফন ডার লায়েনের নেতৃত্বে যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে তা ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য অত্যন্ত অমার্জনীয়। মূলত এই চুক্তিতে শুধু শুল্কই আরোপ করা হয়নি, বরং ইউরোপীয় ইউনিয়নকে যুক্তরাষ্ট্রে বিশাল অঙ্কের ব্যয় ও বিনিয়োগে বাধ্য করা হয়েছে। এর ফলে মার্কিন ডলার শক্তিশালী হয়েছে — কিন্তু এর অর্থ কি মধ্যমেয়াদে ডলারের জন্য ইতিবাচক ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে?
ধরে নেই, ট্রাম্প জাপান ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো সকল প্রধান বাণিজ্য অংশীদারদের সঙ্গে অনুরূপ চুক্তি স্বাক্ষর করতে সক্ষম হবেন। তাহলে এর মানে দাঁড়াবে যে, যুক্তরাষ্ট্র আগের মতোই বৈশ্বিক বাণিজ্য কার্যক্রম চালিয়ে যাবে — তবে অনেক বেশি অনুকূল শর্তে। এক্ষেত্রে, 2025 সালে ডলার বিক্রির যে প্রবণতা দেখা গিয়েছিল তা নিছকই একটি ভ্রান্ত ধারণা বলে প্রমাণিত হবে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে, ডলারের মূল্য দরপতনের সূচনালগ্ন অর্থাৎ 1.03 লেভেলে ফিরে যাওয়ার কথা। কিন্তু এটি কি বাস্তবসম্মত?
আমাদের মতে, তা সম্ভব নয়। ট্রাম্প সত্যিই একচেটিয়াভাবে সুবিধাজনক বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন, তবে যুক্তরাষ্ট্রে ইউরোপীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাবে, যার ফলে চাহিদা কমবে। ফলস্বরূপ, বাণিজ্যের পরিমাণ কমে যাবে এবং মূল্য বাড়বে। ট্রাম্প মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে ভাবেন না এবং "সস্তা" ডলারের ওপর নির্ভর করেন। তাই, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইউরো-ডলারের দর প্যারিটি লেভেলের কাছাকাছি পৌঁছেছে ডলারের আবার দর বৃদ্ধি পেতে দেবেন — এমনটি বলা কঠিন।
তদুপরি, শুধু বাণিজ্য যুদ্ধের জন্যই নয়, ট্রাম্পের নেতৃত্বশৈলীর কারণেও ডলার দুর্বল হয়েছে। অনেক বিনিয়োগকারী এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার দেশ পরিচালনার ধরনে অসন্তুষ্ট — এবং এই পরিস্থিতিতে কোনো পরিবর্তন আসেনি। তবে এখন আমরা স্বল্পমেয়াদি দৃষ্টিকোণ থেকে মার্কিন ডলারের উল্লেখযোগ্য শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিচ্ছি না।
গত পাঁচ দিনের ট্রেডিংয়ে (২৯ জুলাই পর্যন্ত) EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গড় ভোলাটিলিটি ছিল 86 পিপস, যা "মধ্যম" পর্যায়ের অস্থিরতা হিসেবে বিবেচিত হয়। আমরা প্রত্যাশা করছি যে, মঙ্গলবার এই পেয়ারের মূল্য 1.1507 এবং 1.1679 লেভেলের মধ্যে মুভমেন্ট প্রদর্শন করবে। দীর্ঘমেয়াদি লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেল এখনো ঊর্ধ্বমুখী অবস্থানে রয়েছে, যা চলমান ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার ইঙ্গিত দেয়। CCI ইনডিকেটর আবারো ওভারসোল্ড জোনে প্রবেশ করেছে, যা সম্ভাব্যভাবে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার সংকেত হতে পারে।
S1 – 1.1597
S2 – 1.1536
S3 – 1.1475
R1 – 1.1658
R2 – 1.1719
R3 – 1.1780
EUR/USD পেয়ারের মূল্যের একটি নতুন কারেকটিভ মুভমেন্টের ধাপ শুরু হয়েছে। মার্কিন ডলার এখনো ট্রাম্পের বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ নীতির দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত হচ্ছে। সপ্তাহের শুরুতে ডলার শক্তিশালী ছিল, তবে আমাদের মতে, এটি এখনো মধ্যমেয়াদি ক্রয় করার যৌক্তিকতা তৈরি করে না। যতক্ষণ পর্যন্ত এই পেয়ারের মূল্য মুভিং অ্যাভারেজের নিচে থাকে, ততক্ষণ এই পেয়ারের মূল্যের 1.1536 এবং 1.1507-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে শর্ট পজিশন বিবেচনায় রাখা যেতে পারে। অন্যদিকে, যদি মূল্য মুভিং অ্যাভারেজের ওপরে উঠে যায়, তাহলে বর্তমান প্রবণতার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এই পেয়ারের মূল্যের 1.1780 এবং 1.1841-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে লং পজিশন এখনও প্রাসঙ্গিক থাকবে।
লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেলস বর্তমান প্রবণতা নির্ধারণে সহায়তা করে। যদি উভয় চ্যানেল একই দিকে থাকে, তাহলে তা একটি শক্তিশালী প্রবণতা নির্দেশ করে।
মুভিং অ্যাভারেজ লাইন (সেটিংস: 20,0, স্মুদেড) স্বল্পমেয়াদি প্রবণতা নির্ধারণ করে এবং ট্রেডিংয়ের দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
মারে লেভেলস মুভমেন্ট এবং কারেকশনের লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে।
ভোলাটিলিটি লেভেলস (লাল লাইন) বর্তমান অস্থিরতার মাত্রার তথ্যের ভিত্তিতে আগামী 24 ঘণ্টায় পেয়ারের মূল্যের সম্ভাব্য রেঞ্জ নির্দেশ করে।
CCI ইনডিকেটর: যদি এটি -250 এর নিচে ওভারসোল্ড বা +250 এর ওপরে ওভারবট জোনে প্রবেশ করে, তবে এটি প্রবণতা বিপরীতমুখী হওয়ার পূর্বাভাস দেয়।