আরও দেখুন
গতকাল ডলারের ফেডের কার্যবিবরণীর দ্বারা প্রায় কোনোভাবেই প্রভাবিত হয়নি, এবং এর পেছনে যৌক্তিক কারণও ছিল।
গত মাসের বৈঠকে ফেডারেল রিজার্ভের বেশিরভাগ কর্মকর্তারা জোর দিয়েছিলেন যে মুদ্রাস্ফীতির ঝুঁকি শ্রমবাজার নিয়ে উদ্বেগকে ছাপিয়ে গেছে, কারণ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদহার নির্ধারণকারী কমিটির মধ্যে ক্রমবর্ধমানভাবে বিভাজন সৃষ্টি করেছে। ফেডের জুলাইয়ের বৈঠকের কার্যবিবরণীতে সদস্যদের মধ্যে মতপার্থক্যের গভীরতা স্পষ্ট হয়েছে। যদিও সবাই একমত ছিলেন যে মার্কিন অর্থনীতি স্থিতিশীল রয়েছে, তবে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং শ্রমবাজারকে সহায়তা করার সর্বোত্তম উপায় নিয়ে বড় পার্থক্য দেখা গেছে।
ফেডের অনেক সদস্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে মুদ্রাস্ফীতি প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সময় উচ্চস্তরে বজায় থাকতে পারে এবং এটি নিয়ন্ত্রণে আরও পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। তাদের যুক্তি ছিল যে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার ঝুঁকি অতিরিক্ত কঠোর অবস্থান গ্রহণের ঝুঁকির চেয়ে বেশি। এই সদস্যরা জোর দিয়ে বলেছেন যে মুদ্রাস্ফীতিকে 2%-এর লক্ষ্যমাত্রায় ফেরাতে ফেডকে সতর্ক থাকতে হবে।
তবে আরও কিছু সদস্য শ্রমবাজারে উচ্চ সুদের হারের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, কঠোর মুদ্রানীতি ইতিমধ্যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে মন্থর করেছে এবং বেকারত্বের হার বাড়াচ্ছে। এই সদস্যরা সতর্কভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার পক্ষে ছিলেন এবং অতিরিক্ত কঠোর আর্থিক নীতিমালার ঝুঁকি বিবেচনা করার পরামর্শ দেন। তাদের মতে, শ্রমবাজার এখনো শক্তিশালী অবস্থায় রয়েছে এবং উচ্চ সুদের হারে মানিয়ে নেওয়ার জন্য সময় প্রয়োজন।
উল্লেখযোগ্য যে এই বৈঠকের পরপরই ফেডের কয়েকজন সদস্য তাদের অবস্থান পরিবর্তন করেন। তাদের আরও নমনীয় অবস্থান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আরও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করে।
গত মাসে নীতিনির্ধারকেরা সুদের হার অপরিবর্তিত রেখে 4.25%–4.50%-এর মধ্যে রাখেন, তাঁরা প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের প্রথম ছয় মাসে মন্থর অর্থনৈতিক কার্যকলাপের মধ্যে অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বাড়তি অনিশ্চয়তার কথা উল্লেখ করেছেন। সে সময় শ্রমবাজারকে "সহনশীল" বলা হলেও মুদ্রাস্ফীতিকে "বাড়তি" বলা হয়েছিল।
সাম্প্রতিক তথ্যে অনুযায়ী পাইকারি মুদ্রাস্ফীতি গত তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে কোম্পানিগুলো উৎপাদন ব্যয়ের চাপ সামাল দিতে দাম বাড়ানো শুরু করেছে। ঠিক তারপরেই ফেডের কয়েকজন কর্মকর্তা উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধ আগামী বছরও পণ্যমূল্যের ওপর ঊর্ধ্বমুখী চাপ বজায় রাখবে।
সম্ভবত জেরোম পাওয়েল আগামীকাল জ্যাকসন হোলে অনুষ্ঠেয় তার বক্তব্যে এ বিষয়ে আলোকপাত করবেন। অনেকে তার অবস্থানের বড় ধরনের পরিবর্তনের প্রত্যাশা করছেন, যা কারেন্সি মার্কেটের ভারসাম্য বদলে দিতে পারে।
EUR/USD পেয়ারের বর্তমান টেকনিক্যাল চিত্র অনুযায়ী, ক্রেতাদের এখন এই পেয়ারের মূল্যকে 1.1660 এর ওপরে নিয়ে যেতে হবে। কেবল তখনই 1.1700 এর লেভেল টেস্ট করা সম্ভব হবে। সেখান থেকে এই পেয়ারের মূল্য 1.1730 পর্যন্ত উঠতে পারে, যদিও বড় ট্রেডারদের সমর্থন ছাড়া এটি করা বেশ কঠিন হবে। ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে 1.1768-এর লেভেল। দরপতনের ক্ষেত্রে, আমি মূল্য 1.1625 এর আশেপাশে থাকা অবস্থায় ক্রেতাদের উল্লেখযোগ্য সক্রিয়তার প্রত্যাশা করছি। যদি সেখানেও ক্রেতারা সক্রিয় না হয়, তাহলের 1.1600 লেভেলের রিটেস্ট পর্যন্ত অপেক্ষা করা বা 1.1565 থেকে লং পজিশন বিবেচনা করা উচিত হবে।
GBP/USD পেয়ারের ক্ষেত্রে, ক্রেতাদের এই পেয়ারের মূল্যকে 1.3480-এর নিকটতম রেসিস্ট্যান্স অতিক্রম করাতে হবে। কেবল তখনই এই পেয়ারের মূল্য 1.3530 এর দিকে অগ্রসর হওয়া সম্ভব হবে, যদিও সেই লেভেলের ওপরে ওঠা বেশ কঠিন হবে। ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে 1.3560-এর লেভেল। দরপতনের ক্ষেত্রে, মূল্য 1.3440-এ থাকা অবস্থায় বিক্রেতারা নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করবে। যদি তারা সফল হয়, তাহলে এই রেঞ্জ ব্রেকআউট করলে সেটি ক্রেতাদের জন্য বড় আঘাত হবে এবং GBP/USD পেয়ারের মূল্য 1.3410 পর্যন্ত নেমে যাবে, যার পরবর্তী সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে 1.3375-এর লেভেল।