empty
 
 
26.08.2025 10:55 AM
যুক্তরাজ্যে খাবারের খরচ আরও বেড়েছে

যখন ব্রিটিশ পাউন্ড মার্কিন ডলারের বিপরীতে ধারাবাহিকভাবে দুর্বল হচ্ছে, তখন সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গিয়েছে যে আগস্টে যুক্তরাজ্যে খাদ্যপণ্যের দাম গত 18 মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। খারাপ আবহাওয়া এবং দুর্বল ফসল উৎপাদন এই মূল্য বৃদ্ধির প্রধান কারণ, যা ইতোমধ্যেই উচ্চ পরিচালনা ব্যয় নিয়ে সংকটে ভুগতে থাকা সুপারমার্কেটগুলোর উপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করেছে।

This image is no longer relevant

এই হতাশাজনক বিষয়গুলোর সমন্বয়ে ব্রিটিশ ভোক্তাদের পকেটের উপর ক্রমবর্ধমানভাবে চাপ তৈরি করছে। রুটি, দুধ এবং সবজির মতো প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ায় পরিবারগুলোকে তাদের ব্যয় নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে এবং জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রে, যেমন বিনোদন থেকে পোশাক পর্যন্ত খরচ কমাতে হচ্ছে। মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব আবারও দৃশ্যমান হয়ে উঠছে, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর ক্ষেত্রে, যাদের মাসিক খরচের একটি বড় অংশ খাদ্যপণ্যের পেছনে ব্যয় হয়।

এর প্রভাব শুধু দেশীয় বাজারেই সীমাবদ্ধ নয়। খারাপ আবহাওয়ার কারণে ফসল নষ্ট হওয়ায় যুক্তরাজ্যের রপ্তানি খাতও দুর্বল হতে পারে। উৎপাদন কমে গেলে রপ্তানি হ্রাস পেতে পারে, যা দেশটির বাণিজ্য ঘাটতির উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করবে। উপরন্তু, যুক্তরাজ্যে খাদ্যের দাম বাড়লে ব্রিটিশ পণ্য আমদানি করা অন্যান্য দেশেও এর প্রভাব পড়তে পারে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মুদ্রাস্ফীতির এক ধরনের চেইন রিয়্যাকশন শুরু হতে পারে।

ব্রিটিশ রিটেইল কনসোর্টিয়ামের তথ্য অনুযায়ী, খাদ্যপণ্যের মুদ্রাস্ফীতি বার্ষিক ভিত্তিতে 4.2%-এ পৌঁছেছে, যা 2024 সালের ফেব্রুয়ারির পর সর্বোচ্চ এবং জুলাইয়ের 4%-এর তুলনায় বেশি। মাখন এবং ডিমের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, যার পেছনে রয়েছে উচ্চ চাহিদা, সরবরাহ হ্রাস এবং শ্রম ব্যয় বৃদ্ধি। ফসল উৎপাদন হ্রাস পাওয়ার কারণে বৈশ্বিক পর্যায়ে কোকোর দাম বেড়ে যাওয়ায় চকোলেটের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে।

রিটেইলাররা ইতোমধ্যেই সতর্ক করেছেন যে বছরের শেষে খাদ্যপণ্যের মুদ্রাস্ফীতি 6%-এ পৌঁছাতে পারে, কারণ তারা £26 বিলিয়ন পেরোল ট্যাক্স বৃদ্ধি এবং এপ্রিল মাসে কার্যকর হওয়া 6.7% ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির ক্ষতিপূরণ করতে দাম বাড়াচ্ছেন। তারা সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন শরৎকালের বাজেটে খুচরা ব্যবসায়ীদের উপর নতুন করে কর না বাড়াতে।

ব্যাংক অব ইংল্যান্ড, যারা এই মাসে সুদের হার কমিয়েছে, জানিয়েছে কর বৃদ্ধিই মুদ্রাস্ফীতি এবং বেকারত্ব বাড়াচ্ছে। যেখানে মহামারী-পরবর্তী মুদ্রাস্ফীতির ধাক্কা অধিকাংশ উন্নত অর্থনীতিতে কমে এসেছে, সেখানে যুক্তরাজ্য এখনো পশ্চিমা প্রধান অর্থনীতিগুলোর মধ্যে দ্রুততম হারে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধির সম্মুখীন হচ্ছে।

এই প্রতিবেদনের নেতিবাচক ফলাফল কারেন্সি মার্কেটেও প্রতিফলিত হচ্ছে।

GBP/USD-এর টেকনিক্যাল পূর্বাভাস অনুযায়ী পাউন্ডের ক্রেতাদের এই পেয়ারের মূল্যকে নিকটবর্তী রেজিস্ট্যান্স 1.3490 ব্রেক করাতে হবে। কেবল এটিই তাদেরকে এই পেয়ারের মূল্যকে 1.3523-এ নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করার সুযোগ দেবে, যার ব্রেকআউট করে উপরের দিকে যাওয়া মূল্যের পক্ষে কঠিন হবে। ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত লক্ষ্যমাত্রা হলো 1.3560 লেভেল। অন্যদিকে, যদি দরপতন হয়, তবে বিক্রেতারা মূল্য 1.3440 লেভেলে থাকা অবস্থায় মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করবে। তাঁরা সফল হলে ও এই রেঞ্জের ব্রেকআউট ঘটলে সেটি বুলিশ পজিশনের জন্য বড় ক্ষতি ডেকে আনবে এবং GBP/USD পেয়ারের মূল্যকে 1.3420-এর লেভেলে নামিয়ে আনবে, যেখানে দরপতন আরও বিস্তৃত হয়ে এই পেয়ারের মূল্য 1.3390 পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।

Recommended Stories

এখন কথা বলতে পারবেন না?
আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন চ্যাট.