empty
 
 
01.08.2025 10:34 AM
ট্রাম্প মার্কেটে ধস নামালেন। এখন মার্কিন কর্মসংস্থান সংক্রান্ত প্রতিবেদনের দিকে মনোযোগ দেয়া হচ্ছে (EUR/USD এবং AUD/USD পেয়ারের দরপতন পুনরায় শুরু হতে পারে)

মার্কেটে আলোড়ন সৃষ্টিকারী শিরোনাম তৈরির ক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট এখনো বিশ্বের প্রধান উৎস হিসেবে রয়ে গেছেন, যিনি একা-হাতে ফিন্যান্সিয়াল মার্কেটকে দুই দিকেই দোলাতে পারেন।

বৃহস্পতিবার, বিনিয়োগকারীরা উদ্দীপিত হয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার ওপর ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যক্তিগত শুল্ক জয়ের খবর মার্কেটে মূল্যায়ন করতে শুরু করেন, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্র লাভবান এবং কোরিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হবে—এমন ধারণা তৈরি হয়। এর ফলে স্টক, কমোডিটি এবং কাঁচামালের চাহিদা বেড়ে যায়, এবং মার্কিন ডলারের মূল্যের কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দেয়। তবে, এই পরিস্থিতি বেশিক্ষণ বজায় থাকেনি। বিনিয়োগকারীদের মাঝে আশাবাদ হারিয়ে যায় যখন গণমাধ্যম মনে করিয়ে দেয় যে ১ আগস্ট ঘনিয়ে আসছে—এবং এই সময়ের মধ্যেও ট্রাম্প চীন বা ভারতের মতো গুরুত্বপূর্ণ ও অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী দেশের সাথে চুক্তিতে পৌঁছাতে পারেননি, যারা যুক্তরাষ্ট্রে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করে থাকে।

গতকাল ট্রাম্প উত্তেজনা আরও বাড়ান, শুধু চীন ও ভারত নয়—তিনি ব্রাজিলকেও উচ্চ হারে শুল্ক আরোপের হুমকি দেন। পাশাপাশি, ব্রিকস সদস্যদের—বিশেষ করে ব্রাজিল এবং ভারতকে—বিনাশমূলক নিষেধাজ্ঞার ভয় দেখান। স্বাভাবিকভাবেই, এই নতুন সংঘাত মার্কেটের ট্রেডাররা উপেক্ষা করতে পারেনি, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ইকুইটি মার্কেটে কারেকশন শুরু হয় এবং আজ সকালের সেশনে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে এর প্রভাব পড়েছে।

যদিও এসব নতুন কিছু নয়, বিনিয়োগকারীরা এখন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতোই বৈশ্বিক পরিস্থিতির ওপর গভীর নজর রাখছেন, কারণ এ মুহূর্তে ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তনই মূল বিনিয়োগ পরিস্থিতি নির্ধারণ করছে। ট্রাম্পের নেতিবাচক প্রভাব ট্রেডারদের বুলিশ প্রবণতার সম্ভাবনা পানি ঢেলে দিয়েছে।

এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত, এশিয়ার স্টক সূচকগুলোতে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, ঠিক যেমনটি ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ফিউচার সূচকেও দেখা যাচ্ছে। অবশ্যই, ১ আগস্টের আগমন এবং তার সঙ্গে থাকা বৃদ্ধপ্রায় আধিপত্যবাদীর শুল্ক হুমকিগুলো মার্কেটে চাপ তৈরি করছে—তবে প্রশ্ন হলো: এই নেতিবাচক পরিস্থিতি কতদিন স্থায়ী হবে?

