আরও দেখুন
সপ্তাহের শেষ দিনের ট্রেডিং ইতিবাচকভাবে এগোচ্ছে। চীন বাণিজ্য আলোচনা শুরু করতে প্রস্তুত — এই খবরের প্রকাশের পর বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকিপূর্ণ অ্যাসেট কিনতে শুরু করেছে এবং মার্কিন ডলার দুর্বল হয়ে পড়েছে।
আগেই আমি উল্লেখ করেছিলাম যে, পর্দার আড়ালে ওয়াশিংটন ও বেইজিং বাণিজ্যিক শর্তাবলী নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিল। চীন প্রকাশ্যে বিষয়টি অস্বীকার করলেও, আজ চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঘোষণার মাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব প্রমাণ করে এমন আরেকটি খবর হলো, ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও উপদেষ্টা ইলন মাস্ক বেইজিংয়ের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। আলোচনার ফলাফল কী হবে, তা বলা কঠিন, তবে একটি বিষয় স্পষ্ট: ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা এবার সমাধানের পথে এগোচ্ছে। এই কারণেই আজ, এমনকি গতকালও, আগেভাগেই সচেতন বিনিয়োগকারীরা বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার, ক্রিপ্টোকারেন্সি, অপরিশোধিত তেলের ফিউচার ক্রয়ে সক্রিয় হয়েছে — এবং স্বর্ণ ও ডলার বিক্রিতে মনোযোগ দিয়েছে।
বর্তমানে গঠিত চিত্র বিবেচনায়, আমি মনে করি যে আলোচনার আনুষ্ঠানিক শুরু হওয়াটাই মার্কিন স্টক মার্কেটের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত রাখার জন্য একটি শক্তিশালী কারণ। অর্থনৈতিক পরিসংখ্যানও এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে — বিশেষ করে মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন, PCE সূচক, ADP কর্মসংস্থান প্রতিবেদন এবং সম্ভবত আজই প্রকাশিতব্য মার্কিন শ্রম দপ্তরের প্রতিবেদন। এসব তথ্য ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর প্রত্যাশাকে সমর্থন করতে পারে — হয় এই মাসেই, অথবা জুনে। এই প্রত্যাশার পটভূমিতে, স্টক ও টোকেনের চাহিদা বাড়বে এবং ডলার চাপে থাকবে এমন সম্ভাবনাই বেশি।
আজ মার্কিন শ্রমবাজার সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। প্রত্যাশা করা হচ্ছে, এপ্রিল মাসে ননফার্ম পেরোল আগের মাসের 228,000 থেকে কমে 138,000 হয়েছে। বেকারত্বের হার 4.2%-এ থাকছে বলেই মনে করা হচ্ছে, এবং গড় ঘণ্টাভিত্তিক আয় 0.3% থাকবে; বার্ষিক গড় আয় 3.8% থেকে 3.9%-এ বাড়তে পারে।
এই প্রতিবেদন মার্কিন ডলারের উপর কী প্রভাব ফেলবে?
শ্রমবাজারে ঐতিহ্যগত নেতিবাচক প্রবণতা ডলারের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে এবং মুদ্রাস্ফীতির পতনের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে শুল্ক আলোচনা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়ায় এই চাপকে আরও দৃঢ় হবে। তবে ডলারের দরপতন সম্ভবত সীমিত থাকবে, কারণ আজ ইউরোজোন থেকে প্রকাশিতব্য নতুন ভোক্তা মূল্য সূচক — যা বার্ষিক ভিত্তিতে 2.2% থেকে কমে 2.1%-এ আসার পূর্বাভাস রয়েছে — ইসিবি-কে ভবিষ্যতে সুদের হার আরও কমানোর সুযোগ করে দিতে পারে। একইসাথে, ব্যাংক অব ইংল্যান্ডসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকও অনুরূপ পদক্ষেপ বিবেচনা করতে পারে। শেষ পর্যন্ত, এসব পরিস্থিতির মধ্যে ডলার সূচকের 99.00 পয়েন্টের উপরে থাকার সম্ভাবনাই বেশি।
দৈনিক পূর্বাভাস:
স্বর্ণ
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনার শুরুর প্রেক্ষাপটে স্বর্ণের দরপতন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ চুক্তির আশায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ঝুঁকি গ্রহণের প্রবণতা বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে, স্বর্ণের দাম কমে আউন্স প্রতি $3200.00 এবং পরবর্তীতে $3145.00 পর্যন্ত নামতে পারে। স্বর্ণ বিক্রয়ের জন্য সম্ভাব্য লেভেল হতে পারে $3250.00।
EUR/USD
ঝুঁকিপূর্ণ অ্যাসেটের প্রতি চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এই পেয়ারের মূল্য কিছুটা রিবাউন্ড করছে, তবে ইউরোজোনে মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস পাওয়ার ফলে আসন্ন বৈঠকে ইসিবির সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এর ফলে, পেয়ারটির মূল্য রিভার্স করে 1.1200 লেভেলের দিকে ফিরে যেতে পারে। ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্যে এই পেয়ার বিক্রির করার জন্য সম্ভাব্য লেভেল হচ্ছে 1.1329।