আরও দেখুন
মার্কিন ডলার সমস্যার মুখোমুখি হয়েই চলেছে, এবং মূল প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে: ফেডারেল রিজার্ভের বৈঠকের আগে এবং বৈঠকের পরে এটি কতটা দরপতনের শিকার হবে।
এই সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের প্রধান উদ্বেগ হলো ফেডের কর্মকর্তারা কি ট্রেডারদের ধারাবাহিকভাবে সুদের হার কমানোর প্রত্যাশার বিপরীতে কোনো অবস্থান নেবেন কিনা, যা বেশিরভাগ অর্থনীতিবিদদের মতে আগামী বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। স্পষ্টতই, বুধবারের ফেডের সিদ্ধান্ত বিশ্ব বাজারের (মুদ্রাসহ) পরিস্থিতি নির্ধারণ করবে, তবে এটিই ক্যালেন্ডারের একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নয়। কানাডার কেন্দ্রীয় ব্যাংক, ব্যাংক অব ইংল্যান্ড এবং ব্যাংক অব জাপানও মুদ্রানীতি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে।
ট্রেডারদের দৃষ্টি নিঃসন্দেহে ফেডের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের বক্তব্যের দিকে থাকবে, যেখানে তিনি সর্বশেষ মুদ্রাস্ফীতি ও কর্মসংস্থান সংক্রান্ত প্রতিবেদন নিয়ে মন্তব্য করবেন এবং ভবিষ্যৎ আর্থিক নীতিমালার দিকনির্দেশনা সম্পর্কে ইঙ্গিত দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। কখন সুদের হার কমানো শুরু হতে পারে এবং কী মাত্রায় তা করা হবে সে বিষয়ে যেকোনো সংকেতের জন্য ট্রেডাররা নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। ট্রেডারদের প্রত্যাশা এবং ফেডের নির্দেশনার মধ্যে যেকোনো ভিন্নতা মার্কেটে উল্লেখযোগ্য ভোলাটিলিটি তৈরি করতে পারে।
সাম্প্রতিককালে মুদ্রাস্ফীতি হ্রাসের গতি মন্থর হওয়ায় তা ফেডকে একটি জটিল অবস্থার মধ্যে ফেলেছে: একদিকে কঠোর মুদ্রানীতি বজায় রাখায় তা অর্থনৈতিক মন্দার ঝুঁকি সৃষ্টি করছে, অন্যদিকে খুব দ্রুত মুদ্রানীতি নমনীয় করা হলে সেটি নতুন করে মুদ্রাস্ফীতির বৃদ্ধি ঘটাতে পারে। ফেডের কৌশল নির্ধারণে পাওয়েলের বক্তব্যই মূল বিবেচ্য বিষয় হবে। বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন তিনি এ বছর আরও সুদের হার কমানোর প্রস্তুতির বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করবেন, তবে প্রশ্ন রয়ে গেছে সুদের হার কতবার কমানো হবে। একই সময়ে, মার্কেটে অনিশ্চয়তা এড়াতে পাওয়েলের জন্য বক্তব্যে অস্পষ্টতা এড়ানো গুরুত্বপূর্ণ হবে।
তার কর্মসংস্থান সংক্রান্ত প্রতিবেদনের ব্যাপারে মন্তব্যের ওপর বিশেষ নজর দেওয়া হবে। যদি পাওয়েল চাকরি হারানোর বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন—কারণ মহামারির পর শ্রমবাজার সবচেয়ে বড় মন্দার সম্মুখীন হয়েছে—তাহলে এটি ফেডের সুদের হার কমানোর মাত্রা বাড়ানোর সংকেত হিসেবে দেখা যেতে পারে। বিপরীতে, যদি তিনি শ্রমবাজারের স্থিতিশীলতার ওপর জোর দেন এবং বর্তমান সমস্যাকে অস্থায়ী হিসেবে উপস্থাপন করেন, তবে এটি ফেডের আর্থিক নীতিমালা আরও দীর্ঘ সময় কঠোর রাখার ইঙ্গিত হতে পারে।
অন্যান্য প্রধান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্তও গুরুত্বপূর্ণ হবে। কানাডার কেন্দ্রীয় ব্যাংক, যার অর্থনৈতিক গতিশীলতা যুক্তরাষ্ট্রের মতো প্রায় একই রকম, ফেডের পথ অনুসরণের চাপের মধ্যে পড়তে পারে। অন্যদিকে, ব্যাংক অব জাপানের সতর্কভাবে অপেক্ষার অবস্থান এবং ইয়িল্ড কার্ভের নিয়ন্ত্রণ এখনও বিনিয়োগকারীদের মনোযোগ কেড়ে নিচ্ছে। সুদের হার আরও বাড়ানোর প্রস্তুতির যেকোনো ইঙ্গিত বিশ্ববাজারে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে, যেহেতু জাপান একটি বড় ঋণদাতা দেশ।
সার্বিকভাবে, এই সপ্তাহ বেশ ঘটনাবহুল এবং অনিশ্চয়তায় ভরপুর হবে, যেহেতু বৈশ্বিক কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো জটিল অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করছে।
EUR/USD-এর টেকনিক্যাল পূর্বাভাস: ক্রেতাদের এখন এই পেয়ারের মূল্যকে 1.1745 লেভেলের উপরে নিয়ে যেতে হবে। কেবল তখনই এই পেয়ারের মূল্যের 1.1780 পৌঁছানো সম্ভব হবে। সেখান থেকে এই পেয়ারের মূল্য 1.1813 পর্যন্ত উঠতে পারে, যদিও বড় ট্রেডারদের সহায়তা ছাড়া তা চ্যালেঞ্জিং হবে। চূড়ান্ত লক্ষ্যমাত্রা হলো 1.1866। দরপতনের ক্ষেত্রে, মূল্য 1.1700 লেভেলের কাছে থাকা অবস্থায় আমি এই পেয়ার ক্রয়ের উল্লেখযোগ্য আগ্রহের আশা করছি। যদি তা না ঘটে, তবে মূল্যের 1.1665-এ নেমে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করাই ভালো হবে অথবা 1.1630 থেকে লং পজিশন বিবেচনা করা যেতে পারে।
GBP/USD-এর টেকনিক্যাল পূর্বাভাস: পাউন্ড ক্রেতাদের এই পেয়ারের মূল্যের 1.3590-এর তাৎক্ষণিক রেজিস্ট্যান্স ব্রেক করাতে হবে। কেবল তখনই তারা এই পেয়ারের মূল্যকে 1.3615-এর লক্ষ্যমাত্রার দিকে নিয়ে যেতে পারবে, যদিও মূল্যের আরও উপরে ওঠা কঠিন হবে। চূড়ান্ত লক্ষ্যমাত্রা হলো 1.3645। দরপতনের ক্ষেত্রে, মূল্য 1.3525 লেভেলের কাছাকাছি থাকা অবস্থায় বিক্রেতারা মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করবে। তারা সফল হলে, মূল্য এই রেঞ্জ ব্রেক করে গেলে সেটি ক্রেতাদের জন্য বড় ধরনের ধাক্কা হবে এবং GBP/USD পেয়ারের মূল্য 1.3495-এর দিকে নেমে যেতে পারে, যেখানে 1.3458 পর্যন্ত দরপতন আরও সম্প্রসারণের সম্ভাবনা রয়েছে।