যদি ট্রাম্প "আগ্রাসী দেশগুলোর" বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য না করেন, তাহলে আমার মনে হয় বিনিয়োগকারীদের মনোযোগ ধীরে ধীরে আরও নির্দিষ্ট বিষয়ে স্থানান্তরিত হবে—যার মধ্যে একটি হলো জুলাই মাসের যুক্তরাষ্ট্রের কর্মসংস্থান সংক্রান্ত প্রতিবেদন। সর্বসম্মত পূর্বাভাস অনুযায়ী, নতুন নন-ফার্ম পেরোলের সংখ্যা 106,000-এ পৌঁছাতে পারে, যা এক মাস আগে ছিল 147,000। বেকারত্বের হার 4.1%-এর জায়গায় 4.2% হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, অন্যদিকে বার্ষিক গড় ঘণ্টাপ্রতি আয় 3.7%-এর পরিবর্তে 3.8% এবং জুলাই মাসে 0.2%-এর তুলনায় 0.3% বাড়তে পারে।

এর বাইরে, ট্রেডারদের দৃষ্টি গত মাসের উৎপাদন সংক্রান্ত PMI-এর দিকেও থাকবে, যা 52.9 থেকে কমে প্রতীকী 50-এর নিচে 49.5-এ নেমে আসতে পারে।

মার্কেটের ট্রেডাররা এসব খবরের প্রতি কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে?

যুক্তরাষ্ট্র বনাম শক্তিশালী উৎপাদক দেশের মধ্যে নতুন করে শুরু হওয়া বাণিজ্য সংঘাতের পটভূমিতে, বিনিয়োগকারীরা সম্ভবত এখনো যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রতিবেদনগুলোর দিকে মনোযোগ সরাবে। যদি প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল সামগ্রিকভাবে আরও নেতিবাচক চিত্রের ইঙ্গিত পাওয়া যায়, তাহলে ট্রেডাররা মনে করতে পারে যে ফেডারেল রিজার্ভ সেপ্টেম্বর মাসে সুদের হার 0.25% কমাতে বাধ্য হবে। এই প্রত্যাশিত পদক্ষেপ মার্কেটের পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাতে পারে এবং গতকালের শুরু হওয়া বিক্রির প্রবণতা থামাতে বা এমনকি সার্বিক প্রবণতা বদলে দিতেও পারে।

যদি নতুন চাকরির সংখ্যা সামান্য বেশি হয়, তাহলে মার্কিন ডলার স্থানীয়ভাবে সমর্থন পেতে পারে এবং ডলার সূচক ফের 100.00 লেভেলের উপরে উঠে যেতে পারে, যেখানে এটি বর্তমানে নিচে রয়েছে।

এই ধরনের ফলাফল স্টক মার্কেটের বিনিয়োগকারীদেরও কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে, গতকাল এবং আজ ট্রাম্পের চীন ও ভারতের বিরুদ্ধে নতুন, যদিও এটি কিছুটা প্রত্যাশিত ছিল, সংঘাতের কারণে হওয়া ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে দিতে পারে।

This image is no longer relevant

This image is no longer relevant

দৈনিক পূর্বাভাস

EUR/USD
এই পেয়ারটি এখনো নেতিবাচক চাপের মধ্যে রয়েছে, কারণ ইউরোপীয় ইউনিয়নের উপর তার অভিভাবক—যুক্তরাষ্ট্র—কঠোর শুল্ক নীতি ও বিশাল বিনিয়োগ প্রবাহের মাধ্যমে মার্কিন অর্থনীতিকে অর্থায়ন করতে বাধ্য করছে। এই প্রেক্ষাপটে এবং যুক্তরাষ্ট্রের কর্মসংস্থান সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর আবার 1.1300 লেভেলের দিকে এই পেয়ারের দরপতন শুরু হতে পারে। এই পেয়ার বিক্রির জন্য সম্ভাব্য লেভেল হতে পারে 1.1398।

AUD/USD
এই পেয়ারটিও দরপতনের দিকে রয়েছে, কারণ অস্ট্রেলিয়ার মূল বাণিজ্যিক অংশীদার চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধ চলছে। শুল্কসংক্রান্ত সংঘাতের নেতিবাচক প্রভাব এবং ডলারের সম্ভাব্য শক্তিশালী প্রবণতা মিলে এই পেয়ারের দর 0.6360 লেভেলের দিকে চলে যেতে পারে। এই পেয়ার বিক্রির জন্য সম্ভাব্য লেভেল হতে পারে 0.6416।

Recommended Stories

এখন কথা বলতে পারবেন না?
আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন চ্যাট.